টুথপেস্টে বিষ। কখনও বিস্ফোরক মোবাইল ফোন। কখনও আবার উড়ন্ত ড্রোন থেকে টুপ করে বোমা ফেলে দেওয়া।
রাষ্ট্র হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পরে সত্তর বছরে অন্তত ২৭০০টি গুপ্তহত্যার অভিযান চালিয়েছে ইজরায়েল। এর অনেকগুলি সফল হয়নি বটে, কিন্তু ইজরায়েলি গুপ্তচরদের সাফল্যের হার পশ্চিমি দেশগুলির চেয়ে বেশি। ইজরায়েলের গুপ্তচরদের সঙ্গে দীর্ঘ আলাপচারিতার পরে একটি বই লিখেছেন সে দেশের সাংবাদিক রনেন বার্গম্যান। তাতেই উঠে এসেছে অন্য দেশের নামী লোকেদের হত্যা করার এমন সব আজব প্রকরণ।
ইজরায়েলের দুই গুপ্তচর সংস্থা মোসাদ ও শিন বেট-এর বহু এজেন্টের সঙ্গে কথা বলেছেন বইটির লেখক। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন গুপ্তহত্যার অভিযানে অংশ নেওয়া বেশ কয়েক জন সেনাকর্তারও। ৬০০ পাতার বইটিতে পাতায় পাতায় চমক দিয়েছেন বার্গম্যান।
ইজরায়েলের এই সব গোপন অভিযানের মর্মকথা ছিল— ‘তারা তোমায় আঘাত হানার আগেই নিকেশ করো তাদের!’ সেনাকর্তাদের যুক্তি, এর ফলে ব্যয়বহল যুদ্ধ এড়ানো যায়। টুথপেস্টে এক বার বিষ মিশিয়ে দিতে পারলে এক মাসের মধ্যে মারা যাবেন নিশানায় থাকা ব্যক্তি। ইরানের এক পরমাণু বিজ্ঞানীকে এই ভাবে খুন করেছিল মোসাদ। ইরান যে গোপনে পরমাণু কর্মসূচি চালাচ্ছে, সে খবর পাওয়ার পর থেকে অন্তত এক ডজন ইরানি পরমাণু বিজ্ঞানীকে নানা ভাবে খুন করেছে ইজরায়েলি গুপ্তচরেরা। কখনও তাদের গাড়ির অতিরিক্ত টায়ারের মধ্যে বিস্ফোরক রেখে দূর নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে তা উড়িয়ে দিয়ে, কখনও ঘরোয়া ড্রোনের সাহায্যে গাড়ির মাথায় বোমা ফেলে দিয়ে।
প্যালেস্তাইনের সমর্থক বহু ইসলামি নেতাকেও একই ভাবে নিকেশ করা হয়েছে। প্যালেস্তাইনের প্রেসিডেন্ট ইয়াসের আরাফতকেও ইজরায়েল গুপ্তহত্যা করেছে— বার্গম্যানের বইয়ে এমন ইঙ্গিত রয়েছে। খোলসা করে এ কথা বলতে পারেননি তিনি, কারণ—তাঁর কথায়, ‘‘দেশের সেন্সর ব্যবস্থায় আমার মুখ বন্ধ। জানা সত্ত্বেও অনেক কিছুই বলা যায় না।’’