ইয়েলোস্টোন ন্যাশনাল পার্কে বেড়াতে গিয়েছিলেন বছর বিয়াল্লিশের মহিলা। আর পাঁচ জন দর্শকের মতো মেয়ের সঙ্গে নিজস্বীও তোলা চলছিল।
কিন্তু বিপত্তি বাধে একটি বিশেষ নিজস্বী তুলতে গিয়ে। সেখানে তাঁরা দু’জন নন। পিছনে ছিল ইয়েলোস্টোনেরই এক বাসিন্দা। একটি বন্য বাইসন। আসলে তার সঙ্গেই বিশেষ নিজস্বীটি তুলতে গিয়েছিলেন মা-মেয়ে। কিন্তু ছবি তোলার বিষয়টি বোধহয় পছন্দ হয়নি বন্য প্রাণিটির। সোজা এগিয়ে এসে মধ্যবয়সি ওই মহিলাকে তুলে মাটিতে আছড়ে ফেলে দেয় সে। মিসিসিপির বাসিন্দা ওই মহিলাকে আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।
মঙ্গলবারের ঘটনা হলেও ইয়েলোস্টোন পার্ক কর্তৃপক্ষ গত কাল একটি বিবৃতি দিয়ে এ কথা জানিয়েছেন। গত কয়েক মাসে এ নিয়ে মোট পাঁচ বার বন্য বাইসনের ছবি তুলতে গিয়ে দুর্ঘটনা ঘটল ইয়েলোস্টোনে। বারবার পার্ক কর্তৃপক্ষ বন্য জন্তুদের থেকে দর্শকদের দূরে থাকার সাবধানবাণী দিলেও কেউ সে কথা কানে তোলেন না বলেই অভিযোগ। সাধারণত বাইসনের মতো জন্তুদের থেকে ৭৫ ফুট এবং ভালুকদের থেকে কমপক্ষে ৩০০ ফুট দূরে থাকতে বলা হয় দর্শকদের। পার্কের বিভিন্ন জায়গায় বড় হরফে লেখাও আছে সে কথা। বিশেষত বাইসন মানুষের চেয়ে তিনগুণ জোরে ছুটে যে কোনও বিপত্তি ঘটাতে পারে বলেও বারবার সাবধান করা হয় দর্শকদের। কিন্তু মিসিসিপির ওই মহিলা ও তাঁর মেয়ে সে দিন মাত্র ১৮ ফুট দূর থেকে নিজস্বী তুলতে গিয়েছিলেন বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন।
কী ভাবে ঘটল দুর্ঘটনা? মহিলার পরিবার জানিয়েছে, বাইসনটিকে পিছনে রেখে যখন ছবি তোলা হচ্ছে, তখনই মা-মেয়ে টের পান যে জন্তুটি এগিয়ে আসছে। বোঝার সঙ্গে সঙ্গেই তাঁরা দু’জনে ছুটতে শুরু করেন। কিন্তু তত ক্ষণে বাইসনটি ওই মহিলাকে উপরে তুলে আছড়ে ফেলে দেয় মাটিতে। সঙ্গে সঙ্গে অ্যাম্বুল্যান্স ডাকা হয়। আহত মহিলাকে নিয়ে যাওয়া হয় হাসপাতালে। তাঁর অবস্থা খুব গুরুতর নয়, স্থিতিশীল বলে জানিয়েছে তাঁর পরিবার।
মাস খানেক আগে বাইসনের সঙ্গে ছবি তুলতে গিয়ে আহত হয়েছিল ১৬ বছরের এক কিশোরী। তাইল্যান্ডের ওই বাসিন্দাও বন্য প্রাণিটির খুব কাছাকাছি চলে এসেছিল বলে জানিয়েছিলেন কর্তৃপক্ষ। একই ভাবে গত মাসে মাত্র পাঁচ ফুট দূরত্ব থেকে বাইসনের ছবি তুলতে গিয়ে জখম হন ৬২ বছরের এক অস্ট্রেলীয় নাগরিক।
বারবার সতর্কবাণী শোনানো সত্ত্বেও দর্শকদের নিজস্বী তোলা হিড়িক না কমায় কপালে এখন রীতিমতো চিন্তার ভাঁজ ইয়েলোস্টোন ন্যাশনাল পার্ক কর্তৃপক্ষের।