ছবি: পিটিআই।
কাশ্মীর পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনায় মার্কিন কংগ্রেসের সদস্য ইলান ওমরের সঙ্গে বাগ্যুদ্ধে জড়িয়ে পড়লেন ভারতীয় সাক্ষী, সাংবাদিক আরতি টিকু সিংহ।
মার্কিন কংগ্রেসের বিদেশ বিষয়ক কমিটিতে দক্ষিণ এশিয়ায় মানবাধিকার রক্ষা নিয়ে আলোচনায় আমন্ত্রিত ছিলেন দুই ভারতীয় সাক্ষী, সাংবাদিক আরতি টিকু সিংহ এবং আইনজীবী রবি বাত্রা। মার্কিন কংগ্রেসের শুনানিকে পক্ষপাতদুষ্ট, একপেশে, পাকিস্তানের হয়ে এবং ভারতের বিপক্ষে বলে সমালোচনা করেন আরতি। বলেন, ‘‘তিরিশ বছর ধরে পাকিস্তান কাশ্মীরে যে ভাবে সন্ত্রাসে মদত দিয়ে চলেছে, সে কথা বিশ্বের সংবাদমাধ্যম পুরোপুরি এড়িয়ে গিয়েছে।’’
আরতির বক্তব্য শুনেই আক্রমণে নামেন ইলান। অভিযোগ করেন, সাংবাদিক হয়েও আরতি এমন সব কথা বলছেন, যা সরকারের যুক্তি। ইলানের খোঁচা, সংবাদমাধ্যম যখন সরকারের মুখপাত্র হয়ে ওঠে, তার থেকে খারাপ কিছু হতে পারে না। ইলান বলেন, ‘‘আপনার মতে কাশ্মীরে জঙ্গি কার্যকলাপই একমাত্র সমস্যা।... আপনি বলতে চাইছেন ভারত সরকার যে ভাবে ধরপাকড় করছে, তা মানবাধিকার রক্ষারই একটা দিক। এটা যদি মানবাধিকার রক্ষার জন্যই হতো, সব কিছু এতটা গোপনে হতো না।’’
রুখে দাঁড়ান আরতি। বলেন, ‘‘প্রতিটি সরকারের বিরুদ্ধে আমি কলম ধরেছি। সেটা কাশ্মীরে মানবাধিকার লঙ্ঘনই হোক কিংবা গোমাংস রাখার জন্য পিটিয়ে মারা।..ফলে আমার সাংবাদিক সত্ত্বাকে নিয়ে ইলানের অভিযোগের নিন্দা করছি।’’ আরতি এ বার টেনে আনেন সাংবাদিক শুজাত বুখারির হত্যা প্রসঙ্গ। বলেন, ‘‘কাশ্মীরে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে আলোচনা চালাতে এক শহর থেকে অন্য শহরে পৌঁছতেন শুজাত। কিন্তু গত বছরে তাঁকে খুন করল লস্কর-ই-তইবা। এই লস্করই মুম্বইয়ে হামলা চালিয়েছিল। এই জঙ্গি সংগঠন নিষিদ্ধ আমেরিকাতেও।’’ তাঁর দাবি, শুজাত কাশ্মীরে শান্তি চেয়েছিলেন বলেই তাঁকে হত্যা করে লস্কর। গত ২৯ অগস্ট আর এক জঙ্গি সংগঠন জইশ-ই-মহম্মদ কাশ্মীরের এক ব্যবসায়ীকে খুন করেছে, কারণ তিনি জঙ্গিদের হুমকি উপেক্ষা করে দোকান খুলেছিলেন। এই জইশ-ই ২০০২ সালে ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের সাংবাদিক ড্যানিয়েল পার্লকে হত্যা করেছিল— যুক্তি দিয়েছেন ভারতীয় সাক্ষী।
ইলান বলেছিলেন, ‘‘ভারতের সঙ্গে আমেরিকার সম্পর্ক গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের উপরে দাঁড়িয়ে। মোদী সরকার সেই মূল্যবোধকে সঙ্কটে ফেলছে।’’ আর এক ভারতীয় সাক্ষী ভারতীয় বংশোদ্ভুত মার্কিন আইনজীবী রবি বাত্রা পাল্টা বলেন, ‘‘প্রতি মুহূর্তে প্রাণ হারানোর ভয় নিয়ে মানুষ যখন ঘরের বাইরে পা রাখতে ভয় পায়, সীমান্ত পারের সন্ত্রাস যখন রোজের ঘটনা, তখন মানবাধিকার রক্ষা করার আগে মানুষ চায় প্রাণে বাঁচতে।’’