কথাসাহিত্যিক হাসান আজিজুল হক।
প্রয়াত হলেন কথাসাহিত্যিক হাসান আজিজুল হক। বাংলাদেশের এই লেখকের বয়স হয়েছিল ৮২ বছর। ভারতীয় সময় অনুযায়ী আনুমানিক রাত ন’টা নাগাদ তাঁর রাজশাহীর বাসভবনেই তিনি মারা গিয়েছেন। গত সেপ্টেম্বর মাসে বার্ধক্যজনিত অসুস্থতার কারণে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করাতে হয়। পরে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছিলেন তিনি।
আজিজুলের জন্ম ১৯৩৯ সালে পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার যবগ্রামে। পরে তাঁরা সাবেক পূর্ব পাকিস্তানে চলে যান। ছাত্রাবস্থাতেই রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়ে পাকিস্তান সেনার হাতে নির্যাতিতও হতে হয় তাঁকে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দর্শনে স্নাতকোত্তর। পরে এই বিশ্ববিদ্যালয়েরই অধ্যাপক হিসেবে জীবন কাটিয়েছেন।
ঔপন্যাসিক ও ছোটগল্পকার হিসেবে বাংলা সাহিত্যে এক বিশিষ্ট স্থান অধিকার করে আছেন হাসান আজিজুল। ১৯৬০-এর দশকে লেখালিখি শুরু করলেও প্রথম উপন্যাস লেখেন ২০০৬ সালে। সেই উপন্যাসের পটভূমি অবিভক্ত বঙ্গের রাঢ় অঞ্চল। এক বড় কালপর্বকে ধরে রেখেছে এই উপন্যাস। যেখানে মহামারি, অনাহার, সাম্প্রদায়িক বিভাজন এবং দেশভাগের বিন্দুগুলিকে স্পর্শ করে আখ্যান এগিয়েছে ভিন্নতর স্তরে। এই উপন্যাসের জন্যই ২০০৮ সালে আনন্দ পুরস্কার প্রদান করা হয় তাঁকে।
হাসান আজিজুল হকের অন্যান্য লিখনের মধ্যে রয়েছে ‘সমুদ্রের স্বপ্ন শীতের অরণ্য’, ‘আত্মজা ও একটি করবী গাছ’, ‘নামহীন গোত্রহীন’ প্রভৃতি গল্পগ্রন্থ। রয়েছে ‘কথাসাহিত্যের কথকতা’, ‘অতলের পাখি’-র মতো প্রবন্ধ গ্রন্থও। গ্রিক দার্শনিক সক্রেটিসের জীবন ও চিন্তার উপরে আধারিত তাঁর গ্রন্থ ‘সক্রেটিস’-ও এক উল্লেখযোগ্য কাজ। বিভিন্ন পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন আজিজুল, যার মধ্যে বাংলা আকাদেমি সাহিত্য পুরস্কার, একুশে পদক উল্লেখযোগ্য।