—প্রতীকী চিত্র।
কুমোরটুলি থেকে আনা সপরিবার মা দুর্গা, বাংলার ঢাক, শ্রীশ্রীচণ্ডীপাঠ, বোধন থেকে মায়ের সঙ্গে সিঁদুর খেলা, সন্ধ্যা আরতি, সন্ধিপুজো, ধুনুচি নাচ সব কিছু নিয়ে টরন্টো থেকে ৮০ কিলোমিটার দূরে অন্টারিও প্রদেশের ব্যারি শহরে জমজমাট তৃতীয় বছরে পড়ল পান্ডা বাড়ির দুর্গোৎসব। পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথি শহর থেকে দীর্ঘদিনের পারিবারিক পুজোর বীজ বয়ে নিয়ে গিয়ে ব্যারি শহরে এই পুজোর সূচনা হয়েছে।
টরন্টো ও গ্রেটার টরন্টো মিলিয়ে বেশ কয়েকটি দুর্গাপুজো হয়। যেমন, টরন্টো কালীবাড়ি, দুর্গাবাড়ি, বঙ্গীয় পরিষদ, বঙ্গ পরিবার, আগমনী, বেদান্ত সোসাইটি ও ভারত সেবাশ্রম সংঘ। তবে ব্যারি আর টরন্টোর মাঝের ৮০ কিলোমিটারে আর কোনও পুজো হয় না। তাই পারিবারিক পুজো হলেও ব্যারি শহরের বেশির ভাগ বাঙালি পরিবার এই পুজোর সঙ্গে জড়িয়ে গিয়েছেন। গ্রেটার টরন্টো থেকে অনেক পরিবার আর উত্তর আমেরিকা থেকে আত্মীয়বন্ধুরাও এই পুজোয় আসেন, এখানেই থাকেন দুর্গোৎসবের ৩-৪ দিন। সবাই মিলে ভোগপ্রসাদ খাওয়া হয়। তাই ব্যারি শহরের এই একমাত্র দুর্গোৎসব আশপাশের সমস্ত বাঙালি ও ভারতীয় পরিবারের সর্বজনীন আনন্দ উৎসব হয়ে উঠেছে।
বৃহন্নান্দিকেশ্বর পুরাণ মতে তিথি অনুযায়ী সমস্ত প্রথা মেনে ষোড়শোপচার পুজো হয়, পুরোহিত কোর্সে ট্রেনিং নিয়ে পুজো করেন গৃহকর্তাই। স্থানীয় এমপি, অন্টারিও প্রদেশের এমপিপি (মেম্বার অব প্রভিন্সিয়াল পার্লামেন্ট), বিরোধী দলনেতা এবং স্থানীয় আধিকারিকেরাও আসেন এই পুজোয়, উপভোগ করেন পুজোর প্রথা, নান্দনিকতা। অন্টারিও সরকার প্রশংসাপত্র দিয়ে এই দুর্গোৎসবকে কানাডার বৈচিত্র্যময় জনগোষ্ঠীদের মধ্যে ঐক্যবন্ধনের সেতু হিসেবে মান্যতা দিয়েছেন।
গত বছর রেকর্ডে শ্রীশ্রীচণ্ডী পাঠ হয়েছিল, এ বার সেটি নিজেই পাঠ করবেন পরিবারের এক সদস্য। ছোট ঘরোয়া অনুষ্ঠান থেকে বড় কিছু করার কথা এবার ভাবছেন উদ্যোক্তারা। শীত এসে বরফের ওড়নায় উত্তর মেরু লাগোয়া এই দেশটিকে ঢেকে দেওয়ার আগেই শরৎসকালে নীল আকাশ, সাদা ভেলার অনুষঙ্গে কয়েক মাস আগে থেকেই সাজোসাজো রবে ব্যারি হয়ে ওঠে এক টুকরো বাংলা।