— প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
‘বেঙ্গলি কালচারাল সোসাইটি অফ সাউথ সুইডেন’-এর পুজো এই বছর অষ্টম বর্ষে পদার্পণ করল। গত সাত বছর দেবী পূজিতা হয়েছেন একই প্রতিমায়। সময়ের ছাপ তাতে সুস্পষ্ট। তাই প্রতিমা পরিবর্তন করা হয়ে উঠেছিল অনিবার্য। এই বছর নতুন প্রতিমা এসেছে কলকাতার কুমোরটুলি থেকে।
তবে এ বার পুজোর উন্মাদনায় পড়েছে ভাটার টান। বাংলার মাটিতে যে প্রতিবাদ চলছে, তার ঢেউ লেগেছে সুইডেনের প্রবাসী বাঙালিদের মধ্যেও। আর জি কর হাসপাতালের চিকিৎসক-পডুয়ার খুনের বিচার চেয়ে সরব সুদূর হেলসিনবর্গের বাসিন্দারাও। শুধু বাঙালিরাই নন, ‘বেঙ্গলি কালচারাল সোসাইটি অফ সাউথ সুইডেন’-এর প্রতিবাদ মিছিলে শামিল হয়েছিলেন ভারতের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এখানে আসা মানুষজন। সকলের দাবি, মেয়েটি বিচার পাক।
শ্রী শ্রী চণ্ডীতে বলা হয়েছে, ‘যখনই ধরাতলে দানবদের উত্থান হবে, দেবী আবির্ভূতা হবেন সেই দানব দমনে’। আজকের সমাজ কলুষিত মানুষরূপী দানবের আধিপত্য ও অত্যাচারে। সামাজিক অবক্ষয়ের হাত থেকে রক্ষা করতে আজ দেবী দুর্গার পুনরাবির্ভাবের খুব প্রয়োজন। সেই বিশ্বাস প্রাণে নিয়ে এই বছর আমাদের পুজোর মূল বিষয়বস্তু— ‘সংসার’।
আমরা মনে করি, জগৎ-সংসারের মূল চালিকাশক্তি মা, অর্থাৎ প্রকৃতি। তার শুধু রূপ বদলায়, বদলায় না তার মূল শক্তি। তাই আমাদের প্রার্থনা, এই পরমা শক্তির প্রচণ্ড তেজে জ্বলে-পুড়ে ছাই হয়ে যাক সব অশুভ আসুরিক শক্তি, জন্ম নিক এক নব জাগ্রত সমাজ, আর তার সূত্রধার হোক আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম।
সচেতন ভাবেই এ বছর আমাদের পুজোয় বিশেষ কোনও আড়ম্বর থাকবে না। সাধারণ সরঞ্জামেই সাজানো হবে মণ্ডপ। সঙ্গে থাকবে নতুন প্রতিমার আগমনের আনন্দ। শিল্পীর ভাবনায় মূর্ত হবে অভয়াশক্তির পুনর্জন্মের কল্পমূর্তি। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়েও আমাদের বার্তা থাকবে সমাজ সংস্কারের। এর পাশাপাশি থাকবে প্রতীকী রাবন দহন।
মায়ের কাছে আমাদের প্রার্থনা, ধ্বংস হয়ে যাক সমাজের যত মলিন সব অশুভ, পরবর্তী প্রজন্মের জন্য আমরা যেন রেখে যেতে পারি এক সুস্থ এবং নিরাপদ সমাজ।