পোপের কাছে বাবার দুঃখের কথা জানিয়ে এল শরণার্থী মেয়ে

কাকে বলে সাহস, তা দেখিয়ে দিল একটা একরত্তি মেয়ে! পোপকে গিয়ে বলে এল, ‘আমরা খুব কষ্টে রয়েছি।

Advertisement

সংবাদসংস্থা

শেষ আপডেট: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ১৩:৩৮
Share:

পোপ ফ্রান্সিসের কাছে সোফিয়া। ওয়াশিংটনে। -এএফপি।

কাকে বলে সাহস, তা দেখিয়ে দিল একটা একরত্তি মেয়ে!

Advertisement

পোপকে গিয়ে বলে এল, ‘আমরা খুব কষ্টে রয়েছি। আমাদের জন্য কিছু একটা কর, প্লিজ! আমাদের বাঁচাও!’

তার দুঃখের কথা, তার বাবার অপমানের কাহিনী সটান পোপের কাছে চলে গিয়ে শুনিয়ে এল সে। ওয়াশিংটনে। পোপের পোশাকের পকেটে গুঁজে দিয়ে এল ছোট্ট একটা চিঠি। চিরকূটও বলা যায়! চিঠিটা অবশ্য তার বাবার লেখা।

Advertisement

পাঁচ বছরের সোফিয়া ক্রুজ। ৭৮ বছর বয়সী পোপের কাছে পৌঁছতে তাকে কম হ্যাপা পোহাতে হয়নি! সবাই হই-হই করে উঠেছিল। করছে কী একরত্তি মেয়েটা? নিরাপত্তারক্ষীরা আটকেছিল। তবু সে পেরিয়ে গেল দেহ-তল্লাশির ‘মেটাল ডোর’। পোপও অবাক হয়ে গিয়েছিলেন। পরম স্নেহে কাছে ডেকে নিলেন একরত্তি মেয়েটাকে। জড়িয়ে ধরে চুমু খেলেন। হাজারো বাধা সোফিয়াকে দমাতে পারেনি। তাকে যে পৌঁছতেই হবে পোপের কাছে। তাঁকে বলতেই হবে তার ও তার বাবার দুঃখ আর অপমানের কথা ও কাহিনী। তার কথা শোনার তো আর কেউ নেই।

সোফিয়ার বাবা রুটি-রুজির খোঁজে বহু দিন আগে মেক্সিকো থেকে এসেছিলেন মার্কিন মুলুকে। সেখানেই জন্ম সোফিয়ার। এত দিন পরেও, ‘অনুপ্রবেশকারী’র যন্ত্রণা-অপমান তার বাবাকে সইতে হচ্ছে। তারা যে ‘বৈধ অনুপ্রবেশকারী’ নয়! কোনও সামাজিক মান-মর্যাদা নেই তাদের। নাগরিক পরিচয়পত্র নেই। তাই মার্কিন নাগরিকের প্রাপ্য সুযোগ-সুবিধাও পান না সোফিয়ার বাবা, সোফিয়ার পরিবার। সবাই আহা-উহু করেন, সহানুভূতি দেখান। কিন্তু, যা হলে, সোফিয়ার বাবার সমস্যা অনেকটাই মেটে, তার জন্য কেউ কিছুই করেন না। কাল ওয়াশিংটনে এসেছিলেন পোপ ফ্রান্সিস। পোপই ভরসা ছিল সোফিয়ার। বাবা যে তাকে শিখিয়েছেন, তাদের মতো গরীবের জন্য আছেন শুধুই ‘গড’! পোপ তো ‘জেসাস’-এরই (যিশু) ‘দূত’!

‘দূত’ না হলে কি আর পোপের কাছে পৌঁছনো হত ওই একরত্তি সোফিয়ার? নিরাপত্তারক্ষীরা যে তাকে কিছুতেই যেতে দিচ্ছিল না। শেষে পোপই হাত তুলে তাদের থামালেন। সোফিয়াকে ডেকে নিলেন কাছে। জড়িয়ে ধরে আদর করলেন, চুমু খেলেন। মাথায় হাত বুলিয়ে বললেন, ‘গড ব্লেস ইউ!’

আপাতত, পোপের ‘আশীর্বাদ’ পেলেই হিল্লে হয়ে যায় সোফিয়ার বাবার!

দূর থেকে তাঁর একরত্তি মেয়ের সাহস দেখে চোখ দিয়ে জল গড়াচ্ছিল সোফিয়ার বাবার!

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement