(বাঁ দিকে) কমলা হ্যারিস ও সলমন রুশদি (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
কমলা হ্যারিসকেই আমেরিকার প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হিসাবে দেখতে চাইছেন সাহিত্যিক সলমন রুশদি। হোয়াইট হাউসের দৌড় থেকে জো বাইডেন সরে যাওয়ার পর থেকেই ডেমোক্র্যাটিক শিবিরে বিকল্প নাম ঘিরে চর্চা চলছে। আমেরিকার বর্তমান ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলাই এগিয়ে রয়েছেন ডেমোক্র্যাটিক দলের বিকল্প নামের তালিকায়। বাইডেন নিজে প্রস্তাব করেছেন তাঁর নাম। আমেরিকার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ও তাঁর স্ত্রী মিশেল ওবামাও চাইছেন কমলাকে প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হিসাবে দেখতে। এ বার বিশ্বখ্যাত লেখক রুশদিও সমর্থন জানালেন কমলাকে।
মুম্বইয়ে এক কাশ্মীরি মুসলিম পরিবারে জন্ম রুশদির। বর্তমানে ব্রিটেন ও আমেরিকা, দুই দেশেরই নাগরিকত্ব রয়েছে তাঁর। রবিবার কমলার সমর্থনে দক্ষিণ এশীয়দের এক আলোচনাচক্রে নিজের মত প্রকাশ করেন রুশদি। তিনি বলেন, “এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ সময়। আমি বম্বেতে (অধুনা মুম্বই) বেড়ে উঠেছি। ভারতীয় (বংশোদ্ভূত) কোনও মহিলা হোয়াইট হাউস পরিচালনা করবেন, এমন ঘটনার সাক্ষী থাকা দারুণ অভিজ্ঞতা। আমার স্ত্রীও আফ্রো-আমেরিকান। আমরা চাই, ভারতীয় (বংশোদ্ভূত) কোনও মহিলা হোয়াইট হাউসে আসুন।”
উল্লেখ্য, কমলাকে এখনও আনুষ্ঠানিক ভাবে প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী ঘোষণা করেনি ডেমোক্র্যাটিক শিবির। তবে আমেরিকার রাজনীতির হাওয়া যে ভাবে বইছে, তাতে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা শুধুই সময়ের অপেক্ষা। আমেরিকার এ বারের নির্বাচনে কমলা ছাড়াও আর এক ভারতীয় বংশোদ্ভূতকে নিয়ে চর্চা চলছে। রিপাবলিকান শিবিরের ভাইস প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী জেডি ভান্সের স্ত্রী ঊষা ভান্স। তবে রুশদি জানিয়ে দিয়েছেন, কমলার জন্য তাঁরা সমবেত হলেও ঊষার ক্ষেত্রে তা হবে না। কেন? সে ব্যাখ্যাও দিয়েছেন নিজেই। রুশদির কথায়, “মাত্র এক সপ্তাহের মধ্যে আমেরিকার রাজনীতিতে এক অসাধারণ পরিবর্তন এসেছে। কমলার নাম প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হিসাবে উঠে আসার পর থেকেই আলোচনার ভরকেন্দ্র বদলে গিয়েছে। এই পরিবর্তন এগিয়ে থাকা চিন্তাধারার প্রতিফলন।”
একই সঙ্গে রিপাবলিকান শিবিরের প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পকেও সমালোচনায় বিঁধলেন রুশদি। টিএস এলিয়টের কবিতার দিকে ইঙ্গিত রেখেই সম্ভবত রুশদি বলেন, ট্রাম্প হলেন এক জন ‘ফাঁপা মানুষ’ ('হলো ম্যান'), যিনি আমেরিকাকে কর্তৃত্ববাদের দিকে টেনে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। ট্রাম্প ও কমলার তুলনা টেনে তিনি বলেন, “এখন যা পরিস্থিতি, ট্রাম্পকে কোনও দিক থেকে তারকা বলে মনে হচ্ছে না। তিনি এক জন মোটা, বৃদ্ধ মানুষ। আর কমলাকে দেখতে সুপারস্টারের মতো লাগছে। তাঁর মধ্যে এক অনন্যসাধারণ প্রতিভা রয়েছে।”
তবে নির্বাচনে ভারতীয় বংশোদ্ভূত কমলা আদৌ কতটা প্রভাব ফেলতে পারবেন, আমেরিকানরা তাঁকে আদৌ প্রেসিডেন্ট হিসাবে চাইবেন কি না, তা নিয়েও চর্চা রয়েছে। যদিও রুশদির মতে, নেতৃত্ব দেওয়ার ক্ষেত্রে মহিলাদের ক্ষমতা নিয়ে ধ্যান-ধারণা বর্তমান সময়ে অনেক বদলেছে। কমলার না জেতার কোনও কারণ নেই বলেই মনে করছেন তিনি।