গ্রেট বেরিয়ার রিফ।—ফাইল চিত্র।
লক্ষ লক্ষ টন শিল্পবর্জ্য কোথায় ফেলা হবে, তা নিয়ে চিন্তায় পড়েছিল তারা। ‘সমাধান’ বার করেছে অস্ট্রেলিয়া। সিদ্ধান্ত হয় ‘গ্রেট বেরিয়ার রিফ’-এর কাছে সমুদ্রে কমপক্ষে দশ লক্ষ টন শিল্পবর্জ্য ফেলা হবে।
উত্তরপূর্ব অস্ট্রেলিয়ার কুইন্সল্যান্ড উপকূলের কাছে এই ‘গ্রেট বেরিয়ার রিফ’। পৃথিবীর বৃহত্তম ‘জীবিত’ বিস্ময় বলা যায়! ২৩০০ কিলোমিটার দীর্ঘ। অন্তত ৬০০ রকমের প্রবাল দিয়ে তৈরি হাজার খানেক প্রাচীর, অসংখ্য ছোট ছোট দ্বীপ। রয়েছে অগুনতি রঙিন মাছ, শামুক, স্টারফিশের। বিশ্বের এমন ‘হেরিটেজ’ সামুদ্রিক এলাকাকে ‘আবর্জনার স্তূপ’ হিসেবে ব্যবহার করার সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ পরিবেশবিদরা। সামুদ্রিক আইন অনুযায়ী, এ ভাবে বর্জ্য ফেলা যায় না। কিন্তু আইনি ব্যবস্থাও নিতে পারছেন না তাঁরা। কারণ নিয়মের ফাঁক গলেই এই ছাড়পত্র দিয়েছে ‘গ্রেট বেরিয়ার রিফ মেরিন পার্ক অথরিটি’। বন্দর রক্ষণাবেক্ষণে যে বর্জ্য তৈরি হয়, সে সম্পর্কে আইনে কোনও উল্লেখ নেই। ফলে ‘হে পয়েন্ট পোর্ট’ থেকে খাল কেটে সমুদ্রে বর্জ্য ফেলার সিদ্ধান্তে আইনি জটিলতা নেই।
সাদাম্পটনের জাতীয় সমুদ্রবিজ্ঞান কেন্দ্রের বিশেষজ্ঞ সিমন বক্স্যাল বলেন, ‘‘ইতিমধ্যেই জলবায়ু পরিবর্তনের জেরে বেশ খারাপ অবস্থা গ্রেট বেরিয়ার রিফের। এ ভাবে প্রবাল প্রাচীরের উপরে বর্জ্য ফেললে, ভয়াবহ পরিণতি হবে।’’ কী ভাবে? বক্স্যালের ব্যাখ্যা— ওই বর্জ্য প্রবালের উপরে একটা আস্তরণ ফেলবে। তাদের গায়ে শৈবাল জন্মায়। ওই শ্যাওলা থেকেই প্রবালের গায়ের রং ধরে। বাঁচিয়ে রাখে তাদের। প্রবালের গায়ে বর্জ্য ফেলা হলে আর শ্যাওলা জন্মাবে না। ভেঙে যাবে প্রবাল ও সামুদ্রিক শৈবালের ‘পার্টনারশিপ’। ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হবে বিশ্বের বৃহত্তম প্রবাল প্রাচীর। বিশেষ করে যখন এই গরমের সময়টাতেই শৈবাল জন্মায়।
হে পয়েন্ট পোর্টের দায়িত্বে ‘দ্য নর্থ কুইন্সল্যান্ড বাল্ক পোর্টস কর্পোরেশন’। তাদের দাবি, ‘‘সাময়িক কিছু সমস্যা হতে পারে। কিন্তু বিপদ খুবই কম।’’