এ ভাবেই স্থানীয়দের সঙ্গে হাত মেলাতে যান স্কট মরিসন। ছবি: রয়টার্স।
দাউদাউ করে জ্বলছে পাঁচটি প্রদেশ। সেই অবস্থাতেই ছুটি কাটাতে চলে গিয়েছিলেন। সমালোচনার মুখে পড়ে ছুটি কাটছাঁট করে শেষমেশ ফিরে এলেন যদিও, কিন্তু ক্ষতিগ্রস্তদের দেখতে গিয়ে তীব্র ক্ষোভের মুখে পড়লেন অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন। ‘ইডিয়ট’ বলে তাঁকে ‘তাড়িয়ে’ দিলেন ক্ষতিগ্রস্তরা।
গত কয়েক দিনে দাবানল ভয়ঙ্কর আকার ধারণ করেছে অস্ট্রেলিয়ায়। প্রায় ৫০ লক্ষ হেক্টর জমি পুড়ে খাক হয়ে গিয়েছে সেখানে। হাজারেরও বেশি ঘর-বাড়ি ভস্মীভূত হয়ে গিয়েছে। স্তন্যপায়ী, সরীসৃপ মিলিয়ে বন্যপ্রাণী মারা গিয়েছে অন্তত ১২ কোটি। অগ্নিদগ্ধ হয়ে কমপক্ষে ২০ জনের মৃত্যু হয়েছে।
তা নিয়ে হুলস্থুল পড়ে গিয়েছে সে দেশের সংবাদমাধ্যমে। গোটা ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের পরিবেশবিদরাও। তা সত্ত্বেও গত কয়েক দিনে ক্ষতিগ্রস্তদের সঙ্গে দেখা করার সময় পাননি স্কট মরিসন। বরং সপরিবারে হাওয়াইয়ে ছুটি কাটাতে ব্যস্ত ছিলেন।
সমালোচনার মুখে পড়ে ফিরে এলেও, সঙ্গে সঙ্গে দুর্গতদের কাছে ছুটে যাননি তিনি। বর্ষবরণের রাতে সিডনি হারবারে আতসবাজির রোশনাই দেখে বৃহস্পতিবার নিউ সাউথ ওয়েলসের কোবারগোয় ক্ষতিগ্রস্তদের সঙ্গে দেখা করতে যান। আর সেখানেই সাধারণ মানুষের রোষে পড়েন তিনি। গাড়ি থেকে নামতে দেখেই মুখ ফিরিয়ে নেন অনেকে। হাত ছাড়িয়ে চলে যান কেউ কেউ।
তা সত্ত্বেও যেচে কথা বলতে গেলে মরিসনের উপর ক্ষোভে ফেটে পড়েন এক ব্যক্তি। তিনি বলেন, ‘‘আপনি একটা ইডিয়ট। এখন কী করতে এসেছেন? এখানে আর ভোট পাবেন না।’’ স্থানীয় এক মহিলা বলেন, ‘‘বন্যা হোক বা দাবানল, আমাদের কথা কেউ মনে রাখে না। যান গিয়ে আতসবাজির রোশনাই দেখুন।’’ মরিসনকে লক্ষ্য করে কটূক্তিও উড়ে আসতে শুরু করে।
তবে এ সব তিনি গায়ে মাখেননি বলে পরে সংবাদমাধ্যমকে জানান স্কট মরিসন। তিনি বলেন, ‘‘ঘরবাড়ি হারিয়েছেন অনেকে। অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয়ে গিয়েছে। তাই কষ্টে আছেন ওঁরা। রাগে আমাকেই কথা শুনিয়ে দিয়েছেন। তবে আমি কিছু মনে করিনি। ওঁদের মনের অবস্থা বুঝতে পারছি। ওঁদের সব রকম ভাবে সাহায্য করার চেষ্টা করব।’’
তবে শুধু সাধারণ মানুষই নন, স্কট মরিসনের আচরণে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন নিউ সাউথ ওয়েলসের পরিবহণ মন্ত্রী অ্যান্ড্রু কনস্ট্যান্স। তিনি বলেন, ‘‘এক্কেবারে ঠিক ভাবেই ওঁকে অভ্যর্থনা জানিয়েছেন সাধারণ মানুষ, ঠিক যেমনটার উনি যোগ্য।’’