Israel-Hamas Conflict

বিশ্ববিদ্যালয়ে পুলিশ, ধৃত অন্তত ৩০০

প্রায় দু’সপ্তাহ ধরে কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়-সহ আমেরিকার বিভিন্ন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে অবস্থান বিক্ষোভে বসেছেন প্যালেস্টাইনপন্থী পড়ুয়ারা। গত কাল আন্দোলনকারীরা হ্যামিল্টন হল দখল করে নেন।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নিউ ইয়র্ক শেষ আপডেট: ০২ মে ২০২৪ ০৪:৫৩
Share:

প্রায় দু’সপ্তাহ ধরে আমেরিকার বিভিন্ন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে অবস্থান বিক্ষোভে বসেছেন প্যালেস্টাইনপন্থী পড়ুয়ারা। —ফাইল চিত্র।

কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের হ্যামিল্টন হল-কে আন্দোলনকারীদের হাত থেকে মুক্ত করতে পুলিশ ডাকলেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। নিউ ইয়র্কের এই বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়া সিটি কলেজ কর্তৃপক্ষও মঙ্গলবার রাতে পুলিশ ডেকেছিলেন। এই দুই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান মিলিয়ে প্রায় ৩০০ জন আন্দোলনকারীকে গ্রেফতার করেছে নিউ ইয়র্ক পোলিস ডিপার্টমেন্ট (এনওয়াইপিডি)। তাঁদের মধ্যে কত জন পড়ুয়া, তা স্পষ্ট নয়।

Advertisement

প্রায় দু’সপ্তাহ ধরে কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়-সহ আমেরিকার বিভিন্ন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে অবস্থান বিক্ষোভে বসেছেন প্যালেস্টাইনপন্থী পড়ুয়ারা। গত কাল আন্দোলনকারীরা হ্যামিল্টন হল দখল করে নেন। হলের বাইরে টাঙিয়ে দেওয়া হয় প্যালেস্টাইনের পতাকা। নিহত প্যালেস্টাইনি শিশুর নামে হ্যামিল্টন হলের নামকরণ করা হয় ‘হিন্দ হল’। কালই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্ট মিনুশে শফিক আন্দোলনকারীদের উদ্দেশে বলেছিলেন, এ ভাবে ব্যারিকেড করে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনও ভবন দখল করা আইনবিরুদ্ধ। আন্দোলনকারীরা যেন স্বেচ্ছায় অবস্থান তুলে নেন। কিন্তু তাঁর সেই আর্জিতে কাজ হয়নি। তার পরেই এনওয়াইপিডি-কে ডাকেন প্রেসিডেন্ট শফিক।

মঙ্গলবার রাত ৯টা নাগাদ ক্যাম্পাসে ঢোকে পুলিশ। প্রথমে মই লাগানো ‘বেয়ার’ নামের এক বিশাল গাড়ির সাহায্যে হ্যামিল্টন হলের দোতলার জানলা দিয়ে ভিতরে ঢোকে তারা। সেখানে যে আন্দোলনকারীরা ছিলেন, তাঁদের হল থেকে বেরিয়ে যেতে বলা হয়। যাঁরা হল ছেড়ে যেতে সম্মত হননি, তাঁদের গ্রেফতার করা হয়। ক্যাম্পাসে তাবু খাঁটিয়ে যাঁরা অবস্থান-বিক্ষোভে বসেছিলেন, তাঁদেরও তুলে দেয় পুলিশ। কিছু আন্দোলনকারী বিনা বাধায় চলে যান। কিন্তু যাঁরা পুলিশকে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন, তাঁদের গ্রেফতার করা হয়েছে। সারা রাত ধরে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়েছে এনওয়াইপিডি। রাত পৌনে ১টার মধ্যে ক্যাম্পাস চত্বর থেকে সব আন্দোলনকারীকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে ধরপাকড়ের সময়ে কেউ জখম হননি বলে দাবি করেছে পুলিশ।

Advertisement

গত কয়েক দিন ধরে ইজ়রায়েল-বিরোধী আন্দোলন তীব্র আকার ধারণ করায় ১৫ মে পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের পঠনপাঠন বন্ধ রাখা হয়েছিল। প্রেসিডেন্ট মিনুশে ১৭ মে পর্যন্ত ক্যাম্পাসে পুলিশ মোতায়েন রাখার জন্য এনওয়াইপিডি-কে অনুরোধ জানান। এনওয়াইপিডি প্রধান জেফ্রি ম্যাড্রে আজ সকালে জানিয়েছেন, ১৫-২০ জন পুলিশ কর্মী আপাতত ক্যাম্পাসে মোতায়েন থাকবেন।

নিউ ইয়র্কের এই দু’টি বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়াও প্যালেস্টাইনপন্থী আন্দোলনকারীদের মোকাবিলায় আমেরিকার আরও বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে আজ পুলিশ ডাকা হয়েছিল। ইউনিভার্সিটি অব উইসকনসিনের ম্যাডিসন ক্যাম্পাসে পুলিশ এসে প্রথমে আন্দোলনকারীদের অবস্থান তুলে নেওয়ার জন্য ১৫ মিনিট সময় দেয়। আন্দোলনকারীরা তাতে কর্ণপাত করেননি। পড়ুয়াদের তোলা ভিডিয়ো থেকে দেখা গিয়েছে, এর পরেই পুলিশের সঙ্গে খণ্ডযুদ্ধ বেধে যায়। এই ক্যাম্পাস থেকে ৩৪ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া, লস অ্যাঞ্জেলেসেও আন্দোলনকারীদের মোকাবিলা করতে বেসরকারি নিরাপত্তারক্ষী নিয়োগ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। আপাতত পঠনপাঠন বন্ধ রাখা হয়েছে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে। ইয়েল, হার্ভার্ড, ইউনিভার্সিটি অব সাদার্ন ক্যালিফোর্নিয়া, ইউনিভার্সিটি অব টেক্সাস, অস্টিন— আন্দোলন চলছে দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে।

আজ হোয়াইট হাউসের প্রেস সচিব কারিন জঁ পিয়ের সাংবাদিক বৈঠকে জানিয়েছেন যে, প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন পরিস্থিতির দিকে নজর রাখেছেন। প্রেস সচিবের কথায়, ‘‘যে কোনও ধরনের আন্দোলন চলতেই পারে, যত ক্ষণ না বিক্ষোভকারীরা আইন ভঙ্গ করছেন।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement