কাশ্মীর পরিস্থিতি নিয়ে ভারত-পাকিস্তান, দু’দেশকেই সংযত থাকার আর্জি জানিয়েছে রাষ্ট্রপুঞ্জ।
কাশ্মীরের মতো দ্বিপাক্ষিক বিষয়ে হস্তক্ষেপ করার পাক দাবি কার্যত এড়িয়ে গেল রাষ্ট্রপুঞ্জ। বরং শিমলা চুক্তির প্রসঙ্গ টেনে বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রপুঞ্জের মহাসচিব আন্তোনিয়ো গুতেরেস ভারত এবং পাকিস্তানকে কাশ্মীর নিয়ে যথাসম্ভব সংযম দেখানোর অনুরোধ জানিয়েছেন।
কাশ্মীর সমস্যা নিয়ে মধ্যস্থতার জন্য রাষ্ট্রপুঞ্জের কাছে বারবারই দরবার করে এসেছে পাকিস্তান। সম্প্রতি কাশ্মীরে ৩৭০ রদের বিরোধিতা করে পাকিস্তান ফের রাষ্ট্রপুঞ্জের দ্বারস্থ হয়। জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা লোপের পরে ভারত রাষ্ট্রপুঞ্জে গৃহীত প্রস্তাব ভেঙেছে বলে পাক বিদেশমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কুরেশি চিঠিও লেখেন গুতেরেসকে। মঙ্গলবার রাষ্ট্রপুঞ্জে পাকিস্তানের দূত মালিহা লোধি রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পারিষদের প্রেসিডেন্ট জোয়ানা রোনেকা-র সঙ্গে বৈঠকও করেন এ বিষয়ে। ওই দিন তিনি পাক বিদেশমন্ত্রীর লেখা চিঠি নিরাপত্তা পরিষদের প্রেসিডেন্টের হাতে তুলে দেন বলে টুইটে জানিয়েছেন মালিহা নিজে। কিন্তু তার পরই রাষ্ট্রপুঞ্জের এই ঘোষণা পাকিস্তানের উদ্বেগ বাড়িয়ে দিল।
রাষ্ট্রপুঞ্জ যে কাশ্মীর সমস্যা নিয়ে হস্তক্ষেপ করবে না, যদিও সরাসরি যে ঘোষণা করেনি। তবে প্রতিবারের মতো এ বারেও শিমলা চুক্তির প্রসঙ্গ টেনে দু’দেশকে রাষ্ট্রপুঞ্জ কার্যত এটাই মনে করিয়ে দিয়েছে যে, ভারত-পাকিস্তানের এই দ্বিপাক্ষিক বিষয়ের মধ্যে তৃতীয় কোনও পক্ষের নাক গলানো অনুচিত। এমনটাই মনে করছে নয়াদিল্লি।
এ দিনও পাক বিদেশমন্ত্রীর চিঠি প্রসঙ্গে স্পষ্ট কিছু বলতে চায়নি রাষ্ট্রপুঞ্জ। গুতেরেসের মুখপাত্র স্টিফেন দুজেরিক শুধু স্পষ্ট করে দিয়েছেন, নিরাপত্তা পরিষদের নজরদারি কমিশন কাশ্মীর পরিস্থিতির উপর খুব কাছ থেকে নজর রেখেছে।
আরও পড়ুন: ইদে ঘরে ফিরবেন, উপত্যকার বাইরে থাকা কাশ্মীরিদের আশ্বাস মোদীর
আরও পড়ুন: ‘কাশ্মীরে ভোট হবে, উন্নয়নও,’ বললেন মোদী
নিরাপত্তা পরিষদের যে নজরদারি কমিশনের কথা বলছেন দুজারিক, ১৯৪৯ সালের জানুয়ারি মাসে রাষ্ট্রপুঞ্জ এবং সদস্য দেশগুলির ১১৮ জন প্রতিনিধিকে নিয়ে সেটি গঠিত হয়েছিল। ১৯৭১ সালে যুদ্ধের পর ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে অস্ত্রবিরতি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। তার পরের বছর হিমাচল প্রদেশের শিমলায় বৈঠকে বসেন ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গাঁধী এবং পাকিস্তানের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জুলফিকার আলি ভুট্টো। রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের নজরদারি কমিশনের তত্ত্বাবধানে দুই দেশের মধ্যে শিমলা চুক্তি সাক্ষরিত হয়। কাশ্মীরে নিয়ন্ত্রণ রেখা গড়ে ওঠে, যাতে তা পেরিয়ে এক দেশ অন্য দেশের উপর হামলা করতে না পারে।