পাশাপাশি: ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। বুধবার রাশিয়ার বলশই কামেন শহরে। এপি
জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা প্রত্যাহারের পর বিশ্বের বিভিন্ন শক্তিধর রাষ্ট্রগুলিকে পাশে পাওয়ার চেষ্টা করছে নয়াদিল্লি। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর রাশিয়া সফরের প্রথম দিনেই ওই প্রশ্নে এক ধাপ এগোল সাউথ ব্লক। বিদেশ মন্ত্রক জানিয়েছে, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকের পর কাশ্মীর প্রশ্নে পাশে পাওয়া গিয়েছে মস্কোকে।
পুতিনের সঙ্গে বৈঠকের পর যৌথ সাংবাদিক বৈঠকে মোদী বলেন, ‘‘কোনও রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে বাইরের কারও প্রভাব খাটানোর বিরুদ্ধে ভারত এবং রাশিয়া।’’ পাকিস্তানের নাম না-করলেও কাশ্মীর সম্পর্কেই যে তাঁর ওই মন্তব্য তা বুঝতে অসুবিধা হয়নি কারও-ই। মস্কো বলেছে, ভারতীয় সংবিধানের মধ্যে দাঁড়িয়েই কাশ্মীর নিয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছে নয়াদিল্লি। কাশ্মীর নিয়ে রাষ্ট্রপুঞ্জের রুদ্ধদ্বার বৈঠকে রাশিয়ার অবস্থানে কিছুটা অস্বস্তিতে পড়েছিল মোদী সরকার। রাষ্ট্রপুঞ্জে রাশিয়ার স্থায়ী প্রতিনিধি বলেছিলেন, কাশ্মীর সমস্যা দ্বিপাক্ষিক ভাবে সমাধান করতে হবে। কিন্তু মানতে হবে রাষ্ট্রপুঞ্জের প্রস্তাব এবং সনদও। পরে মস্কো অবস্থান কিছুটা লঘু করে জানায়, তারা বলতে চেয়েছিল কাশ্মীর সমস্যা ভারত-পাকিস্তানের দ্বিপাক্ষিক বিষয়। মোদী-পুতিন বৈঠকের পর আজ ভারতের বিদেশসচিব বিজয় গোখলে জানান, কাশ্মীর নিয়ে ভারতের অবস্থান পুতিনকে জানান প্রধানমন্ত্রী।
‘ইস্টার্ন ইকনমিক ফোরাম’-এ অন্যতম প্রধান অতিথি প্রধানমন্ত্রী। মোদীর সফরে রাশিয়ার সঙ্গে সামরিক, বাণিজ্যিক-সহ ১৫টি চুক্তি ও মউ সই হয়েছে। ২০২৫ সালের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য তিন হাজার কোটি মার্কিন ডলারে পৌঁছনোর লক্ষ্যমাত্র স্থির করেছে দুই দেশ। ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’য় রুশ সংস্থাগুলি যোগদান এবং সে দেশে ভারতীয় সংস্থাগুলির বিনিয়োগে দু’দেশ উৎসাহ দেখিয়েছে। ভ্লাদিভস্তক থেকে চেন্নাই পর্যন্ত জলপথে যাতায়াতের প্রস্তাব দেন মোদী। পুতিনের সঙ্গে তিনি বলশই কামেন শহরের জে়জ়দা জাহাজ নির্মাণকেন্দ্র ঘুরে দেখেন। মোদী বলেন, ‘‘বাণিজ্য, নিরাপত্তা, জলপথ-সহযোগিতা, পরিবেশ রক্ষা-সহ বিভিন্ন বিষয়ে একযোগে কাজ করবে দুই দেশ।’’ কুড়ানকুলামে পরমাণু চুল্লি তৈরির বিষয়েও সম্মত হয়েছে ভারত ও রাশিয়া।