ডেন সু। ছবি: ইউটিউবের সৌজন্যে
হবু স্বামীর সঙ্গে পাহাড়ে ছুটি কাটাতে যাবেন বলে হোটেল বুক করে রেখেছিলেন আগে থেকেই। কিন্তু প্রবল ঠান্ডা আর তুষারপাত মাথায় নিয়ে যখন পৌঁছলেন তখন হোটেলে ঢুকতেই দেওয়া হল না তাঁদের। অপরাধ? যিনি হোটেল বুক করেছিলেন সেই ডেন সু জন্মসূত্রে এশীয়।
ঘটনাটি ঘটেছে লস অ্যাঞ্জেলসে। ডেন সু ক্যালিফোর্নিয়ার রিভারসাইড ল কলেজের ছাত্রী। ফেব্রুয়ারি মাসের শেষ দিকে সু এবং তাঁর হবু স্বামী ছুটি কাটানোর জন্য একটি আন্তর্জাতিক পর্যটন সংস্থার মাধ্যমে হোটেল বুক করেন। ছুটিতে যাওয়ার কিছুদিন আগে ওই পর্যটন সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করে সু জানতে চান, তাঁদের দু’জনের সঙ্গে আরও দুই বন্ধু গেলে কোনও সমস্যা হবে কি না। সু-য়ের দাবি, তখন কোনও সমস্যার কথা তাঁদের বলেনি পর্যটন সংস্থা। এমনকী তাঁদের বুকিং ‘কনফার্মড’ হয়েছে বলেও জানিয়ে দেওয়া হয় অ্যাপের মাধ্যমে।
সু-দের প্ল্যান ছিল, প্রথমে পাহাড়ে ট্রেক করে তারপর হোটেলে যাবেন তাঁরা। হোটেলের কাছাকাছি পৌঁছে অ্যাপের মাধ্যমে পর্যটন সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করেন সু। কিন্তু সংস্থার উত্তর দেখে চমকে যান। অ্যাপের মাধ্যমেই সু-কে জানানো হয়, তাঁদের বুকিং বাতিল করা হয়েছে। বুকিং বাতিলের কারণ জানতে চাওয়ায় পর্যটন সংস্থার তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়, ‘‘আপনার এশীয় পরিচয়ই কারণ হিসাবে যথেষ্ট।’’ সংস্থার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বললে সু-কে বলা হয়, ‘‘যা খুশি করতে পারো। আমাদের দেশকে অভিবাসীদের দেশ হতে দেব না। আমাদের সঙ্গে ট্রাম্প আছেন।’’
বুকিং বাতিল হওয়ায় প্রবল তুষারপাতের মধ্যেই দু’ঘণ্টা ঘুরে অবশেষে ঘরের ব্যবস্থা করতে পারেন সু ও তাঁর বন্ধুরা।
দেখুন সু-র পোস্ট করা সেই ভিডিও
আরও পড়ুন: আমেরিকায় ফের ভারতীয় খুন, পরিবারের পাশে সুষমা
এরপরেই সমস্ত ঘটনাটি জানিয়ে ফেসবুকে পোস্ট করেন ডেন সু। একটি ভিডিও পোস্ট করা হয় ইউটিউবেও। জাতি বিদ্বেষের কারণেই তাঁদের হেনস্থা করা হয়েছে বলেও জানান তিনি। সু লেখেন, ‘‘তিন বছর বয়স থেকে আমেরিকায় রয়েছি। আমেরিকাই আমার দেশ। ২৩ বছর এ দেশে থাকার পর এরকম কথা শুনতে হবে স্বপ্নেও ভাবিনি।’’
সু-র ফেসবুক পোস্টের পরেই বিষয়টি নিয়ে নড়েচড়ে বসে ওই পর্যটন সংস্থা। বুকিং সংক্রান্ত যাবতীয় টাকা ফেরত দেওয়ার পাশাপাশি অভিযুক্ত কর্মীকে বরখাস্ত করা হয়েছে বলেও ওই সংস্থা জানিয়েছে। তবে অভিযুক্তের নাম, পরিচয় জানাতে সম্মত হয়নি তারা। পাশাপাশি এই ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি যেন না হয় তা খেয়াল রাখা হবে বলেও জানিয়েছে ওই সংস্থা।
ক্ষমতাসীন হওয়ার পরই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ৮টি দেশের নাগরিকদের আমেরিকায় প্রবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সেই প্রথম অভিবাসন ফতোয়াটির ওপর একটি মার্কিন আদালত স্থগিতাদেশ দিলে ইরাককে তালিকা থেকে বাদ দিয়ে দ্বিতীয় অভিবাসন ফতোয়াটি তৈরি করে ট্রাম্প প্রশাসন। কিন্তু সেটিও কার্যকর হওয়ার আগেই তার উপর স্থগিতাদেশ জারি করেছে মার্কিন আদালত।