প্রতীকী ছবি।
করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের ধাক্কায় বিধ্বস্ত ভারত-সহ বিশ্বের বহু দেশ। এর মাঝেই দেখা দিয়েছে তৃতীয় ঢেউয়ের চোখ রাঙানি। গোটা বিশ্ব টিকাকরণের দিকে ছুটলেও বাধ সাধছে টিকার আকাল। এই পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠতে বিকল্পের খোঁজ চালিয়ে যাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা। যার মধ্যে অন্যতম ‘অ্যান্টিবডি নেজ়াল স্প্রে’।
সম্প্রতি এ নিয়ে একটি বিস্তারিত রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে ‘নেচার’ পত্রিকায়। সেই রিপোর্ট অনুযায়ী, ‘হাইব্রিড অ্যান্টিবডি’ দিয়ে
তৈরি এক বিশেষ ধরনের নাকে দেওয়ার প্রতিষেধক নিয়ে পরীক্ষা চালাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা।
পরীক্ষার অন্তর্গত, সার্স-কোভ-২ ভাইরাসের সংস্পর্শে নিয়ে আসার ছ’ঘণ্টা আগে এবং ছ’ঘণ্টা পরে এই স্প্রে প্রয়োগ করা হয় ইঁদুরদের উপরে। দেখা যায় সংক্রমিত হওয়ার দু’দিনের মাথায় ওই ইঁদুরদের শ্বাসযন্ত্রে সার্স-কোভ-২ ভাইরাসের সংক্রমণের
মাত্রা অনেকটাই নামিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছে অ্যান্টিবডি স্প্রেটির বিশেষ ফর্মুলা।
চারিত্রিক বৈশিষ্ট অনুযায়ী আলাদা আলাদা উপাদান দিয়ে সম্পূর্ণ ভাবে গবেষণাগারে তৈরি (ইঞ্জিনিয়ারর্ড) এই ‘হাইব্রিড অ্যান্টিবডি’ করোনাভাইরাসের কমপক্ষে ২০টি ভ্যারিয়্যান্ট দমনের ক্ষেত্রে কার্যকর বলে প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে। এমনটাই দাবি ওই রিপোর্টের। তবে তা ট্রায়ালে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে এই নিয়ে আরও বিস্তারিত পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালাতে হবে বলেই জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা।
ক্ষমতায় আসার পর থেকেই দ্রুত টিকাকরণ প্রক্রিয়া শেষ করার দিকে জোর দিয়েছেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। আগামী ৪ জুলাইয়ের মধ্যে দেশে বসবাসকারী প্রাপ্তবয়স্কদের কমপক্ষে ৭০ শতাংশকে ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ়টি দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রাও সম্প্রতি স্থির করেছেন তিনি। তবে এই সময়সীমার মধ্যে তা আদৌ দেওয়া যাবে কি না,
তা নিয়েই এ বার অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে বলে গুঞ্জন বাইডেন প্রশাসনের অন্দরে।
কারণ প্রেসিডেন্টের দেওয়া লক্ষ্যমাত্রা রাখতে হলে দিনে কমপক্ষে ৫,৬৪,০০০ প্রাপ্তবয়স্কের টিকাকরণ করানো প্রয়োজন। যেখানে বর্তমানে প্রতিদিন কমবেশি টিকা দেওয়া হচ্ছে ৩,৭১,০০০ জনকে। ফলে এই হার এক ধাক্কায় আরও অনেকটাই বাড়াতে না-পারলে বাইডেনের কথা রাখতে রীতিমতো বেগ পেতে
হবে প্রশাসনকে।
অন্য দিকে, প্রতিষেধকের অভাবে ধুঁকতে থাকা তাইওয়ানের পাশে দাঁড়াল আমেরিকা। রবিরার বাইডেন প্রশাসনের তরফে ৭ লক্ষ ৫০ হাজার ভ্যাকসিন তাদের হাতে তুলে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি নিয়ে বায়ুসেনার বিমানে সে দেশে উড়ে যান আমেরিকান সেনেটরদের একটি দল।
তাইওয়ানে এখনও পর্যন্ত মোট জনসংখ্যার মাত্র তিন শতাংশের টিকাকরণ হয়েছে। ফলে আমেরিকার এই সাহায্যে আপ্লুত তাইওয়ান। তবে এ ভাবে বায়ুসেনার বিমানে চড়ে আমেরিকান সেনেটরদের তাইওয়ানে যাওয়ার বিষয়টি ভাল ভাবে নেয়নি চিন। এর মধ্যে অন্য ইঙ্গিত দেখছে তারা। আমেরিকার সঙ্গে তাদের সম্পর্কের পাশাপাশি এর কুপ্রভাব তাইওয়ানের সঙ্গে তাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উপরেও পড়বে বলে হুমকি দিয়েছে চিন।
এ দিকে, করোনাভাইরাসের উৎপত্তি নিয়ে নানা বিতর্কের মাঝে আমেরিকার দুই বিশেষজ্ঞ দাবি করলেন, চিনের কোনও গবেষণাগারেই এর উৎপত্তি। স্টিফেন কোয়ে এবং রিচার্ড মুলার নামে ওই দুই বিজ্ঞানীর দাবি, কোভিড-১৯ সৃষ্টিকারী প্যাথোজেনে তারা এমন কিছু বিরল জেনোমের সন্ধান পেয়েছেন যা প্রাকৃতিক করোনাভাইরাসে মেলে না। যার মাধ্যমে চিনের কোনও গবেষণাগারে এটিকে কৃত্রিম ভাবে তৈরি করার তত্ত্ব ভুয়ো নয় বলেই দাবি তাঁদের।