তিব্বতি ধর্মগুরু দলাই লামা। ফাইল ছবি।
ফের চিনের চোখরাঙানি উপেক্ষা করলেন তিব্বতি ধর্মগুরু দলাই লামা। নিলেন এক ‘সাহসী সিদ্ধান্ত’।
গত ৮ মার্চ তিব্বতি ধারার বৌদ্ধ ধর্মের ধর্মগুরুদের মধ্যে তৃতীয় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পদ, ‘খালখা জেটসুন ধাম্পা রিনপোচে’-র দশম উত্তরাধিকারীকে বেছে নিয়েছেন তিনি। সংশ্লিষ্ট মহল সূত্রের খবর, হিমাচল প্রদেশের ধর্মশালায় এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ওই পদে আমেরিকায় জন্মগ্রহণ করা আট বছরের এক মোঙ্গোলীয় শিশুর অভিষেক করিয়েছেন দলাই লামা। অনুষ্ঠানটি দেখতে উপস্থিত হয়েছিলেন কমপক্ষে ৬০০ জন মোঙ্গোলিয়াবাসী। সম্প্রতি ছড়িয়ে পড়েছে সেই অনুষ্ঠানের বেশ কয়েকটি ছবি।
মোঙ্গোলিয়ার সংবাদমাধ্যমে প্রচারিত খবর অনুযায়ী, যে শিশুটিকে ওই পদে বসানো হয়েছে তার একটি যমজ ভাইও রয়েছে। শিশুটির বাবা একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এবং তার ঠাকুমা মোঙ্গোলিয়ার পার্লামেন্টের প্রাক্তন সদস্যা।
তবে মোঙ্গোলিয়ার কাছে এটা খুশির খবর হলেও বর্তমানে হিমাচল প্রদেশে স্বেচ্ছা নির্বাসনে থাকা দলাই লামার এই সিদ্ধান্ত যে চিন খুব একটা ভাল ভাবে নেবে না তা এক প্রকার নিশ্চিত বলেই মনে করছে বিভিন্ন মহল। কারণ, চিনা প্রশাসন বরাবর দাবি করে এসেছে যে একমাত্র সেই ধর্মগুরুদেরই তারা মান্যতা দেবে যাঁরা তাদের সরকার দ্বারা নির্বাচিত হবেন। অন্য কোনও পথে নয়। ফলে গত ৮ মার্চের ওই অভিষেক অনুষ্ঠানের খবর উত্তেজনার পাশাপাশি জন্ম দিয়েছে আশঙ্কারও। এখন চিন বিষয়টি নিয়ে কী প্রতিক্রিয়া দেয়, সে দিকেই নজর।
এই প্রসঙ্গে অনেকেই মনে করিয়ে দিচ্ছেন ১৯৯৫ সালের কথা। যে বছর চিনকে উপেক্ষা করে তিব্বতি বৌদ্ধ ধর্মের দ্বিতীয় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ধর্মগুরু বা পাঞ্চেন লামার ১১তম উত্তরাধিকারীকে বেছে নিয়েছিলেন দলাই লামা। উল্লেখ্য, নির্বাচিত হওয়ার কিছুদিন পরেই ওই পাঞ্চেন লামা নিখোঁজ হয়ে যান। অপহরণ করা হয় তাঁর পরিবারকেও। আজ পর্যন্ত তাদের কোনও হদিস পাওয়া যায়নি। তবে এর কিছুদিনের মধ্যেই পাঞ্চেন লামার পদে নিজেদের পছন্দের এক সদস্যক নিয়ে এসেছিল চিন।