ভারতীয় যুবক শিহাব ভাই (ডান দিকে) ওয়াঘা সীমান্ত পেরিয়ে মঙ্গলবার পাকিস্তান পৌঁছেছেন। ছবি: পিটিআই।
পাকিস্তান পেরিয়ে, ইরান হয়ে হজ করতে সৌদি আরব যাবেন পায়ে হেঁটে। বাড়ি থেকে বেরিয়ে প্রায় ৩ হাজার কিলোমিটার পথ পেরিয়েছেন। প্রায় চার মাস পর ভারতীয় যুবক শিহাব ভাই ওয়াঘা সীমান্ত পেরিয়ে মঙ্গলবার পাকিস্তান পৌঁছেছেন। সে দেশের আদালত যদিও প্রথমে ২৯ বছরের শিহাবকে ট্রানজিট ভিসা দিতে রাজি হয়নি। পরে তিনি ছাড়পত্র পেয়েছেন।
ওয়াঘা সীমান্তে শিহাবকে স্বাগত জানান সারওয়ার তাজ। এই তাজই পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্টে শিহাবের ভিসার জন্য আবেদন করেছিলেন। তাঁর সঙ্গে ওয়াঘায় ছিলেন পাকিস্তানের ভগৎ সিংহ মেমোরিয়াল ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ইমতিয়াজ রশিদ কুরেশি। তিনি সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে জানিয়েছেন, মক্কা যাওয়ার জন্য পাকিস্তান সরকার ট্রানজিট ভিসা দেওয়ায় শিহাব ভীষণই খুশি। কুরেশির কথায়, ‘‘শিহাব ভালবাসা, বন্ধুত্ব এবং সৌভ্রাতৃত্বের বার্তা নিয়ে এসেছেন। আমরা ওঁকে লাহোর হাই কোর্টে সংবর্ধনা দিতে চেয়েছিলাম। কিন্তু নিরাপত্তার কারণে দিতে পারিনি।’’
শিহাব আদতে কেরলের বাসিন্দা। গত অক্টোবর মাসে তিনি কেরলের বাড়ি থেকে বেরিয়ে ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে হেঁটে ওয়াঘা সীমান্তে পৌঁছেছেন। তাঁর কাছে পাকিস্তানে প্রবেশের কোনও ভিসা ছিল না। সে কারণেই পাক অভিবাসন দফতর তাঁকে সীমান্তে আটকে দেয়। সৌদি আরবের মক্কায় গিয়ে হজ করা মুসলমানদের কাছে একটি পবিত্র বিষয়। ফেডেরাল ইমিগ্রেশন এজেন্সির এক কর্তা বলেন, ‘‘অভিবাসন দফতরের কাছে শাহিব জানান, তিনি ৩ হাজার কিলোমিটার হেঁটে হজ করতে যাচ্ছেন। তাঁকে মানবিকতার কারণে ভিসা দেওয়ার অনুরোধ জানান তিনি। তিনি পাক সরকারের কাছে ট্রানজিট ভিসা চেয়েছিলেন, যাতে তিনি ইরান হয়ে সৌদি আরব যেতে পারেন।’’
বিষয়টি জানতে পেরে লাহোরের বাসিন্দা তাজ হাই কোর্টে একটি আবেদন করেন। সেখানে তিনি সরকারের কাছে শিহাবকে ট্রানজিট ভিসা দেওয়ার আবেদন জানান, যাতে তিনি ইরান হয়ে সৌদি আরব যেতে পারেন। ঠিক যে ভাবে পাক সরকার ভারত থেকে আসা শিখ পুণ্যার্থীদের গুরু নানকের জন্মদিন বা অন্যান্য উপলক্ষে ভিসা দেয়, তেমন করেই শিহাবকে দেওয়ার আবেদন জানান। কিন্তু লাহোর হাই কোর্ট সেই আবেদন খারিজ করে দেয়। কারণ হিসাবে তারা জানায়, আবেদনকারীর সঙ্গে ভারতীয় ওই ব্যক্তির কোনও সম্পর্ক নেই। এমনকি, আদালতে আসার জন্য তিনি কোনও আইনি স্বীকৃতিও দেননি তাজকে। তাজ এর পর হাই কোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে পাক সুপ্রিম কোর্টে যান। সেখানে ট্র্যানজিট ভিসা মেলে।