শিশুটিকে কোলে তুলে নেন বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর এক মহিলা কর্মী। ছবি: টুইটার।
ভয়ঙ্কর ভূমিকম্পে ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে সিরিয়ার বিস্তীর্ণ এলাকা। হাজার হাজার মানুষ গৃহহীন। বাড়ছে মৃতের সংখ্যা। ভূমিকম্পে ধসে যাওয়া এমনই এক আবাসনের তলা থেকে উদ্ধার হল এক সদ্যোজাত। শিশুটির জন্মও ভূমিকম্পের মধ্যেই। প্রথম নিঃশ্বাস নিয়েছে সে ধ্বংসস্তুপের নীচেই। যদিও শিশুটির মা এবং বাবা— কেউই বেঁচে নেই। জন্ম হওয়া মাত্রই অনাথ হয়ে পড়ে সে।
ভিডিয়োয় দেখা যাচ্ছে, তুরস্কের আলেপ্পোয় একটি ধ্বংসস্তুপ থেকে একটি সদ্যোজাত শিশুকে তুলে আনছেন উদ্ধারকারীরা। শিশুটিকে কোলে তুলে নেন বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর এক মহিলা কর্মী। সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, এখন শিশুটি সুস্থ আছে। জানা গিয়েছে, উত্তর-পূর্ব সিরিয়ার আফরিনের গ্রামীণ এলাকা জেন্ডারেসে উদ্ধারকাজ চালানোর সময় এই সদ্যোজাতকে উদ্ধার করা হয়েছে। তবে ভূমিকম্পে বাস্তুচ্যুত হওয়া ওই শিশুটির পরিবারের কেউ বেঁচে নেই বলে খবর। এ ছাড়া শিশুটি সম্পর্কে আর কোনও তথ্য পাওয়া যায়নি।
সোমবার কাকভোরে তুরস্ক এবং সিরিয়ায় প্রথম ভূমিকম্প হয়। রিখটার স্কেলে তার মাত্রা ছিল ৭.৮। কম্পনে ভেঙে পড়ে হাজার হাজার বহুতল। ওই দেশের হাসপাতালগুলি ভর্তি আহত রোগীতে। এক চিলতে জায়গা খালি নেই। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)-র আশঙ্কা, দুই দেশে ভূমিকম্পে মৃত্যুর সংখ্যা ছাড়াতে পারে ২০ হাজার। মঙ্গলবার দুপুরে পঞ্চম বার কেঁপে ওঠে তুরস্ক। সব মিলিয়ে তুরস্ক এবং সিরিয়ায় মৃত্যুর সংখ্যা ৫,০০০ ছাড়িয়েছে। আহতের সংখ্যা ২০ হাজারের বেশি। এই শতাব্দীর সবচেয়ে বড় প্রাকৃতিক দুর্যোগ নিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার আশঙ্কা, মৃতের সংখ্যা অন্তত ৮ গুণ বাড়তে পারে।
তুরস্ক সরকার আগামী এক সপ্তাহ জাতীয় শোক ঘোষণা করেছে। প্রেসিডেন্ট রেজেপ তায়িপ এরেদোয়ান একটি বিবৃতিতে বলেন, ‘‘প্রত্যেকেই তাঁদের সর্বশক্তি দিয়ে উদ্ধারকাজে নিয়োজিত হয়েছেন। প্রবল ঠান্ডা, শীতের মরসুম এবং ভূমিকম্পের ভয়বহতার মধ্যে তাঁরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।’’ এই পরিস্থিতিতে তিনি দেশবাসীকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার বার্তা দিয়েছেন।