দিন কয়েক আগেই শ্রীলঙ্কার প্রাক্তন ক্রিকেটার সনৎ জয়সূর্যকে টুইটারে বিবৃতি দিয়ে জানাতে হয়েছে, তিনি বেঁচে আছেন। কারণ, গাড়ির ধাক্কায় কানাডার হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে টুইটারে খবর ছড়িয়েছিল হুহু করে।
কলকাতার এনআরএস মেডিক্যাল কলেজে যে রোগীর মৃত্যুকে ঘিরে সাম্প্রতিক অচলাবস্থা, তাঁর নাম বেমালুম পাল্টে দিয়ে মেসেজ ঘুরছে হোয়াটসঅ্যাপে।
পুরনো কোনও রেল দুর্ঘটনার একটা ছবি মাঝেমাঝেই ফেসবুকে ফিরে আসে। সঙ্গে লেখা থাকে— ‘অমুক জায়গায় ভয়াবহ রেল দুর্ঘটনা’।
ভুয়ো খবরের রাজত্ব ইন্টারনেটে। সম্প্রতি ২৫টি দেশের ২৫ হাজার মানুষকে নিয়ে সমীক্ষা চালিয়েছিল একটি মার্কিন থিঙ্ক ট্যাঙ্ক। গত বছরের ২১ ডিসেম্বর থেকে এই বছরের ১০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চালানো সেই সমীক্ষায় উঠে এসেছে, সারা বিশ্বের ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের মধ্যে ৮৬ শতাংশই ভুয়ো খবরের শিকার হয়ে চলেছেন। এই সমস্ত খবরের বেশির ভাগটাই ছড়াচ্ছে ফেসবুকে। তা ছাড়া ইউটিউব, টুইটার এবং ব্লগেও ভুয়ো খবরের রমরমা।
সমীক্ষা বলছে, বেশির ভাগ ভুয়ো খবর ছড়াচ্ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে। তার পরেই রয়েছে রাশিয়া এবং চিন। ভুয়ো খবরে প্রতারিত হতে হতে ইন্টারনেটের উপরে ক্রমশ আস্থা হারাচ্ছে সাধরণ মানুষ। তার প্রভাব পড়ছে অর্থনীতি ও রাজনৈতিক চর্চায়। সরকার ও সোশ্যাল মিডিয়া সংস্থাগুলির তাই অবিলম্বে সক্রিয় হওয়া প্রয়োজন বলে মনে করছে থিঙ্ক ট্যাঙ্কটি।
থিঙ্ক ট্যাঙ্কটির তরফে ফেন অসলার হ্যাম্পসন বলেন, ‘‘এ বছরের সমীক্ষা শুধু ইন্টারনেট কতটা ভঙ্গুর, সেই প্রশ্নটাই তুলে ধরেনি। দেখা গিয়েছে, সোশ্যাল মিডিয়া সংস্থাগুলি দৈনন্দিন জীবনে তথা ব্যক্তি-পরিসরে যে ভাবে ছড়ি ঘোরাচ্ছে, তা নিয়ে প্রবল অস্বস্তিতে সাধারণ মানুষ।’’
সমীক্ষকেরা দেখেছেন, সব চেয়ে সহজে প্রভাবিত হচ্ছেন মিশরের মানুষেরা। আর সব চেয়ে বেশি সন্দেহগ্রস্ত পাকিস্তানিরা। কিন্তু ব্যক্তিগত জীবনে সামাজিক মাধ্যম সংস্থার উঁকিঝুঁকি এবং ইন্টারনেট জুড়ে অবিশ্বাসের জাল যে বহু দূর ছড়িয়ে গিয়েছে, সমীক্ষার প্রয়োজনে মুখোমুখি ও অনলাইনে নেওয়া সাক্ষাৎকারগুলি তা স্পষ্ট করে দিয়েছে।