প্রতীকী ছবি।
বাংলাদেশের কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবিরে এ বার জঙ্গি সংগঠন আরসা (আরাকান রোহিঙ্গা সালভেশন আর্মি)-র এক শীর্ষ নেতার দেহ মিলেছে। মঙ্গলবার রাতে মোহাম্মদ হাসিমের দেহ পাওয়ার কথা স্থানীয় পুলিশ স্বীকার করলেও সবিস্তার কিছু জানাতে চায়নি। সূত্রের খবর, আরসা-র সশস্ত্র বাহিনীর ‘সেকেন্ড ইন কমান্ড’ হিসেবে পরিচিত হাসিম খুনই হয়েছে। এই ঘটনার পরে আরসা জঙ্গিরা শরণার্থী শিবিরে জবাবি হামলা চালাতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন নিরাপত্তা পর্যবেক্ষকরা। আবার এক পক্ষের আশা, হাসিমের অনুপস্থিতিতে দুর্বল হবে আরসা-র সংগঠন।
রোহিঙ্গা শিবিরে জঙ্গিদের উপস্থিতির বিষয়টি নিয়ে উচ্চবাচ্য চায় না বাংলাদেশ সরকার। বাংলাদেশের বিদেশ মন্ত্রকের এক কর্তার কথায়, ২০১৭-র অগস্টে অল্প কয়েক দিনের মধ্যে দেশ ছেড়ে আসা ৭ লক্ষ শরণার্থীর ঢলে কয়েক জন জঙ্গি থাকাটা অস্বাভাবিক নয়। কিন্তু সেই বিষয়টি প্রচারে এলে এক দিকে যেমন ত্রাণ ও শরণার্থী ফেরানোর বিষয়টি গুরুত্ব হারাতে পারে, তেমনই শেখ হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে জঙ্গিদের আশ্রয় দেওয়ার অভিযোগ তুলে হইচই করার লোকেরও অভাব পড়বে না। কিন্তু তার পরেও মায়ানমার সীমান্তে অস্ত্র, মাদক ও সোনার চোরাচালান মাত্রাছাড়া হওয়ার ঘটনায় পাকিস্তানের প্রশিক্ষণে তৈরি হওয়া আরসা-র ভূমিকাই সামনে আসে। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, মায়ানমার সীমান্তে রক্ষীদের গুলি চালানোর নির্দেশ দিতে হয়েছে বাংলাদেশ সরকারকে।
এর মধ্যেই গত ২৯ সেপ্টেম্বর রাতে উখিয়ার রোহিঙ্গা শিবিরে আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটসের চেয়ারম্যান মুহিবুল্লাহকে গুলি করে হত্যা করা হয়। পুলিশ ৩ জন আততায়ীকে ধরার পরে তাদের এক জন আদালতে এজাহার দিয়ে জানায়, মুহিবুল্লাকে খুন করা হয়েছে আরসা-র শীর্ষ নেতৃত্বের নির্দেশে। এর পরে ২৩ অক্টোবর পালংখালি শিবিরে হামলা চালিয়ে ৬ জনকে খুন করা হয়। হাসিমের নেতৃত্বেই সেই কাজ হয়েছিল বলে শোনা যায়। এর আগে ২০১৭-র অগস্টে মায়ানমারের রাখাইন প্রদেশে এক রাতে পুলিশ ও সেনা ছউনিতে হামলা চালিয়ে বহু মানুষকে হত্যা করে আরসা। তার পরেই সে দেশের সেনারা রোহিঙ্গাদের উচ্ছেদে নামে। শরণার্থীর ঢল নামে বাংলাদেশ সীমান্তে। পুরো ঘটনাটির পিছনে পাক গুপ্তচর সংস্থা আইএসআইয়ের পরিকল্পনা রয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে। হাসিম মারা যাওয়ার কী প্রতিক্রিয়া হয়, সে দিকেই এখন নজর নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞদের।