আহমেদ মাসুদ। গ্রাফিক।
আফগানিস্তানের এক মাত্র বিরোধী ঘাঁটি পঞ্জশিরের দখল নিতে পারে তালিবান। মঙ্গলবার ব্রিটেনের একটি সংবাদপত্র জানিয়েছে, আন্তর্জাতিক সহায়তা এবং রসদের অভাবে আন্তসমর্পণ করতে পারেন নর্দার্ন অ্যালায়েন্সের নেতা আহমেদ মাসুদ। পঞ্জশিরের তাজিক নেতার একটি ঘনিষ্ঠ সূত্র উদ্ধৃত করে প্রকাশিত খবরে দাবি, শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য ইতিমধ্যেই তালিবান নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনা শুরু হয়েছে মাসুদের। যদিও মাসুদ শিবিরের তরফে এখনও এই দাবির সত্যতা স্বীকার করা হয়নি।
মাসুদের পাশাপাশি পঞ্জশির এবং আশপাশের অঞ্চলগুলিতে তালিবান বিরোধী প্রতিরোধের নেতৃত্বে রয়েছেন আফগানিস্তানের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট আশরফ গনির সরকারের ভাইস প্রেসিডেন্ট আমরুল্লা সালেহ্। নিজেকে আফগানিস্তানের ‘ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট’ হিসেবে দাবি করা সালেহ্র ‘গতিবিধি’ নিয়ে কোনও খবর সামনে আসেনি।
সোমবার তালিবান মুখপাত্র জবিউল্লা মুজাহিদ দাবি করেছিলেন, তালিব যোদ্ধারা পঞ্জশির ঘিরে ফেলেছে। শীঘ্রই ওই এলাকা তাঁদের হাতে আসবে। তার আগে কাবুলের সুরক্ষার দায়িত্বপ্রাপ্ত তালিবান নেতা তথা হক্কানি নেটওয়ার্কের নেতা খলিল হক্কানি বলেন, ‘‘আহমেদ মাসুদের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। তিনি আফগানিস্তানের শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য অস্ত্র সংবরণে সায় দিয়েছেন।’’ ৩২ বছরের মাসুদও কয়েকটি সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছিলে, রক্তপাত এড়াতে তালিবানের সঙ্গে তিনি আলোচনায় রাজি। যদিও তারই মধ্যে পঞ্জশির, বাঘলান, পারওয়ান-সহ কয়েকটি প্রদেশে তালিবান এবং নর্দার্ন অ্যালায়েন্সের তীব্র লড়াইয়ের খবর সামনে এসেছিল।
মাসুদের বাবা আহমেদ শাহ মাসুদ প্রায় আড়াই দশক আগে তালিবান বিরোধী নর্দার্ন অ্যালায়্যান্স-এর প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। সে সময়ও পঞ্জশিরের দখল নিতে পারেনি তালিবান। ২০০১-এ টুইট টাওয়ার হামলার দু’দিন আগে সাংবাদিকের ছদ্মবেশে আল কায়দার মানববোমা হামলায় তিনি নিহত হন। আহমেদের বাহিনী এ বার উত্তর-মধ্য আফগানিস্তানে তালিবানকে শক্ত প্রতিরোধের মুখে ফেলতে পারে বলে মনে করা হচ্ছিল।
পঞ্জশির উপত্যকায় এখনও মাসুদ অনুগত ৬,০০০ তাজিক যোদ্ধা রয়েছে বলে স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের খবর। এ ছাড়া কয়েক হাজার আফগান সেনা এবং উজবেক ‘যুদ্ধপতি’ (ওয়ার লর্ড) রশিদ দোস্তমের অনুগত মিলিশিয়া যোদ্ধারাও রয়েছেন তালিবান প্রতিরোধের লড়াইয়ে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত মাসুদ অস্ত্র সমর্পণ করলে গোটা আফগানিস্তানেই তালিবান রাজ নিরঙ্কুশ হবে।