৩৭০ অনুচ্ছেদ রদের পর শ্রীনগরে নিরাপত্তা। —ফাইল চিত্র
আগেও এক বার জম্মু-কাশ্মীর পরিস্থিতি নিয়ে মার্কিন কংগ্রেস সদস্যদের মন্তব্য নিয়ে বিস্তর বিতর্ক হয়েছি। অস্বস্তি বাড়ে নয়াদিল্লির। সেখানেই ফের উঠতে চলেছে কাশ্মীর প্রসঙ্গ। ভারত বারবার বিষয়টি তাদের অভ্যন্তরীণ বলে সওয়াল করা সত্ত্বেও মার্কিন কংগ্রেসের মানবাধিকার কমিশন বিবৃতিতে জানায়, ভারত ও পাকিস্তানে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ইতিহাসের প্রেক্ষিতে জম্মু-কাশ্মীরে সাম্প্রতিক মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিচার হবে।
জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বিলোপের সিদ্ধান্ত ঘোষণার পর থেকেই সেখানে বন্ধ ইন্টারনেট পরিষেবা। ল্যান্ডলাইন সাময়িক ভাবে চালু হলেও মোবাইল পরিষেবা এখনও স্তব্ধ উপত্যকায়। মোতায়েন রয়েছে বিপুল বাহিনী। ৩১ অক্টোবরের পর থেকে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হিসেবে যাত্রা শুরু করেছে জম্মু-কাশ্মীর। কিন্তু সেখানকার মানুষদের মৌলিক অধিকার এখনও লঙ্ঘিত হচ্ছে কি না, তা মার্কিন কংগ্রেস ফের খতিয়ে দেখবে বলে বিবৃতিতে বলা হয়েছে। এ বিষয়ে নেওয়া হবে প্রত্যক্ষদর্শীর বয়ানও।
কংগ্রেসের প্রথম প্যানেলের সামনে সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে মার্কিন আন্তর্জাতিক ধর্মীয় স্বাধীনতা বিষয়ক কমিশনের প্রধান অনুরিমা ভার্গবকে। দ্বিতীয় প্যানেলের কাছে বক্তব্য রাখবেন মানবাধিকার সংক্রান্ত আইনজীবী সেহলা আসাই এবং অর্জুন এস শেঠি।
২০১৮ সালের মার্কিন কংগ্রেসের রিপোর্টে রাষ্ট্রপুঞ্জের মানবাধিকার হাইকমিশনারের রিপোর্ট উদ্ধৃত করে বলা হয়েছিল ভারতীয় কাশ্মীর ও পাক অধিকৃত কাশ্মীর, এই দুই এলাকাতেই মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিস্তর উদাহরণ দেখতে পাওয়া গিয়েছে। পরে মার্কিন কংগ্রেসের একটি শুনানিতে একাধিক সদস্য ভারতের কার্যকলাপ সম্পর্কে বিরূপ মন্তব্য করেন। ভারতের পক্ষে সাক্ষ্য দিতে আসা সাংবাদিক আরতি টিক্কু সিংহকে কার্যত কথা বলতে দেওয়া হয়নি বলেও অভিযোগ ওঠে।
এর মধ্যে আজ দিল্লির পক্ষে কিছুটা স্বস্তির সুর শোনা গিয়েছে কংগ্রেস সদস্য জিম ব্যাঙ্কসের মুখে। গত কাল একটি সম্মেলনে তিনি জানান, কাশ্মীর উপত্যকায় বেশির ভাগ হিংসার পিছনে রয়েছে জামাত-ই-ইসলামি সংগঠন।
সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে এই সংগঠনক আগেই পাঁচ বছরের জন্য নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে ভারত সরকার। গত কাল ক্যাপিটল হিলে পশ্চিম এশিয়া নিয়ে একটি শীর্ষ সম্মেলনে জামাতের প্রসঙ্গ তোলেন ব্যাঙ্কস। জানান, কাশ্মীরে সংখ্যালঘু হিন্দু, খ্রিস্টান, বৌদ্ধদের উপরে অধিকাংশ হামলার পিছনে রয়েছে জামাত-ই-ইসলামি।
এর মধ্যেই আন্তর্জাতিক মঞ্চে পাক সরকারকে এক হাত নিয়েছে ভারত। গত কাল প্যারিসে ইউনেস্কোর একটি বৈঠকে অযোধ্যা-রায় ও ৩৭০ অনুচ্ছেদ রদ নিয়ে নয়াদিল্লির সমালোচনা করেন পাক শিক্ষামন্ত্রী শফকত মেহমুদ। কিন্তু ভারতের তরফে বিদেশ মন্ত্রকের এক আধিকারিক জানান, পাক সরকার ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে সর্বোচ্চ আদালতের রায় নিয়ে যে যে অভিযোগ বা মন্তব্য করেছে তা আদ্যন্ত ভুয়ো এবং ভিত্তিহীন। অযোধ্যা-রায় প্রসঙ্গে ওই আধিকারিক বলেছেন, ‘‘যে ভাবে সব ধর্মের মানুষের বিশ্বাসকে গুরুত্ব দিয়ে ওই রায় দেওয়া হয়েছে, সেই নিরপেক্ষতার কথা পাকিস্তান সরকার ভাবতেই পারে না।’’