শাহবাজ শরিফ। —ফাইল চিত্র।
দুর্বলতার কোনও স্থান নেই। বালুচিস্তানে সোমবারের হামলার কড়া নিন্দা করে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ মঙ্গলবার সকালে ঘোষণা করলেন, ‘‘কোনও অবস্থাতেই জঙ্গিদের প্রতি নরম অবস্থান নেবে না পাকিস্তান।’’ ততক্ষণে অবশ্য বালুচিস্তান এবং খাইবার-পাখতুনখোয়া জুড়ে বিদ্রোহী দমন অভিযান পুরোদমে চালিয়ে যাচ্ছে পাক সেনা, রেঞ্জার্স এবং ফ্রন্টিয়ার কোর বাহিনী। তাদের নিশানায় বিদ্রোহী বালুচিস্তান লিবারেশন আর্মি (বিএলএ) এবং তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তান (টিটিপি)।
বালুচিস্তান জুড়ে রবিবার মধ্যরাত থেকে দফায় দফায় হামলা চালিয়েছিলেন বিএলএ গেরিলারা। এখনও পর্যন্ত সরকারি হিসাবে নিহতের সংখ্যা ৭০। অন্য দিকে মঙ্গলবার পাক সেনার ইন্টার-সার্ভিসেস পাবলিক রিলেশনস (আইএসপিআর)-এর একটি বিবৃতিতে বলা হয়েছে গত ২০ অগস্ট থেকে খাইবার-পাখতুনখোয়ায় সক্রিয় টিটিপি এবং তার সহযোগী গোষ্ঠীগুলির বিরুদ্ধে ধারাবাহিক অভিযান চালিয়ে ২৫ জন বিদ্রোহীকে মারা হয়েছে। নিহতদের মধ্যে রয়েছেন, ফিতনা আল-খাওয়ারিজ় গোষ্ঠীর নেতা আবুজ়ার ওরফে সাদ্দাম। নিহতদের মধ্যে ১১ জন খাওয়ারিজ যোদ্ধা।
পাক প্রেসিডেন্ট আসিফ আলি জারদারি মঙ্গলবার সে দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহসিন নকভি এবং বালুচিস্তানের মুখ্যমন্ত্রী সরফরাজ বুগতির সঙ্গে বৈঠকে পরিস্থিতির পর্যালোচনা করেন। প্রসঙ্গত, রবিবার গভীর রাতে কালাট, মাশতুঙ্গ, পাসনির মতো এলাকার বিভিন্ন থানায় হামলা চালায় সশস্ত্র জঙ্গিরা। কোথাও নিশানা করা হয় পুলিশ এবং ফ্রন্টিয়ার কোর বাহিনীতে, কোথাও থানার সামনে জ্বালিয়ে দেওয়া হয় গাড়ি। গ্রেনেড হামলা হয় সিবি, পাঞ্জগুড়, তুরবাত, বেলা, কোয়েটার মতো এলাকা থেকে। মাশতুঙ্গ বাইপাস এলাকার কাছে পাকিস্তান এবং ইরানের সঙ্গে সংযোগরক্ষাকারী রেললাইনের একাংশ শক্তিশালী গ্রেনেড বিস্ফোরণে উড়িয়ে দেওয়া হয়।
সোমবার সকালে মুসাখাইল জেলার রারাশাম এলাকার আন্তঃপ্রাদেশিক হাইওয়েতে ট্রাক এবং বাস থেকে নামিয়ে বেছে বেছে মোট ২৩ জন যাত্রীকে গুলি করে মারা হয়। বাস এবং ট্রাক থেকে যাত্রীদের নামানোর পরে তাঁদের প্রত্যেকের পরিচয় জানতে চান বিদ্রোহীরা। এর পরে পঞ্জাব প্রদেশ থেকে আসা যাত্রীদের গুলি করে খুন করা হয়। হামলার দায় স্বীকার করে বিএলএ জানিয়েছে, বাসে সাধারণ পোশাক পরে যে পঞ্জাবি সেনা ও আধাসেনারা যাচ্ছিলেন, তাঁদেরই খুন করা হয়েছে। পঞ্জাবি আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে বালোচরা লড়াই চালিয়ে যাবে বলেও জানিয়েছে বিএলএ।