পুরুষ সঙ্গী ছাড়া বাড়ি থেকে বেরনোর ‘অপরাধে’ আফগান মহিলার মাথা কাটল তালিবান দুষ্কৃতীরা। আফগানিস্তানের তালিবান শাসিত সর-ই-পুল প্রদেশের লাত্তি গ্রামের এই ঘটনায় ফের এক বার সে দেশের মহিলাদের অসহায়তার ছবি ফুটে উঠল। যদিও ঘটনার দায় অস্বাকীর করেছেন তালিবান নেতারা। তবে, প্রাদেশিক গভর্নরের মুখপাত্র জাবিউল্লা আরমানি স্বীকার করেন, স্বামী ছাড়া রাস্তায় একা বেরনোর জন্যই ওই মহিলাকে আক্রমণ করা হয়েছে।
মিডিয়া রিপোর্টে খবর, বছর তিরিশের ওই মহিলা গেরস্থালীর জিনিসপত্র কেনাকাটার জন্য একা একা শহরে বাজার করতে বেরিয়েছিলেন। ঘটনার সময় তাঁর স্বামী ইরানে ছিলেন।
আরও পড়ুন
আমায় বাঁচান, ফাদার টমের ভিডিও-আর্তি
আফগানিস্তানে ১৫ বছরের তালিবান শাসনে মহিলাদের দুর্দশা বেড়েছে বই কমেনি। ১৯৯৬-২০০১ সাল পর্যন্ত— এই পনেরো বছরে তালিবান শাসনকালেই মহিলাদের উপর একের পর এক নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে। পাশাপাশি, ঘরোয়া হিংসা, সম্মান রক্ষার্থে খুন থেকে শুরু করে বার বার সশস্ত্র আক্রমণের শিকার হয়েছেন সে দেশের মহিলারা। কোনও পুরুষ নিকটাত্মীয় ছাড়া মহিলাদের একা বাইরে বেরনোয় ফতোয়া জারি করেছেন আফগানিস্তানের তালিবান নেতারা। শুধু তা-ই নয়, বাড়ির বাইরে পা রেখে মহিলাদের চাকরি করা বা পড়াশোনাতেও নিষেধাজ্ঞা রয়েছে তাঁদের। এমনকী, পুরুষ সঙ্গী নিয়ে বাড়ির বাইরে বেরলেও সব সময় বোরখা পরে থাকতে হবে বলেও নিদান দিয়েছেন তাঁরা।
গত মাসেই দক্ষিণ কান্দাহারে পাঁচ জন আফগান মহিলাকে প্রকাশ্যে খুন করে অজ্ঞাতপরিচয় বন্দুকধারীরা। বিমানবন্দরে নিরাপত্তারক্ষী হিসাবে কাজ করতেন ওই পাঁচ মহিলা। কাজে যাওয়ার পথে তাঁদের উপর হামলা চালায় দুষ্কৃতীরা। দুষ্কৃতীদের গুলি ঝাঁঝরা করে দেয় তাঁদের শরীর।
২০০১-এ তালিবানের পতনের পর শিক্ষা ও কাজের অধিকার-সহ মহিলাদের সুরক্ষা নিয়ে দেশের অন্দরে ও বাইরে আওয়াজ তীব্র হয়েছে। কিন্তু, সে ছবিটা যে বিন্দুমাত্র বদলায়নি তা ফের এক বার প্রমাণিত।