India-Canada Conflict

ভারতে থাকা কূটনীতিকদের অনেককে মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর পাঠাচ্ছে কানাডা! দাবি রিপোর্টে

কানাডার কূটনীতিকদের সরিয়ে নেওয়ার জন্য জাস্টিন ট্রুডো সরকারকে ১০ অক্টোবর পর্যন্ত সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিল ভারত। সেই মতোই কানাডা সরকার ভারত থেকে কূটনীতিকদের সরিয়ে নিয়েছে বলে রিপোর্টে উঠে এসেছে।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

অটোয়া শেষ আপডেট: ০৭ অক্টোবর ২০২৩ ০৮:৫২
Share:

কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। —ফাইল চিত্র ।

খলিস্তানি জঙ্গি হরদীপ সিং নিজ্জরের খুনের পরিপ্রেক্ষিতে তৈরি হওয়া বিতর্কের জেরে ভারত থেকে কূটনীতিকদের সরিয়ে নিল কানাডা। ‘কূটনৈতিক ভারসাম্য’ রক্ষার জন্য দেশে থাকা কানাডার কূটনীতিকদের সরিয়ে নেওয়ার জন্য জাস্টিন ট্রুডো সরকারকে ১০ অক্টোবর পর্যন্ত সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিল ভারত। সেই মতোই কানাডা সরকার ভারত থেকে কূটনীতিকদের সরিয়ে কুয়ালালামপুর এবং সিঙ্গাপুরে পাঠিয়েছে বলে কানাডার সংবাদমাধ্যম ‘সিটিভি নিউজ়’-এর প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।

Advertisement

সম্প্রতি ভারত থেকে ৪১ জন কূটনীতিককে সরিয়ে দেওয়ার জন্য কানাডাকে অনুরোধ করেছিল নয়াদিল্লি। কানাডায় বর্তমানে ২০ জন ভারতীয় কূটনীতিক রয়েছেন। তাই ‘কূটনৈতিক ভারসাম্য’ রক্ষার জন্য কানাডার সেই সংখ্যক কূটনীতিকদেরই ভারতে থাকার বিষয়ে ট্রুডো সরকারের সঙ্গে কথা বলেছিল মোদী সরকার। ভারত জানিয়ে দিয়েছিল, ১০ অক্টোবরের মধ্যে ভারত থেকে অতিরিক্ত কূটনীতিকদের সরিয়ে নিতে হবে কানাডাকে। সেই মতোই নাকি ভারতে থাকা বেশিরভাগ কূটনীতিকদের সরিয়ে নিল কানাডা। ‘সিটিভি নিউজ়’-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘‘নয়াদিল্লির বাইরে ভারতে কর্মরত বেশিরভাগ কানাডার কূটনীতিককে কুয়ালালামপুর বা সিঙ্গাপুরে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।’’

প্রসঙ্গত, গত জুন মাসে খলিস্তানপন্থী সংগঠন ‘খলিস্তান টাইগার ফোর্স’ (কেটিএফ)-এর প্রধান তথা কানাডার সারের গুরু নানক শিখ গুরুদ্বার সাহিবের প্রধান নিজ্জরকে গুরুদ্বার চত্বরের মধ্যেই গুলি করে খুন করা হয়। সেই ঘটনার তদন্তে ভারতের গুপ্তচর সংস্থার ভূমিকা ছিল বলে কানাডার পার্লামেন্টের জরুরি অধিবেশনে গত ১৮ সেপ্টেম্বর অভিযোগ করেছিলেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। হরদীপের খুনের জন্য কানাডার পার্লামেন্টে দাঁড়িয়ে কার্যত ভারতকে নিশানা করেছিলেন তিনি। তিনি এ-ও দাবি করেন যে, বিষয়টি নিয়ে জি২০ শীর্ষ সম্মেলন চলাকালীন তাঁর সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীরও কথা হয়েছে। সেই থেকেই বিতর্কের সূত্রপাত।

Advertisement

যদিও নিজ্জর খুনের ঘটনায় দায় অস্বীকার করেছে ভারত। ভারতের দাবি, ট্রুডোর অভিযোগ ‘অযৌক্তিক’ এবং ‘উদ্দেশ্য প্রণোদিত’। ট্রুডোর ওই বিবৃতির পরে কানাডার এক ভারতীয় কূটনীতিককে বহিষ্কারও করা হয়। সে দেশের বিদেশমন্ত্রী মেলানি জোলি জানান, ওই ব্যক্তি ‘র’-এর কানাডার প্রধান হিসাবে দায়িত্ব সামলাতেন। ওই পদক্ষেপের প্রতিক্রিয়ায় পরের মোদী সরকারও কানাডার এক শীর্ষ কূটনীতিককে পাঁচ দিনের মধ্যে দিল্লি ছাড়ার নির্দেশ দেয়। পাশাপাশি, পরবর্তী পদক্ষেপে কানাডার নাগরিকদের ভিসা দেওয়ার ক্ষেত্রেও বিধিনিষেধ জারি করে মোদী সরকার। যার প্রতিক্রিয়া হিসাবে ট্রুডো সরকার ভারতে অবস্থানকারী কানাডার নাগরিকদের উদ্দেশে ‘বিশেষ নিরাপত্তামূলক সতর্কতা’ জারি করে।

যদিও নিজ্জরের খুনের জন্য ভারতকে নিশানা করার দু’সপ্তাহের মাথাতেই সুর নরম করে ট্রুডো জানান, বিষয়টি নিয়ে নয়াদিল্লির সঙ্গে সংঘাতের পথে হাঁটতে চান না তিনি। ভারতের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক হঠাৎই তলানিতে ঠেকার পর ভারতের সঙ্গে ‘ব্যক্তিগত কূটনীতি’ চালানোর কথাও বলেন কানাডার বিদেশমন্ত্রী মেলানি জোলি। প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে, ব্যক্তিগত কূটনীতির কথা বলে প্রকৃত পক্ষে ভারতের সঙ্গে ঘরোয়া আলোচনায় বসে সমস্যা মেটাতে চাইছে কানাডা। যদিও ভারতের তরফে এখনও কোনও প্রতিক্রিয়া দেওয়া হয়নি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement