১৬ বছরের কিশোরীকে ধর্ষণের নিদান গ্রাম পঞ্চায়েতের। প্রতীকী ছবি।
ধর্ষণের শাস্তি ধর্ষণ! এমনই নিদান পাকিস্তানের পঞ্জাব প্রদেশের একটি গ্রাম পঞ্চায়েতের। এই নিদান মেনেই ১৬ বছরের কিশোরীকে তার পরিবারের সামনেই ধর্ষণের আদেশ দেওয়া হল। অপরাধ সেই কিশোরীর নয়। অপরাধ ধর্ষণে অভিযুক্ত তার দাদার। যে ব্যক্তির বোনকে ধর্ষণের অভিযোগে সে অভিযুক্ত, সেই ব্যক্তিকে দিয়েই ওই নাবালিকাকে তার পরিবারের সামনে ধর্ষণের নিদান দিল গ্রামের মুখিয়া ও পঞ্চায়েতের অন্যান্য সদস্য।
আরও পড়ুন: সম্মান রক্ষার্থে কি খুন ভারতীয় তরুণী
ঘটনাটি মুজফফরাবাদের রাজপুর গ্রামের। পুলিশ আধিকারিক এহসান ইউনিস জানিয়েছেন, আসফাকের কিশোরী বোনকে ধর্ষণের অভিযোগ ছিল উমর ওয়াদ্দারের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি গ্রামের মুখিয়াদের সামনে এলে উমরের শাস্তির জন্য এক নতুন বিধান দেয় তারা। আসফাককে গ্রাম পঞ্চায়েতের তরফ থেকে হুকুম দেওয়া হয়, পরিবারের সকলের সামনেই উমরের নাবালিকা বোনকে ধর্ষণ করতে হবে। ধর্ষণের বদলে ধর্ষণই হল উপযুক্ত শাস্তি। এই নিদানের তীব্র বিরোধিতা করে উমরের পরিবারের লোকজন। তাদের দায়ের করা অভিযোগের ভিত্তিতেই ওই গ্রামের মুখিয়া-সহ পঞ্চায়েতের ৩০ জন সদস্যকে গ্রেফতার করে পুলিশ। আসফাক এবং উমরের নামে আলাদা এফআইআর-ও দায়ের করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন এহসান।
পুলিশ জানিয়েছে, প্রথমে এই ঘটনার বিষয়ে পুলিশের কাছে কিছুই জানাননি উমরের পরিবারের লোকজন। গত ১৬ জুলাই উমরের বিরুদ্ধে আসফাকের বোনকে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে। তার পরেই বিচারের জন্য গ্রামে সালিশি সভা বসে। ওই সভাতেই শাস্তির এই রকম নিদান দেন পঞ্চায়েতের সদস্যেরা। ওই নিদান সত্যি মানা হয়েছিল কি না, অর্থাৎ ধর্ষণের কোনও ঘটনা ঘটেছে কি না তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। সুপ্রিম কোর্টের বার অ্যাসোসিয়েশনের প্রাক্তন সদস্য আসমা জেহাঙ্গিরের কথায়: ‘‘খুবই দুর্ভাগ্যজনক যে এখনও মানুষ পুলিশের কাছে না গিয়ে গ্রাম পঞ্চায়েতের কাছে বিচার চাইতে যান।’’ গ্রামীণ এলাকায় এই বিষয়ে সচেতনতা আরও বাড়ানো উচিত বলেই মনে করেন তিনি।