বর্ণ-বিক্ষোভের পারদ ক্রমশ চড়ছে।—ছবি এপি।
মাত্রা ছাড়িয়েছিল পুলিশ। গত রবিবার উইসকিনসন প্রদেশের কেনোশা শহরে কৃষ্ণাঙ্গ যুবক জেকব ব্লেককে পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে পর-পর সাতটা গুলি করা নিয়ে মার্কিন পুলিশকে এ ভাবেই বিঁধল রাষ্ট্রপুঞ্জের মানবাধিকার কমিশন। সংস্থার মুখপাত্র রুপার্ট কোলভিলের কথায়, মোবাইল ফুটেজ দেখে তাঁদের মনে হয়েছে, পুলিশ সে দিন অকারণে আন্তর্জাতিক বিধিও লঙ্ঘন করেছে। পুলিশি নির্যাতনের বিরুদ্ধে এক প্রতিবাদ মিছিলে আজ পা মেলান জেকবের আত্মীয়েরাও।
ঘটনায় অভিযুক্ত পুলিশ অফিসারদের শাস্তির দাবিতে কেনোশা থেকে শুরু হওয়া বর্ণ-বিক্ষোভের পারদ ক্রমশ চড়ছে। ইতিমধ্যেই দুই বিক্ষোভকারীর মৃত্যু হয়েছে। প্রথমে মনে করা হয়েছিল, বিক্ষোভ ঠেকাতে গত মঙ্গলবার পুলিশই গুলি চালিয়েছিল। পরে জানা যায়, পুলিশের নাকের ডগায় আধা-স্বয়ংক্রিয় রাইফেল থেকে সে দিন কৃষ্ণাঙ্গ বিক্ষোভকারীদের উদ্দেশে নাগাড়ে গুলি চালিয়েছিল এক শ্বেতাঙ্গ নাবালক। ধৃত কাইল রিটেনহাউস নামের ওই নাবালকের হয়ে মামলা লড়তে নেমে তার আইনজীবী লিন উড গত কালই দাবি করেছেন, তাঁর মক্কেল আত্মরক্ষার্থেই সে দিন গুলি চালিয়েছিল। এই ঘটনা নিয়েও উদ্বিগ্ন রাষ্ট্রপুঞ্জের মানবাধিকার কমিশন।
গত কাল ভার্চুয়াল সাংবাদিক বৈঠকে কোলভিল বলেন, ‘‘এমন একটা টালমাটাল পরিস্থিতিতে মাত্র সতেরো বছরের একটা ছেলে এ ভাবে বন্দুক তাক করে মিছিলের দিকে এগোচ্ছে, সেই দৃশ্যও তো অভাবনীয়! অস্ত্র-আইনে কড়াকড়ি আনার কথা আমরা এর আগেও বহু বার আমরা সতর্ক করেছি আমেরিকাকে।’’
নাবালকের আইনজীবী আজও দাবি করেন, তাঁর মক্কেল নির্দোষ। জানা গিয়েছে, ঘটনার দিন সে প্রায় ৫০ কিলোমিটার উজিয়ে এসেছিল ইলিয়নিসথেকে। একাধিক ভিডিয়োতে যে ভাবে নাবালক আততায়ীকে সে দিন অস্ত্র হাতে রাস্তায় দাপিয়ে বেড়াতে দেখা গিয়েছিল, তাতে সহজে সে রেহাই পাবে বলে মনে করছেন না বিশেষজ্ঞরা। ভিডিয়োতে ধরা পড়েছে, ঘটনার পরে কাউকে ফোন করে সেই নাবালক বলছে, ‘‘এই মাত্র একটা খুন করলাম।’’
চলতে থাকা বর্ণ-বিক্ষোভ এবং দু’জনের প্রাণহানির ঘটনায় আবার অন্য ভাবে বিতর্কে জড়িয়ে পড়েছে ফেসবুকও। সূত্রের খবর, কেনোশা থেকে বিক্ষোভ মাথাচাড়া দিতেই ফেসবুকে শহরেরই একাংশ ‘সেভ কেনোশা’ নামের একটি পেজ তৈরি করে পাল্টা মারের প্রচার চালাতে থাকে। জানা গিয়েছে, একাধিক রিপোর্ট সত্ত্বেও ওই পেজ সক্রিয় ছিল মঙ্গলবারেও। বুধবার মার্ক জ়াকারবার্গ নিজে জানান, ওই পেজ মুছে ফেলা হয়েছে। কিন্তু এত দিন কেন হয়নি? এর জবাবে ফেসবুক-কর্তা যে ‘পদ্ধতিগত ভুল’-এর যুক্তি দিয়েছেন, তা নেহাতই দায়সারা বলে মনে করছেন অনেকে।