ছ’দশকের রাজ্যপাট দুরমুশ করে ৯২ বছর বয়সে ফের মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী হলেন মহাথির মহম্মদ। বিশ্বের প্রবীণতম রাষ্ট্রনেতা হওয়ার রেকর্ডও গড়লেন।
এ দিন রাতেই রাজপ্রাসাদে রাজা পঞ্চম সুলতান মহম্মদের পৌরোহিত্যে চিরাচরিত পোশাকে শপথ নেন মহাথির। তিনি যখন সস্ত্রীক প্রাসাদে ঢুকছেন, শয়ে শয়ে মানুষ জাতীয় সঙ্গীত গেয়ে পতাকা নেড়ে স্বাগত জানান তাঁকে।
৬০ বছরে এই প্রথম মালয়েশিয়ার ভোটে জয় পেল বিরোধীরা। শাসক দলেরই প্রাক্তন নেতা মহাথির এ বছর দল বদলিয়ে বিরোধী জোটে নাম লেখান। সদ্য প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাকের সঙ্গে খারাপ সম্পর্ক ও ফের ভোটে দাঁড়ানো, কারণ ছিল দুই-ই। যদিও রাজনীতিতে নাজিবের হাতেখড়ি মহাথিরের হাত ধরেই। পরবর্তী কালে সম্পর্কে অবনতি হয়।
রাজনৈতিক জীবনের প্রথম ইনিংসে দু’দশকেরও বেশি মালয়েশিয়া শাসন করেছেন মহাথির (১৯৮১-১৯৯৩)। তাঁর হাতেই মালয়েশিয়ার আধুনিকীকরণ হয়। এ ভাবে তাঁর ফিরে আসাকে অনেকেই উইনস্টন চার্চিলের সঙ্গে তুলনা করছেন। ১৯১৫ সালে গ্যালিপোলি যুদ্ধের জেরে সরকার থেকে সরতে বাধ্য হয়েছিলেন চার্চিল। সেই তিনিই ১৯৪০-এ ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী হন। কিন্তু দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর আকস্মিক ভাবে ’৪৫ সালের ভোটে হেরে যান। ১৯৫১-য় ফের প্রধানমন্ত্রী এবং ’৫৫ সাল পর্যন্ত ব্রিটেন শাসন করার পরে শারীরিক অবস্থার অবনতির জন্য পদত্যাগ করেন। ৯১ বছর বয়সে মারা যান চার্চিল। মহাথির দ্বিতীয় ইনিংস শুরুই করছেন ৯২-এ।
১৯৯৩ সালে নিজেই অবসর নিয়েছিলেন মহাথির। কিন্তু ২০১৫ থেকে নাজিবের বিরুদ্ধে বড় মাপের দুর্নীতির অভিযোগ ঘনাতে শুরু করার পরেই ফের সরব হন মহাথির। নাজিবের বিরোধিতা করার জন্যেই তাঁর মঞ্চে পুনঃপ্রবেশ। কিন্তু বৃদ্ধ মহাথিরের নেতৃত্বে যে শেষ পর্যন্ত রাজ্যপাটই উল্টে যাবে, এতটা ভাবেননি কেউ। নাজিবের কপালে তাই ভাঁজ। ৩২০ কোটি ডলারের দুর্নীতি মামলায় নাম জড়িয়েছে তাঁর। যদিও মহাথির বলছেন, ‘‘আমি কোনও বদলা নেব না। তবে আইনের শাসন থাকবে। নাজিব যদি অপরাধ করে থাকেন, দাম চোকাতে হবে।’’