বাংলাদেশের নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে হাসেম ফুডসের দগ্ধ হয়ে যাওয়া কারখানায় নতুন কোনও দেহ উদ্ধার হয়নি। কিন্তু তার পরেও অন্তত ২০-২৫ জন শ্রমিক নিখোঁজ রয়েছেন বলে দাবি জানিয়েছেন তাঁদের পরিজনেরা। শুক্রবার গভীর রাতে ভয়াবহ আগুনে ফলের রস, চানাচুর ও চকলেট তৈরির কারখানাটি ভস্মীভূত হওয়ার সময়েও কয়েকশো শ্রমিক সেখানে রাতের শিফটে কাজ করছিলেন। ৫২ জনকে হত্যার একটি মামলা রুজু হওয়ার পরে কারখানার মালিক সজীব গ্রুপের এমডি আবুল হোসেন ও তাঁর ৭ সহযোগীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। শনিবার তাঁদের আদালতে তোলা হলে বিচারক ৮ অভিযুক্তকে ৪ দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন।
ঢাকার দু’টি সরকারি হাসপাতালে রাখা ৫২টি দেহ পুড়ে এমন আকার নিয়েছে, পুরুষ না মহিলা সেটাও নির্ণয় করা যাচ্ছে না। ফলে পরিচয় নির্ধারণের জন্য পরিজনদের ডিএনএ পরীক্ষার পথ নিয়েছে পুলিশ। এ দিন ৩৯ জন পরিজনের ডিএনএ নমুনা নেওয়া হয়েছে, যা দগ্ধ দেহগুলির ডিএনএ-র সঙ্গে মিলিয়ে দেখা হবে। তবে এর ফলে দেহ শনাক্ত করতে অনেক দেরি হবে। কিন্তু যে শ্রমিকেরা এখনও নিখোঁজ রয়েছেন, তাঁদের কী ভাবে পাওয়া যাবে, সেটা শনিবারেও স্পষ্ট হয়নি। নিখোঁজদের সন্ধানে পরিজনেরা মর্গে ভিড় করছেন। মৃতদের মতো, নিখোঁজরাও অধিকাংশ অপ্রাপ্তবয়স্ক।
শুক্রবার রাতে লাগা আগুনে বহুতল কারখানা ভবনটির চারতলাতেই শুধু মিলেছে ৪৯টি দগ্ধ দেহ। অভিযোগ এখানে কাজ শুরুর পরে সিঁড়িতে ওঠানামার দরজায় তালা দিয়ে দেওয়া হয়েছিল। ফলে আগুন দেখেও শ্রমিকেরা বেরোতে পারেননি। সেখানেই সবাই পুড়ে মারা যান। উদ্ধারকারী দল অভিযোগ করেছেন, কারখানাটিতে বিপজ্জনক ভাবে বিপুল ভোজ্যতেল মজুত করে রাখা ছিল। অগ্নি নির্বাপণের কোনও ব্যবস্থাও রাখা হয়নি। ফলে এক তলায় লাগা আগুন মারাত্মক আকার নেয়। বাড়িটিতে ওঠানামার সিঁড়িও খুবই সরু ছিল বলে জানিয়েছেন উদ্ধারকারীরা। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল জানিয়েছেন, সব অভিযোগের তদন্ত হবে। কর্তৃপক্ষের দোষ পাওয়া গেলে তাঁদের ছাড়া হবে না।