ইন্দোনেশিয়ায় মৃত বে়ড়ে ১৪১, তদন্ত শুরু ‘বুড়ো’ বিমানের

বসত এলাকায় বিমান ভেঙে পড়ার ঘটনায় ইন্দোনেশিয়ার মেদান শহরে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ১৪১। মঙ্গলবারের এই ঘটনায় আজ উচ্চ পর্যায়ের তদন্তের আশ্বাস দিয়েছেন ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট জোকো উইডোডো। সেনা সূত্রের খবর, দুর্ঘটনাগ্রস্ত বিমানটিকে শেষ বার মেরামতির জন্য পাঠানো হয়েছিল প্রায় পঞ্চাশ বছর আগে।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

মেদান শেষ আপডেট: ০১ জুলাই ২০১৫ ০২:১৬
Share:

ধ্বংসস্তূপ।

বসত এলাকায় বিমান ভেঙে পড়ার ঘটনায় ইন্দোনেশিয়ার মেদান শহরে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ১৪১। মঙ্গলবারের এই ঘটনায় আজ উচ্চ পর্যায়ের তদন্তের আশ্বাস দিয়েছেন ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট জোকো উইডোডো। সেনা সূত্রের খবর, দুর্ঘটনাগ্রস্ত বিমানটিকে শেষ বার মেরামতির জন্য পাঠানো হয়েছিল প্রায় পঞ্চাশ বছর আগে। দেশের একাংশ তাই দুর্ঘটনার জন্য সেনা-বিমানের যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণের অভাবকেই দুষছেন। উইডোডো অবশ্য জানিয়েছেন, সার্বিক নিরাপত্তার বিষয়টিও এ বার খতিয়ে দেখা হবে।

Advertisement

উড়ান নিরাপত্তা বিষয় স্থানীয় এক সংগঠনের সমীক্ষা বলছে, গত দশ বছরে ইন্দোনেশিয়া পুলিশ ও সেনাবাহিনীর অন্তত ১০টি বিমান বড়সড় দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে। যার মধ্যে রয়েছে বায়ুসেনার চারটি সি-১৩০ বিমানও। পরিষেবার হাল ফেরাতেই গত বছর সামরিক খাতে দ্বিগুণ বরাদ্দের আশ্বাস দিয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট। কিন্তু তাতে কাজের কাজ যে কিছুই হয়নি, চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল মঙ্গলবারের ঘটনা।

উড়ান শুরুর পর পরই মঙ্গলবার মেদানের একটি হোটেল এবং দুটি নির্মীয়মাণ বাড়ির উপর হঠাৎই ভেঙে পড়ে বায়ুসেনার বিমান ‘হারকিউলিস সি-১৩০বি’। বিমানটিতে ১১৩ জন যাত্রী এবং ১২ জন বিমানকর্মী ছিলেন বলে জানিয়েছে বায়ুসেনা। আশঙ্কা, দুর্ঘটনায় প্রাণ গিয়েছে সবারই। বসত এলাকায় ভেঙে পড়ার কারণে মেদান শহরে মৃত্যু হয়েছে আরও অন্তত ২০ জনের। তবে ধ্বংস্তূপের নীচ থেকে সব দেহ উদ্ধার করা যায়নি। মৃতের তালিকায় ৮ শিশুও রয়েছে বলে আশঙ্কা। দুর্ঘটনাস্থল থেকে আজ স্থানীয় একটি হাসপাতালে ১৪১টি মৃতদেহ আনা হয়। মৃত বিমানকর্মীদের নামও প্রকাশ করেছে সেনা। তবে বিমানের যাত্রী-তালিকা নিয়ে অকারণে ধোঁয়াশা জিইয়ে রাখা হয়েছে বলে অভিযোগ।

Advertisement


পরিজনদের কান্না।

বায়ুসেনার দাবি, যাত্রীদের বেশির ভাগই ছিলেন সেনা ও তাঁদের পরিবারবর্গ। বিতর্ক তৈরি হয়েছে এ নিয়েও। সেনা ও প্রশাসনের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়ে এক মৃতের আত্মীয় বলেন, ‘‘মোটা অর্থের বিনিময়ে টিকিট বিক্রি করে ওরা। আমার নিজের দাদা ছিল কালকের বিমানে। ৮ লাখ রুপিয়া (ভারতীয় মুদ্রায় ৩৪৩ টাকা) খরচ করে টিকিট কেটেছিল।’’ এমনটা কিন্তু হওয়ার কথা নয়। অথচ স্থানীয়দের দাবি, এটাই নাকি রেওয়াজ। জাকার্তা থেকে অনেকেই টিকিট কেটে সেনা-বিমানে যাতায়াত করেন। বায়ুসেনার প্রধান অগাস সুপ্রিয়াৎনা অবশ্য এই অভিযোগ খারিজ করে দিয়ে বলেন, ‘‘এই ধরনের বিমানে এ ভাবে বাইরে থেকে লোক নেওয়া নিয়মবিরুদ্ধ। তদন্ত শুরু হয়েছে। তাই এই দুর্নীতিতে সেনার কেউ জড়িয়ে থাকলে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

দুর্ঘটনার কারণ খুঁজতে আজই তদন্ত শুরু করেছে প্রশাসন। এরই মধ্যে বায়ুসেনা কার্যত স্বীকার করেই নিয়েছে যে, যান্ত্রিক ত্রুটির কারণেই এই দুর্ঘটনা। নিকটবর্তী বিমানঘাঁটি থেকে উড়ান শুরুর কিছু পরেই আগুন ধরে যায় বিমানটিতে। হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে বসত এলাকায়। অগাস জানান, ইঞ্জিন বিগড়েছে বুঝতে পেরেই বিমান ঘোরানোর নির্দেশ দেওয়া হয় চালককে। ডান দিক ঘুরে বিমানটি ফিরতে শুরু করে। আর তখনই হঠাৎ বিমানের ইঞ্জিনে আগুন ধরে যায় বলে জানান তিনি।

ছবি: এএফপি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement