প্রতীকী ছবি।
একটা সময় মালদহে নিয়মিত ‘বুলাদির’ দেখা মিলত। ১০৯৭ টোল-ফ্রি নম্বরে ফোন করলে মিলত এইচআইভি ও এডসের চিকিৎসা সংক্রান্ত পরামর্শ। কিন্তু কয়েক বছর ধরে মালদহ জেলায় বুলাদির দেখা তেমন মেলে না! ওই টোল-ফ্রি নম্বরও আর বাজে না। স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন ওঠে, এইচআইভি ও এডস নিয়ে সচেতনতা কি এতটাই জোরদার যে এই জেলায় বুলাদির প্রয়োজনীয়তা হারিয়ে গিয়েছে?
যদিও স্বাস্থ্য দফতরের পরিসংখ্যান বলছে, মালদহ জেলায় প্রতি মাসে গড়ে ৯-১০ জন এডস আক্রান্ত রোগী চিহ্নিত হচ্ছেন। চিকিৎসাও হচ্ছে মালদহ মেডিক্যালের ‘এআরটি’ (অ্যান্টি রেট্রোভাইরাল থেরাপি) সেন্টারে। সেখানে উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুর এবং মুর্শিদাবাদ জেলার একাংশের এইচআইভি পজিটিভ এবং এডস আক্রান্ত রোগীরা পরিষেবা নিতে আসছেন। এডস এখনও পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে না আসায়, তা নিয়ে সচেতনতা-প্রচার শুধু বিশ্ব এডস দিবসেই সীমাবদ্ধ না রেখে সারা বছরই করার দাবি উঠেছে ওয়াকিবহল মহলে।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, মালদহ জেলা থেকে হাজার হাজার শ্রমিক ভিন্-রাজ্যে কাজে যাওয়ায়, এই জেলায় বরাবরই এইচআইভি পজ়িটিভ এবং এডস আক্রান্তের সংখ্যা কিছুটা হলেও বেশি। এখন মেডিক্যাল থেকে শুরু করে জেলার বিভিন্ন গ্রামীণ হাসপাতাল ও প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলিতে চিকিৎসা করাতে আসা কাউকে সন্দেহজনক মনে হলেই এডস চিহ্নিতকরণে রক্ত পরীক্ষা করা হচ্ছে। পাশাপাশি, গর্ভবতী মহিলাদের রক্ত পরীক্ষা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। রোগীদের এআরটি সেন্টারে আরও কিছু রক্ত পরীক্ষা করিয়ে চিকিৎসা শুরু করা হচ্ছে। প্রতিদিন একটি করে ‘টিএলডি’ ওষুধ খাওয়ানো হচ্ছে। এক মাসের ওষুধ এক এক বারে দেওয়া হচ্ছে। ওষুধ কোনও কারণেই যাতে বাদ না পড়ে সে জন্য স্বাস্থ্যকর্মীরা নজর রাখছেন। কারণ, ওষুধ বন্ধ হলেই শারীরিক পরিস্থিতি অবনতি হবে।
সূত্রের খবর, এখন এই জেলায় প্রায় দেড় হাজার এইচআইভি পজ়িটিভ এবং এডস রোগী আছেন এবং তাঁরা নিয়মিত বিনামূল্যে ওষুধ পাচ্ছেন। তবে পাশের জেলাগুলির রোগী মিলিয়ে মালদহের এআরটি সেন্টার থেকে প্রায় ২,৪০০ জন পরিষেবা নিচ্ছেন। অথচ একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের প্রতিনিধি অনিলকুমার সাহা বলেন, ‘‘আগে এডস প্রতিরোধে যে ধরনের প্রচার ছিল এখন তার সিকি ভাগও দেখা যায় না।’’
যদিও এডস নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব থাকা জেলা আধিকারিক রানা দাম বলেন, ‘‘এডস নিয়ে মানুষের মধ্যে সচেতনতা অনেক বেড়েছে। তবুও বিশ্ব এডস দিবসকে সামনে রেখে বৃহস্পতিবার (আজ) থেকে আগামী ১৫ দিন জেলায় দু’টি ট্যাবলোর পাশাপাশি, কবিগানের মাধ্যমে প্রচার করছি। বৃহস্পতিবার দুপুরে মেডিক্যাল চত্বরে একটি আলোচনাসভাও হবে। রোগীদের চিহ্নিতকরণ, চিকিৎসা ও ওষুধ নিশ্চিত করাই মূল লক্ষ্য।’’