রোহীত দাশগুপ্ত।
ইংল্যান্ড, ওয়েলস এবং স্কটল্যান্ডের স্থানীয় কাউন্সিল নির্বাচনে সব থেকে বেশি আসন জিতে নিয়েছে লেবার পার্টি। এই দলের জয়ী সদস্যদের তালিকায় রয়েছেন এক বঙ্গসন্তানও। এই নিয়ে দ্বিতীয় বার জয়ের স্বাদ পেলেন রোহীত দাশগুপ্ত। লন্ডন বরো অব নিউহ্যামের ক্যানিং টাউন সাউথ ওয়ার্ডের কাউন্সিলর হিসাবে ফের জয়লাভ করেছেন তিনি। এর আগে ২০১৮ সালে প্রথম বার জয়ী হয়েছিলেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের এই প্রাক্তনী।
প্রথম বার নির্বাচনে জয়ের পরে নানাবিধ চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করতে হয়েছে তাঁকে। গ্লাসগো বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক রোহীতের কথায়, ‘‘ক্যানিং টাউনের বাসিন্দাদের উপরে কোভিডের ব্যাপক প্রভাব পড়েছিল। তার উপরে এই অঞ্চলটিতে বিএএমই (কৃষ্ণাঙ্গ, এশিয়ান, সংখ্যালঘু) সম্প্রদায়ের মানুষের বাস। করোনাকালে এক দিকে চাকরির অনিশ্চয়তা, অন্য দিকে সংক্রমিত অসহায় মানুষ। তাঁদের পাশে থাকার প্রয়োজন ছিল। স্বেচ্ছাসেবকদের সঙ্গে নিয়ে খাবার পৌঁছে দেওয়া, সর্বক্ষণ তাঁদের খোঁজখবর রাখা এবং যাঁরা সঙ্কটে রয়েছেন, তাঁদের উপযুক্ত পরিষেবার কাজ চালানোর জন্য কাউন্সিলের তরফে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এর পাশাপাশি ‘টোরি ক্ল্যাডিং স্ক্যান্ডালে’র জেরে ক্যানিং টাউনের যে সমস্ত লিজ়হোল্ডারদের মধ্যে প্রভাব পড়েছিল, তাঁদের পাশে থাকার জন্য স্থানীয় এমপি-র সঙ্গে নিবিড় সংযোগ রাখা হয়েছে।’’
এ বারের নির্বাচন কতটা কঠিন ছিল? আনন্দবাজারের প্রশ্নের উত্তরে রোহীত জানিয়েছেন, এ বারের প্রচারে বিভাজনের চেষ্টা করা হয়েছিল। ভুয়ো অ্যাকাউন্ট থেকে মহিলা এবং এলজিবিটি-দের নিশানা করা হয়েছিল। এর পাশাপাশি রোহীত বলেন, ‘‘আমাদের বরোয় নানা ধর্ম, বর্ণের মানুষ থাকেন। বেনামে ধর্মীয় বিভাজনের চেষ্টাও করা হয়েছিল। বহু প্রার্থীর ক্ষেত্রেই এমন প্রচারে ভয়ঙ্কর প্রভাব পড়েছিল। অন্য দিকে রাজনৈতিক বিশ্বাসযোগ্যতাও তলানিতে এসে ঠেকেছিল। গোটা দেশের মানুষ বরিস জনসনকে মিথ্যা বলতে দেখেছেন। মানুষকে ভোটদানে আগ্রহী করে তোলাই খুব কঠিন ছিল এ বার।’’
গত বার জয়ের বছর খানেক পরে রোহীতকে নিউহ্যামের সোশ্যাল ইন্টিগ্রেশন অ্যান্ড ইক্যুয়ালিটিজ়-এর কমিশনারের দায়িত্ব দিয়েছিলেন মেয়র। বিভাজনমূলক প্রচারের মোকাবিলা করে জয় ছিনিয়ে নেওয়ার পরে রোহীত জানিয়েছেন, সামাজিক ভাবে সকলকে ঐক্যবদ্ধ রাখার প্রয়াস এ বারও জারি থাকবে। তাঁর বরোয় প্রগতিশীল রাজনীতির ধারা অব্যাহত রাখতেও তৎপর এই কাউন্সিলর।
চলতি সময়ে ব্রিটেনে মূল্যবৃদ্ধির জেরে বিপাকে মানুষ। জ্বালানির দামও বেড়েছে ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ। এই পরিস্থিতিতে কাউন্সিলের বাসিন্দাদের পাশে থাকতে চান রোহীত। তাঁর কথায়, ‘‘দ্রব্যমূল্য ক্রমশ বেড়ে চলায় সব চেয়ে সঙ্কটে প্রবীণ মানুষেরা।’’ তাঁদের খাবারের জোগানে যাতে কোনও সমস্যা না হয়, সেই দিকেও নজর রাখতে চান এই বঙ্গসন্তান।