এসএসসি

১৪৪ ধারা ভেঙে মিছিল, স্মারকলিপি পার্থকে

স্কুলশিক্ষকের পদে নিয়োগের ব্যাপারে কোনও রকম আশ্বাস না-দিলেও অনশন তুলে নেওয়ার জন্য আন্দোলনরত প্রার্থীদের আবেদন জানিয়েছিলেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। অনশন না-তুলেই শুক্রবার তাঁর কাছে স্মারকলিপি পেশ করলেন আন্দোলনকারীরা। এবং বিকাশ ভবনে শিক্ষামন্ত্রীর দফতরে সেই স্মারকলিপি দিতে গিয়ে ফের ভাঙা হল ১৪৪ ধারার নিষেধাজ্ঞা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০৩:০৬
Share:

বিকাশ ভবনের সামনে বিক্ষোভ রুখছে পুলিশ। শুক্রবার।—নিজস্ব চিত্র।

স্কুলশিক্ষকের পদে নিয়োগের ব্যাপারে কোনও রকম আশ্বাস না-দিলেও অনশন তুলে নেওয়ার জন্য আন্দোলনরত প্রার্থীদের আবেদন জানিয়েছিলেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। অনশন না-তুলেই শুক্রবার তাঁর কাছে স্মারকলিপি পেশ করলেন আন্দোলনকারীরা। এবং বিকাশ ভবনে শিক্ষামন্ত্রীর দফতরে সেই স্মারকলিপি দিতে গিয়ে ফের ভাঙা হল ১৪৪ ধারার নিষেধাজ্ঞা।

Advertisement

২৭ জানুয়ারি ১৪৪ ধারা ভেঙেই সল্টলেকে স্কুল সার্ভিস কমিশন বা এসএসসি-র দফতরে ঢুকে কমিশনের চেয়ানম্যানের অফিসের সামনে অনশনে বসেন নিয়োগ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ এক দল প্রার্থী। সেই থেকে ওই দফতরের ভিতরে-বাইরে আন্দোলন অব্যাহত আছে। অবিলম্বে চাকরির দাবিতে শিক্ষামন্ত্রীকে স্মারকলিপি দেওয়ার জন্য এ দিন দুপুরে সল্টলেকের এসএসসি ভবন থেকে মিছিল করে বিকাশ ভবন পর্যন্ত যান প্রার্থীরা। তাঁদের সঙ্গে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘হোক কলরব’-এর এক দল আন্দোলনকারীও ছিলেন। ১৪৪ ধারা ভেঙে, পুলিশের বাধা টপকেই মিছিল পৌঁছে যায় বিকাশ ভবনের সামনে। পরে অবশ্য পুলিশ বিকাশ ভবনের দরজা আটকে দেয়।

আন্দোলনকারীদের চার সদস্যের প্রতিনিধিদল শিক্ষামন্ত্রীর দফতরে গিয়ে স্মারকলিপি দেয়। পার্থবাবু অবশ্য তখন বিকাশ ভবনে ছিলেন না। স্মারকলিপি দিয়ে ফেরার সময় করুণাময়ীর মোড়ে মিনিট দশেক মানববন্ধন করে পথ অবরোধ করেন আন্দোলনকারীরা। তার পরে এসএসসি ভবনে ফিরে গিয়ে অন্য আন্দোলনকারীদের সঙ্গে যোগ দেন। প্রেসিডেন্সি ও যাদবপুরের বেশ কিছু ছাত্রছাত্রী ইতিমধ্যে অনশনে বসা প্রার্থীদের সহমর্মিতা জানিয়েছেন।

Advertisement

চূড়ান্ত মেধা-তালিকায় নাম থাকা সত্ত্বেও তাঁরা চাকরির সুযোগ থেকে বঞ্চিত বলে অভিযোগ জানিয়ে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করছেন ওই প্রার্থীরা। এসএসসি-র দফতরে ঢুকে অনশনে বসার আগে কলেজ স্কোয়ার ও ধর্মতলায় অবস্থান এবং মিছিল হয়েছে। বিভিন্ন রাজনৈতিক শিবিরের নেতানেত্রীরা নানা সময়ে ওই প্রার্থীদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, মেধা-তালিকায় তাঁদের পরে ঠাঁই পাওয়া অনেকে চাকরি পেয়ে গেলেও তাঁরা নিয়োগপত্র পাচ্ছেন না। কমিশন নিয়ম ভেঙে তাঁদের বঞ্চিত করছে।

আর কমিশন-কর্তৃপক্ষের দাবি, নিয়মবিধি মেনেই সব কাজ হয়েছে। কাউকে বঞ্চিত করা হয়নি। অনশনে বসা প্রার্থীদের প্রতি সহমর্মিতা প্রকাশ করেও মন্ত্রী পার্থবাবু তথা রাজ্য সরকার বারবার জানিয়ে দিয়েছেন, নিয়মের বাইরে গিয়ে চাকরির দাবি মানা সম্ভব নয়।

এর মধ্যেই অনশনরত প্রার্থীদের ব্যাপারে রাজ্য সরকারের সঙ্গে তিনি কথা বলতে পারেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠী। তাঁর সঙ্গে সাক্ষাতের সময় চেয়ে দু’দফায় রাজভবনে দরবার করেছেন প্রার্থীরা। আন্দোলনকারীদের দাবি, রাজ্যপাল শীঘ্রই তাঁদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে পারেন বলে রাজভবনের তরফে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। তবে শুক্রবার পর্যন্ত ত্রিপাঠীর সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ হয়নি প্রার্থীদের। তাঁদের দাবির ব্যাপারে হস্তক্ষেপ চেয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছেও চিঠি দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। প্রার্থীদের আশা, যাদবপুরের আন্দোলনকারীদের মতো তাঁরাও জীবন ও জীবিকার প্রশ্নে মুখ্যমন্ত্রীকে পাশে পাবেন। ইতিমধ্যে অনশনে বসা প্রার্থীদের স্বাস্থ্য নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন শিক্ষামন্ত্রী। কিন্তু এখনও পর্যন্ত সুরাহা না-হওয়ায় এ দিন মিছিল ও স্মারকলিপি পেশের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

সরকারের তরফে এ দিন অবশ্য কোনও রকম উচ্চবাচ্য করা হয়নি। প্রার্থীরা যে বারবার ১৪৪ ধারা ভাঙছেন, সেই ব্যাপারেও পুলিশ-প্রশাসন কোনও ব্যবস্থা নেয়নি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement