সমর্থন চেয়ে গুরুঙ্গকে ফোন ভাইচুংয়ের

শুক্রবার দার্জিলিঙে পা রেখেই গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার সভাপতি বিমল গুরুঙ্গের সমর্থন চেয়ে দলে সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন তৃণমূল প্রার্থী ভাইচুং ভুটিয়া। তার পরেও ফের সরাসরি গুরুঙ্গকে ফোন করে মোর্চার সমর্থন চাইলেন তিনি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

দার্জিলিং শেষ আপডেট: ১০ মার্চ ২০১৪ ০৪:০৭
Share:

শুক্রবার দার্জিলিঙে পা রেখেই গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার সভাপতি বিমল গুরুঙ্গের সমর্থন চেয়ে দলে সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন তৃণমূল প্রার্থী ভাইচুং ভুটিয়া। তার পরেও ফের সরাসরি গুরুঙ্গকে ফোন করে মোর্চার সমর্থন চাইলেন তিনি। যার পিছনে দলীয় নেতৃত্বের প্রচ্ছন্ন কৌশলগত সমর্থন রয়েছে বলে তৃণমূলের একাংশের মত। যদিও ভাইচুংয়ের আর্জি খারিজ করে গুরুঙ্গ জানিয়ে দিয়েছেন, তৃণমূলকে সমর্থন করা তাঁদের পক্ষে সম্ভব নয়।

Advertisement

ভাইচুংকে প্রার্থী করা নিয়ে ইতিমধ্যেই তৃণমূল ও মোর্চার মধ্যে সম্পর্কের অবনতি ঘটেছে। ক্ষুব্ধ মোর্চার অভিযোগ, তাঁদের সঙ্গে আলোচনা না করেই তৃণমূল পাহাড়ের প্রার্থীর নাম ঘোষণা করে দিয়েছে। তৃণমূল তাঁদের সঙ্গে ‘বিশ্বাসঘাতকতা’ করেছে বলেও দাবি করেছে মোর্চা। তৃণমূল অবশ্য সেই অভিযোগ মানতে চায়নি। বরং তাদের দাবি, খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মুকুল রায় বারবার প্রার্থীর নাম নিয়ে আলোচনার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু তাতে সাড়া দেননি মোর্চা নেতারাই। এই পরিস্থিতিতে ভোটের কৌশল ঠিক করতে গুরুঙ্গ সহ মোর্চার শীর্ষ নেতারা দিল্লি গিয়েছেন। সেখানেই গুরুঙ্গের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করেন ভাইচুং।

মোর্চা সূত্রে জানানো হয়েছে, শনিবার রাত দশটা নাগাদ গুরুঙ্গকে ফোন করেছিলেন ভারতীয় ফুটবল দলের প্রাক্তন অধিনায়ক। দিল্লি থেকে মোর্চার সহ সম্পাদক বিনয় তামাঙ্গ রবিবার বলেন, “মোর্চা সভাপতি ও তৃণমূল প্রার্থীর ব্যক্তিগত সম্পর্ক ভাল। দু’জনের ৭ থেকে ৮ মিনিট কথা হয়েছে। তৃণমূল প্রার্থী লোকসভা ভোটে মোর্চার সমর্থন চেয়েছেন।” তবে মোর্চার পক্ষে তাঁকে সমর্থন করা যে সম্ভব নয়, সেটা গুরুঙ্গ ভাইচুংকে স্পষ্ট করে বুঝিয়ে দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন তামাঙ্গ। তাঁর কথায়, “লোকসভা নিয়ে এখনও চূড়ান্ত কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি বলে মোর্চা সভাপতি ভাইচুংকে জানিয়েছেন। কিন্তু তৃণমূলের পাহাড় কমিটি বিশৃঙ্খল। তারা একলাই লড়ার কথা জানিয়েছেন। তাই তাদের সমর্থনের প্রসঙ্গ উঠতে পারে না।”

Advertisement

গত শুক্রবার প্রার্থী হওয়ার পরে প্রথমবার দার্জিলিং গিয়ে সাংবাদিক বৈঠকে গুরুঙ্গের সমর্থন চাওয়ায় দলেই সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন ভাইচুং। তৃণমূলের দার্জিলিং জেলা কমিটির সহ সভাপতি রাজেন তামাঙ্গ প্রকাশ্যেই ভাইচুংয়ের কথার বিরোধিতা করেন। পরিস্থিতি সামাল দেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী গৌতম দেব। তার পরে এ দিন তিনি কেন ফোন করলেন গুরুঙ্গকে? ভাইচুং বলেন, “আমাদের দলের (তৃণমূলের) সঙ্গে বিভিন্ন স্তরে মোর্চার যে আলোচনা হয়েছে, তা সকলেরই জানা। উন্নয়নের প্রশ্নে সকলকেই পাশে পেতে চাই।” সেই সঙ্গেই ভাইচুং বলেন, “যে হেতু তৃণমূল এ বার অনেক বেশি সংখ্যক আসন জিতবে, তাই লোকসভায় তৃণমূলের গুরুত্বও বাড়বে। পাহাড়ের উন্নয়নের দাবি দিল্লি একবাক্যে মেনে নেবে। মোর্চা বা অন্য রাজনৈতিক দলের সমর্থনের সিদ্ধান্ত, তাদের নিজস্ব। তবে কেউ সমর্থন না করলেও আমরা জিততে পারব।” ফোন করেছেন বলে স্বীকার করলেও গুরুঙ্গের সঙ্গে তাঁর কী কথা হয়েছে, তা বলতে চাননি ভাইচুং।

উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী গৌতমবাবুর বক্তব্য, “এক জন প্রার্থী কাউকে ফোন করতেই পারেন। এ বিষয়ে আমি কী বলব?” তবে তৃণমূলের পাহাড় কমিটির সহ সভাপতি রাজেনবাবুর প্রতিক্রিয়া, “প্রথমে খোঁজ নিয়ে দেখতে হবে ওঁদের মধ্যে ঠিক কী কথাবার্তা হয়েছে, তার পরেই কোনও মন্তব্য করব। তবে মোর্চা সম্পর্কে আমাদের দলের অবস্থান যথেষ্ট স্পষ্ট।” কিন্তু সেই সঙ্গেই তাঁর বক্তব্য, “তবে মোর্চা সভাপতি যদি নিজে সমর্থন করতে চান, তবে আমাদের কিছু বলার নেই।”

দিল্লি থেকে মোর্চার আর এক সহ সম্পাদক রাজু প্রধান বলেন, “এখনও চূড়ান্ত কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি।” যদিও বিজেপি নেতা এস এস অহলুওয়ালিয়া এ দিন মোর্চার প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক করেছেন বলে জানা গিয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement