সভার পথে বিজেপি কর্মীদের উপরে হামলা

কোথাও দলীয় বিজেপি নেতা-কর্মীকে মারধর, কোথাও আবার বিজেপি-র সভার প্যান্ডেলের জন্য বাঁশ, কাপড় ভাড়া দেওয়ায় ডেকোরেটরকে মাররবিবার এমনই অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুর থানার মুনিনগর গ্রামের কাছে মারধর করা হয় তিন বিজেপি কর্মীকে। দলের বিষ্ণুপুর মহকুমা সাংগঠনিক সভাপতি স্বপন ঘোষের দাবি, “উলিয়াড়া অঞ্চলের গুমুট গ্রামে এ দিন বিকেলে আমাদের সাংগঠনিক সভা ছিল।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২৩ জুন ২০১৪ ০৩:৫৫
Share:

বিষ্ণুপুরে হামলায় আহত বিজেপি কর্মীরা। ছবি: শুভ্র মিত্র

কোথাও দলীয় বিজেপি নেতা-কর্মীকে মারধর, কোথাও আবার বিজেপি-র সভার প্যান্ডেলের জন্য বাঁশ, কাপড় ভাড়া দেওয়ায় ডেকোরেটরকে মাররবিবার এমনই অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে।

Advertisement

বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুর থানার মুনিনগর গ্রামের কাছে মারধর করা হয় তিন বিজেপি কর্মীকে। দলের বিষ্ণুপুর মহকুমা সাংগঠনিক সভাপতি স্বপন ঘোষের দাবি, “উলিয়াড়া অঞ্চলের গুমুট গ্রামে এ দিন বিকেলে আমাদের সাংগঠনিক সভা ছিল। সভায় ঢোকার দু’টি পথ আগলে তৃণমূলের লোকজন মারধর করে আমাদের তিন কর্মীকে। এঁদের মধ্যে রয়েছেন দলের মহকুমা কমিটির সাংগঠনিক সহ-সভাপতি, আইনজীবী অশোক ডাকুয়া এবং দলের আইনজীবী সেলের দুই সদস্য উত্তম দাঁ ও শঙ্খজিৎ রায়। মাথায় গুরুতর আঘাত পাওয়ায় প্রথম দু’জনকে বিষ্ণুপুর হাসপাতালে ভর্তি করাতে হয়েছে।”

এ দিন হাসপাতালে শুয়ে অশোকবাবু বলেন, “একটা মোটরবাইকে আমি ও শঙ্খ ছিলাম। বেলাড়া গ্রাম থেকে তাড়া করে মুনিনগর গ্রামের কাছে আমাদের ঘিরে ধরে মারধর শুরু করে তৃণমূল কর্মীরা। টাঙ্গি, লাঠি ও পাথর দিয়ে মাথায় মারা হয়। আমার মাথায় ছ’টা সেলাই পড়েছে।” আহত উত্তম দাঁ বলেন, “আমি উল্টো পথে হিংজুড়ি গ্রাম দিয়ে গুমুটে ঢুকছিলাম। সভাস্থলে পৌঁছনোর আগেই আমার বাইকের উপর লাঠিসোটা নিয়ে চড়াও হয় স্থানীয় তৃণমূল কর্মীরা। রাস্তার উপর বোমাও ফাটায় ওরা।” সভায় যাওয়ার পথে বিজেপি-র জেলা নেতা অমরনাথ শাখা ও শিবদাস ঘোষ আহতদের হাসপাতালে নিয়ে যান। তাঁদের দুই কর্মীর এখনও খোঁজ মিলছে না বলেও দাবি বিজেপি নেতাদের। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ। বিষ্ণুপুর থানায় তৃণমূলের নামে অভিযোগ হয়েছে। যদিও বাঁকুড়া জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান তথা রাজ্যের বস্ত্রমন্ত্রী শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের দাবি, “ভিত্তিহীন, মিথ্যে অভিযোগ, আমাদের দলের কেউ এই ঘটনায় যুক্ত নয়।”

Advertisement

রবিবার সকালেই হুগলির দাদপুর থানার গোস্বামী-মালিপাড়ার নিমাই কিস্কু নামে এক বিজেপি নেতাকে তুলে নিয়ে গিয়ে বেধড়ক মারধরের অভিযোগ উঠল শাসক দলের কর্মী-সমর্থকদের বিরুদ্ধে। হাসপাতালে ভর্তি নিমাইবাবুর দাবি, দিন কয়েক আগে বাড়িতে দলীয় কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে বৈঠক করার ‘অপরাধে’ তাঁর উপরে হামলা হয়েছে। তৃণমূল অভিযোগ উড়িয়ে ওই ঘটনা বিজেপি-র গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জের বলে দাবি করেছে।

বীরভূমের পাড়ুই থানার হাট ইকড়া গ্রামে আবার বিজেপি-র সম্মেলনের প্যান্ডেল করার ‘অপরাধে’ এক ডেকোরেটর ব্যবসায়ীকে মারধরের অভিযোগ উঠল তৃণমূলের স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্যের বিরুদ্ধে। তৃণমূলের বিরুদ্ধে ওই সম্মেলন মঞ্চ ভেঙে দেওয়ার অভিযোগও উঠেছে। শনিবার রাতের ওই ঘটনার জেরে রবিবারের নির্ধারিত সম্মেলন বাতিল করেছে বিজেপি। শনিবার রাতেই সুব্রত দাস নামে আক্রান্ত ব্যবসায়ী স্থানীয় অবিনাশপুর পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্য অজয় দাসের বিরুদ্ধে হামলার লিখিত অভিযোগ করেন। সুব্রতবাবুর অভিযোগ, “কেন বিজেপিকে সাহায্য করছি, এই প্রশ্ন তুলে অজয় দাস দলবল নিয়ে বাড়িতে ঢুকে হামলা চালায়। মারধর করে।” এলাকায় তাঁদের দলের সংগঠন বাড়তে দেখে আতঙ্কেই তৃণমূল এমন কাণ্ড ঘটিয়েছে বলে দাবি বিজেপি-র জেলা সভাপতি দুধকুমার মণ্ডল। অভিযুক্তের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। তবে, তৃণমূল নেতৃত্ব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

তিনটি ঘটনাতেই পুলিশ এখনও কাউকে গ্রেফতার করেনি। রবিবার রাতে পশ্চিম মেদিনীপুরের দাঁতন থানার বড়ঙ্গি গ্রামে তৃণমূল-বিজেপি সংঘর্ষ বাধে। তাতে দু’পক্ষের ছ’জন আহত হন। তৃণমূল বিজেপি-র বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ করেছে। বিজেপি নেতাদের দাবি, পুলিশ তাঁদের অভিযোগ নেয়নি। উল্টে আক্রান্ত দলীয় কর্মী-সমর্থকদের মিথ্যা মামলায় জড়িয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement