সোনালি-কাণ্ডের তদন্ত রিপোর্ট জমা দিতে নির্দেশ

গত বুধবার রাতে গোলাবাড়ি স্কুল রোডে একটি আবাসনে লিফট্ নিয়ে দু’টি পরিবারে গোলমাল হয়। অভিযোগ, ওই সময় তিনতলার বাসিন্দা বেদপ্রকাশ তিওয়ারি তাঁর আত্মীয়স্বজন ও লোকজন নিয়ে এসে চারতলার বাসিন্দা চিকিৎসক নগেন্দ্র রাই ও তাঁর ছেলে নীতেশ রাইকে মারধর করেন এবং তার পর বিধানসভার ডেপুটি স্পিকার তথা তৃণমূল বিধায়ক সোনালি গুহকে ডেকে আনেন। সম্পর্কে ‘রাখিভাইয়ের’ ডাকে রাত দেড়টা নাগাদ পুলিশ ও লোকজন নিয়ে লাল বাতি লাগানো গাড়িতে এসে পৌঁছন সোনালি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৬ ডিসেম্বর ২০১৪ ০৩:৩৮
Share:

সোনালি গুহ কাণ্ডের তদন্ত করতে পুলিশকে অবশেষে নির্দেশ দিল আদালত। গোলাবাড়ি স্কুল রোডের আবাসনে গত বুধবার রাতের ঘটনা নিয়ে তদন্তের অনুমতি চেয়ে শুক্রবার হাওড়ার মুখ্য বিচারবিভাগীয় আদালতে আবেদন করে হাওড়া সিটি পুলিশ। সোমবার আদালত পুলিশের আবেদন মঞ্জুর করেছে। পাশাপাশি, ওই ঘটনার তদন্ত করে আগামী ৩০ ডিসেম্বরের মধ্যে আদালতে রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে।

Advertisement

গত বুধবার রাতে গোলাবাড়ি স্কুল রোডে একটি আবাসনে লিফট্ নিয়ে দু’টি পরিবারে গোলমাল হয়। অভিযোগ, ওই সময় তিনতলার বাসিন্দা বেদপ্রকাশ তিওয়ারি তাঁর আত্মীয়স্বজন ও লোকজন নিয়ে এসে চারতলার বাসিন্দা চিকিৎসক নগেন্দ্র রাই ও তাঁর ছেলে নীতেশ রাইকে মারধর করেন এবং তার পর বিধানসভার ডেপুটি স্পিকার তথা তৃণমূল বিধায়ক সোনালি গুহকে ডেকে আনেন। সম্পর্কে ‘রাখিভাইয়ের’ ডাকে রাত দেড়টা নাগাদ পুলিশ ও লোকজন নিয়ে লাল বাতি লাগানো গাড়িতে এসে পৌঁছন সোনালি। অভিযোগ, এর পরেই তিনি আবাসনের তিনতলার বেদপ্রকাশের পক্ষ নিয়ে ওই চিকিৎসককে রীতিমতো হুমকি দেন। বলেন, “আই অ্যাম দ্য ম্যান অব সিএম। আই অ্যাম দ্য গভর্নমেন্ট।” (আমি মুখ্যমন্ত্রীর লোক। আমিই সরকার)। অভিযোগ, তিনি চিকিৎসকের ফ্ল্যাটে লাগানো সিসিটিভি ক্যামেরা খুলে নেওয়ার হুমকি দেন এবং চিকিৎসকের ফ্ল্যাটে তালা ঝুলিয়ে দেবেন বলে শাসান। বেদপ্রকাশ দাবি করেন, সোনালির তিনি ‘রাখিভাই’। তাই বিপদ শুনে ভাইয়ের কাছে দিদি এসেছিলেন।

এই ঘটনার পরের দিন পুলিশের কাছে ঘটনাটিকে এফআইআর হিসেবে নথিভুক্ত করার জন্য লিখিত অভিযোগ করেন নগেন্দ্রবাবু। কিন্তু পুলিশ জানায়, অভিযোগে এমন কিছু নেই যা আদালতগ্রাহ্য (কগনিজিব্ল)। তাই আদালত নির্দেশ দিলেই তদন্ত শুরু হবে ও তার রিপোর্ট পুলিশকে আদালতে জমা দিতে হবে। রিপোর্ট পেয়ে আদালত যদি ফের নির্দেশ দেয় তা হলে বিষয়টি এফআইআর করে নির্দিষ্ট ধারায় মামলা করতে তখনই পুলিশ সোনালি-সহ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারবে।

Advertisement

এর মধ্যে ঘটনার পর কয়েকদিন পেরিয়ে গেলেও পুলিশ এফআইআর দায়ের করে তদন্ত শুরু না করায় আতঙ্কিত পরিবারটির কর্তা নগেন্দ্রবাবু মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি লিখে নিরাপত্তার আশ্বাস চান। পাশাপাশি, রাজ্যের স্বরাষ্ট্র সচিবকে চিঠি লিখে অভিযোগ করেন, সোনালি তাঁদের সিসি ক্যামেরা খুলে ফেলে দেবেন বলে শাসিয়েছেন।

গত বুধবার রাতের ওই ঘটনা প্রসঙ্গে সোমবার হাওড়া সিটি পুলিশের ডিসি (সদর) নিশাত পারভেজ বলেন, “আদালতের নির্দেশ পাওয়া গিয়েছে। নির্দেশ পেয়েই তদন্ত শুরু হয়ে গিয়েছে। আগামী ৩০ তারিখের মধ্যে তদন্ত রিপোর্ট আদালতে জমা দেওয়া হবে। এর পর আদালতের নির্দেশ মতো পুলিশ ব্যবস্থা নেবে।”

এ দিকে, পুলিশ এ দিনই আক্রান্ত পরিবারের গৃহকর্তা নগেন্দ্রবাবুর থেকে ঘটনার দিন সিসি ক্যামেরায় ওঠা ফুটেজের সিডি সংগ্রহ করেছে। নগেন্দ্রবাবু বলেন, “ঘটনার চার দিন কেটে যাওয়ার পর পুলিশ আজ ঘটনার ফুটেজ চেয়েছিল। আমি সিডি করে দিয়েছি। তবে পুলিশ যে আদালতের নির্দেশে তদন্ত শুরু করেছে এটাই ভাল কথা।” এ দিনও নগেন্দ্রবাবু অভিযোগ করেন, এখনও ১০-১২ জন অচেনা যুবক ওই আবাসনের চারপাশে ঘোরাঘুরি করছে এবং তাঁদের নানা ভাবে শাসাচ্ছে। তিনি গোলাবাড়ি থানায় বিষয়টি জানিয়েছেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement