সিঙ্গুরের কৃষকদের জমি ফেরত পাওয়ার কোনও সম্ভাবনাই ছিল না। তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ক্ষমতায় আসার অনেক আগেই এমন মন্তব্য করে গিয়েছিলেন নকশাল নেতা কানু সান্যাল। এমনই দাবি করা হয়েছে তাঁর অনুমোদিত জীবনী গ্রন্থে।
সিঙ্গুর ও নন্দীগ্রামের আন্দোলনের প্রত্যক্ষ প্রভাব যখন রাজ্য রাজনীতিতে রয়েছে, সেই সময়ে ২০০৯ সালেই কানুবাবু ওই কথা বলেছিলেন বলে বইয়ে উল্লেখ করা হয়েছে। কানুবাবুর বিশ্লেষণ ছিল, সিঙ্গুর ও নন্দীগ্রামের গণ-আন্দোলনের অনেক সম্ভাবনা ছিল। কিন্তু তৃণমূল নেত্রী সেই আন্দোলন ‘হাইজ্যাক’ করে নেওয়ায় ওই সম্ভাবনা বিনষ্ট হয়েছিল। সিঙ্গুরের আন্দোলনের ফলে রাজ্যের শিল্প সম্ভাবনা বিনষ্ট হওয়া নিয়ে অবশ্য কোনও মন্তব্য করেননি কানুবাবু। তাঁর বক্তব্য ছিল, সিঙ্গুরে কৃষিজমি অধিগ্রহণের বিরুদ্ধে যখন আন্দোলন চলছে, সেই সময়ে কলকাতায় অনশন করতে বসে যাবতীয় মনোযোগ সেই দিকে টেনে এনেছিলেন মমতা। আর ওই সুযোগে জমিতে পাঁচিল তুলে কাজ এগিয়ে নিয়েছিল টাটারা। এর পরে মমতা রাজ্যে ক্ষমতায় এলেও সিঙ্গুরের জমি ফেরত দেওয়া সম্ভব নয় বলে তাঁর ধারণা ছিল। কানুবাবু অবশ্য রাজ্যে ক্ষমতার ‘পরিবর্তন’ দেখে যাননি। প্রবীণ এই নেতা আত্মহত্যা করেন ২০১০ সালে।
তাঁর সঙ্গে দীর্ঘ আলাপচারিচতার ভিত্তিতে সাংবাদিক বাপ্পাদিত্য পাল কানুবাবুর জীবনী ‘দ্য ফার্স্ট নকশাল’ বইটি লিখেছিলেন। জীবদ্দশাতেই সেই জীবনীর জন্য অনুমোদন দিয়ে গিয়েছিলেন কানুবাবু। বইটির আনুষ্ঠানিক প্রকাশ উপলক্ষে শুক্রবার প্রাক্তন বিচারপতি অশোক গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “এ রাজ্যে সশস্ত্র সংগ্রামের পথিকৃৎ হলেও ব্যক্তি হত্যার রাজনীতির চির কাল বিরোধী ছিলেন কানুবাবু।” যে কারণে মাওবাদীদের কাজকর্মকে তিনি সন্ত্রাসবাদ বলেই মনে করতেন।