নিহতের পরিবার সুপ্রিম কোর্টে যাচ্ছে, জানাই ছিল। গেলও। বীরভূমের পাড়ুই হত্যাকাণ্ড নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সোমবার শীর্ষ আদালতে আপিল মামলা করেছেন নিহত সাগর ঘোষের ছেলে হৃদয় ঘোষ। পাশাপাশি ওই রায় চ্যালেঞ্জ করেই আরও একটি আপিল মামলা ঠুকেছেন সাগর-হত্যায় অভিযুক্ত নেপাল রায়-সহ তিন জন।
২০১৩-র ২১ জুলাই বীরভূমের পাড়ুই থানা এলাকার কসবা-নবগ্রামে খুন হন পঞ্চায়েত নির্বাচনের নির্দল প্রার্থী হৃদয় ঘোষের বাবা সাগর ঘোষ। সেই ঘটনায় সিআইডি তদন্তের আবেদন জানিয়ে হাইকোর্টে প্রথম মামলাটি করেন ওই তিন অভিযুক্ত। তিন জনেই দীর্ঘদিন জেল-হাজতে ছিলেন। পরে তাঁরা জামিনে মুক্তি পান। অভিযুক্তেরা হাইকোর্টে মামলা করে জানান, জেলা পুলিশের তদন্তে তাঁরা সন্তুষ্ট নন। লাভপুর থানার পুলিশ মূল অভিযুক্তদের বাদ দিয়ে অন্যদের ধরছে। সিআইডি তদন্ত হলে সত্য প্রকাশিত হবে। সাগরবাবুর ছেলে হৃদয়বাবু সেই মামলার সঙ্গে যুক্ত হন। বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত নিজে সাগরবাবুর স্ত্রী ও বৌমার সঙ্গে কথা বলেন। এবং ওই খুনের তদন্ত করার জন্য সিআইডি-কে নির্দেশ দেন।
কিন্তু সিআইডি-র তদন্তে সন্তুষ্ট হতে পারেনি হাইকোর্ট। ফের তদন্তের জন্য রাজ্য পুলিশের ডিজি-র নেতৃত্বে একটি স্পেশ্যাল ইনভেস্টিগেশন টিম (সিট) বা বিশেষ তদন্ত দল গঠন করে দেয় তারা। সিটের দু’টি রিপোর্টও বিচারপতিকে সন্তুষ্ট করতে পারেনি। তখন তিনি জানিয়ে দেন, কোর্ট সিবিআই-কে তদন্তের ভার দিতে প্রস্তুত। তবে তার আগে ডিজি-র মুখ থেকে তিনি সব কথা জানতে চান। ১১ এপ্রিল বেলা ২টোয় ডিজি কোর্টে হাজির হবেন বলে জানানো হয়।
কিন্তু সরকার পক্ষ ১১ এপ্রিল হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে আপিল করে। হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ এই মামলার শুনানি তিন সপ্তাহের জন্য স্থগিত করে দেয়। সেই স্থগিতাদেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়েই এ দিন সুপ্রিম কোর্টে দু’টি মামলা করা হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টে হৃদয়বাবুর আইনজীবী রবিশঙ্কর প্রসাদ জানান, হাইকোর্টে সুবিচার পাওয়ার আশা নেই দেখেই তাঁর মক্কেল শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন।