শিল্পাঞ্চল হলদিয়ার অসুখ নিয়ে মুখে কুলুপ মমতার

অনেক কিছুই হওয়ার কথা। কিন্তু তা হওয়া তো দূরের কথা, একের পর এক অসুখে মুখ থুবড়ে পড়ছে শিল্পাঞ্চল হলদিয়ার কারখানাগুলি। সারদা থেকে খাগড়াগড় কাণ্ডে চাপে পড়ে থাকা মুখ্যমন্ত্রী বুধবার হলদিয়ায় দাঁড়িয়ে সেই অসুখের কোনও দাওয়াই-ই বাতলাতে পারলেন না।

Advertisement

পিনাকী বন্দ্যোপাধ্যায়

হলদিয়া শেষ আপডেট: ২৭ নভেম্বর ২০১৪ ০২:৩৩
Share:

তাপবিদ্যুত্‌ কেন্দ্র উদ্বোধনে সঞ্জীব গোয়েন্‌কার সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী। বুধবার হলদিয়ায়। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক।

অনেক কিছুই হওয়ার কথা। কিন্তু তা হওয়া তো দূরের কথা, একের পর এক অসুখে মুখ থুবড়ে পড়ছে শিল্পাঞ্চল হলদিয়ার কারখানাগুলি। সারদা থেকে খাগড়াগড় কাণ্ডে চাপে পড়ে থাকা মুখ্যমন্ত্রী বুধবার হলদিয়ায় দাঁড়িয়ে সেই অসুখের কোনও দাওয়াই-ই বাতলাতে পারলেন না।

Advertisement

গত বছর জানুয়ারিতে তাঁর আমলের তৃতীয় শিল্প সম্মেলনের পর ফের এ দিন হলদিয়া এলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সিইএসসি-র তাপবিদ্যুত্‌ কেন্দ্রের উদ্বোধনে। মাঝের ২২ মাসে শিল্পে সঙ্কট তীব্রতর হয়েছে। হলদিয়া পেট্রোকেমিক্যালস প্রায় তিন মাস বন্ধ। ঝাঁপ পড়েছে মানেকসিয়ায়। তীব্র সমস্যায় জর্জরিত মিত্‌সুবিশি। হলদিয়া বন্দরের নাব্যতার সমস্যাও কপালে ভাঁজ ফেলেছে ব্যবসায়ীদের। এই অবস্থায় হলদিয়ার জন্য তিনি কী বার্তা দেন, জানতে হাজির হয়েছিলেন বিভিন্ন বণিক সভার প্রতিনিধি থেকে হলদিয়ার ছোট-বড়-মাঝারি শিল্পের কর্তারা। দিনের শেষে তাঁরা হতোদ্যম। শিল্পাঞ্চলের অসুখ নিয়ে একটি শব্দও উচ্চারণ করলেন না মমতা। অত্যন্ত দায়সারা ভাবে তিনি বলেন, “হলদিয়ায় আরও শিল্প আসা উচিত। এখানে নিশ্চয়ই ল্যান্ড ব্যাঙ্ক আছে। এক লপ্তে ৫০ থেকে ১০০ একর জমি পেলে হলদিয়ায় নতুন টাউনশিপ হতে পারে। হেলিপ্যাডও হতে পারে।”

শিল্পের অসুখ রাজ্যের অন্যত্রও। সম্প্রতি উত্তরবঙ্গের একটি চা বাগানের মালিককে পিটিয়ে মারার অভিযোগ উঠেছে শ্রমিকদের বিরুদ্ধে। গত এক বছরে রাজ্যের বেশ কয়েকটি চটকলে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকদের হাতে মার খেয়েছেন ম্যানেজার এবং মালিক। সরাসরি এ সবের উল্লেখ না করেও মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “চা বাগান ও চট শিল্পের মালিকদের বলব, আপনারা নিজেদের সমস্যা মিটিয়ে নিন। অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্রকে বলেছি, চট ও চা শিল্পের মালিকদের সঙ্গে বসুন।” মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, “চা বাগানের শ্রমিকরা একটু আলাদা ধরনের। যদি কখনও সমস্যা হয়, ঘটনার পরে জানিয়ে লাভ নেই। যদি জানতে পারেন ঘটনা ঘটতে পারে, আগেই জানান। আগুন জ্বলার আগেই তা আটকাতে হয়।” হলদিয়াতেও মালিক-শ্রমিক সম্পর্কের উপরে জোর দেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, “কিছু দিন আগে মিত্‌সুবিশির চেয়ারম্যান এসেছিলেন। বলেছিলেন, মালিক ও শ্রমিক পক্ষের তিন বছরের জন্য চুক্তি করতে হবে। তা শুনে শুভেন্দুকে (হলদিয়ার তৃণমূল সাংসদ শুভেন্দু অধিকারী) ফোন করলাম। পরে মালিক পক্ষের সঙ্গে বসে তিন বছরের চুক্তিও করে শ্রমিকরা।” মমতা চান এই সুসম্পর্ক অন্য শিল্পেও ছড়িয়ে পড়ুক।

Advertisement

দুপুরে দিঘা থেকে হেলিকপ্টারে হলদিয়া পৌঁছন মুখ্যমন্ত্রী। শহরের বাণেশ্বর চকে ৬০০ মেগাওয়াটের যে তাপবিদ্যুত্‌ কেন্দ্র গড়ে তুলেছে সিইএসসি, তার উদ্বোধন করেন তিনি। অম্বুজা গোষ্ঠী কলকাতার আদলে হলদিয়াতেও একটি সিটি সেন্টার গড়ে তুলেছে। একই মঞ্চ থেকে তারও আনুষ্ঠানিক সূচনা করেন মমতা। সঙ্গে ছিলেন সিইএসসি-র চেয়ারম্যান সঞ্জীব গোয়েন্‌কা, অম্বুজার হর্ষ নেওটিয়া, মুখ্যসচিব সঞ্জয় মিত্র, বিদ্যুত্‌মন্ত্রী মণীশ গুপ্ত-সহ কর্তাব্যক্তিরা। সঞ্জীব গোয়েন্‌কা বলেন, “৩১৭ একর জায়গায় ৪৬০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করে এই তাপ বিদ্যুত্‌ প্রকল্প গড়ে উঠেছে।” এটি রাজ্যের যে কোন সংস্থার বৃহত্তম বিনিয়োগ বলে দাবি করেন তিনি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement