রাজ্য জয়ের লক্ষ্যে জেলায় যাবেন অমিত

মাত্র দশ দিন আগে কলকাতার জনসভা থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্দেশে হুঙ্কার ছেড়ে বলেছিলেন, ‘‘ম্যায় হুঁ অমিত শাহ। তৃণমূলকে উত্‌খাত করতে আমি এখানে এসেছি।” জনসভার রেশ এখনও কাটেনি। ফের মমতার বিরুদ্ধে সুর চড়াতে পশ্চিমবঙ্গ সফরের তোড়জোড় করছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি।

Advertisement

দিগন্ত বন্দ্যোপাধ্যায়

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১১ ডিসেম্বর ২০১৪ ০৩:২০
Share:

মাত্র দশ দিন আগে কলকাতার জনসভা থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্দেশে হুঙ্কার ছেড়ে বলেছিলেন, ‘‘ম্যায় হুঁ অমিত শাহ। তৃণমূলকে উত্‌খাত করতে আমি এখানে এসেছি।” জনসভার রেশ এখনও কাটেনি। ফের মমতার বিরুদ্ধে সুর চড়াতে পশ্চিমবঙ্গ সফরের তোড়জোড় করছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি।

Advertisement

সব ঠিক থাকলে জানুয়ারিতে ফের পশ্চিমবঙ্গে যাচ্ছেন শাহ। রাজ্য নেতৃত্বের সঙ্গে প্রাথমিক আলোচনাও হয়েছে। সফরে দু’দিন বাংলায় থাকবেন তিনি। তার মধ্যে এক দিন দলের রাজ্য নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন। এক দিন থাকবেন জনসভায়। তবে এ বার আর কলকাতা নয়, অমিত শাহ চাইছেন জেলায় জনসভা করতে। কিন্তু সেটি উত্তরবঙ্গে হবে না কি বীরভূম বা বর্ধমানের মতো জেলায়, তা স্থির হয়নি। তবে তাঁর ঘনিষ্ঠ মহলের মতে, পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা ভোটের দিন যত এগিয়ে আসবে, বিজেপি সভাপতির রাজ্য সফরও আরও বাড়বে। ঝাড়খণ্ড ও জম্মু-কাশ্মীরের ভোটপর্ব মিটলে পশ্চিমবঙ্গে জেলাওয়াড়ি সফর শুরু করবেন তিনি। এই ইঙ্গিত আগেই দিয়েছিলেন। ৩০ নভেম্বর ভিক্টোরিয়া হাউসের সামনে তাঁর সভার আগেই দিল্লিতে সদস্যপদ সম্পর্কে আলোচনা করতে দলের বিভিন্ন রাজ্য সভাপতিকে বৈঠকে ডাকেন শাহ। সেখানেই রাহুল সিংহকে জানিয়েছিলেন, এ বার থেকে প্রতি মাসে পশ্চিমবঙ্গে যেতে চাইছেন তিনি। আর সেই মতো সভাপতি হওয়ার পরের দু’মাসে দু’বার পশ্চিমবঙ্গে ঘুরেও এসেছেন।

অমিত শাহের এই ঘন ঘন বাংলা সফরের কারণ কী? বিজেপি সূত্রের মতে, ২০১৬ সালে পশ্চিমবঙ্গে বিজেপিকে ক্ষমতায় আনা। খোদ নরেন্দ্র মোদীও সেই নির্দেশ দিয়েছেন তাঁকে। বিষয়টি শুধু যে রাজনৈতিক, তেমন নয়। এর পিছনে উন্নয়নের ভাবনাকেও সামনে নিয়ে আসছে বিজেপি। দলের এক নেতার মতে, উত্তর-পূর্ব ও দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলির প্রবেশদ্বার পশ্চিমবঙ্গ। পশ্চিমবঙ্গে ক্ষমতায় এলে মোদীর উন্নয়নের রূপরেখা কার্যকর করা সহজ হবে।

Advertisement

অমিত শাহ নিজেও মনে করেন, সারদা কেলেঙ্কারি ও খাগড়াগড়ের ঘটনার পরে পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির জন্য অনুকূল রাজনৈতিক পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। অন্য দল থেকেও মানুষ যোগ দিচ্ছেন বিজেপিতে। আর বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বের দাবি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও এখন বুঝতে পারছেন, তাঁর পায়ের তলায় জমি খসতে শুরু করেছে। তাঁদের মতে, এই অবস্থায় বিজেপির সংগঠনকে আরও মজবুত করে মমতার ব্যর্থতাকে জনতার মধ্যে পৌঁছে দেওয়াটাই জরুরি। পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির দায়িত্বে থাকা নেতা সিদ্ধার্থনাথ সিংহ বলেন, “অমিত শাহের জনসভার সাফল্যের পরেই তৃণমূল হতাশায় ভুগতে শুরু করেছে। সভা আটকাতে পুলিশ-প্রশাসন কম চেষ্টা করেনি। কিন্তু ব্যর্থ হয়েছে। সভায় যাওয়ার ‘অপরাধে’ বিজেপি কর্মীদের গায়ে সিগারেটের ছেঁকাও দেওয়া হয়েছে। ভোটে মানুষ এ সবের যোগ্য জবাব দেবেন।” সংসদীয় মন্ত্রী বেঙ্কাইয়া নায়ডুর মতে, “অমিত শাহের সভার পর থেকে তৃণমূলের হতাশা যে আরও বেড়ে গিয়েছে, তা কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্য থেকেই স্পষ্ট। ক্ষমা চাইবেন না বলেও আজ চাপের কাছে তাঁকে হার স্বীকার করতে হয়েছে। ভবিষ্যতে বাংলার সংস্কৃতিমনস্ক মানুষ এই অশালীনতা বরদাস্ত করবে না।”

পশ্চিমবঙ্গের সংগঠনকে মজবুত করতে আরএসএসও সক্রিয় হচ্ছে। লোকসভা নির্বাচনে মোদীর হাত শক্ত করতে সর্বশক্তি দিয়ে ঝাঁপিয়েছিলেন তাঁরা। গত মাসে পশ্চিমবঙ্গের কয়েকটি স্থানে আরএসএসের শাখার উপর পুলিশ ও তৃণমূলের কর্মীরা হামলা করে বলে অভিযোগ তুলেছে সঙ্ঘ। রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠীর কাছে গিয়ে নালিশও জানিয়েছেন সঙ্ঘের নেতারা। পশ্চিমবঙ্গে আরএসএসের প্রান্ত সঙ্ঘচালক অতুল কুমার বিশ্বাস বলেন, “আমাদের অভিযোগের ভিত্তিতে রাজ্যপাল বিষয়টি মুখ্যমন্ত্রীকে জানিয়েছেন। তার পর তৃণমূলের উপদ্রব কিছুটা থেমেছে। তা না হলে তৃণমূল কর্মী ও পুলিশ এসে শাখা বন্ধ করতে প্রকাশ্যে হুঙ্কার দিয়ে গিয়েছে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement