মমতার সভায় কর্মীদের ডিমের ঝোল আর ভাত

পোলাও-মাংস বা বিরিয়ানির মতো রাজসিক কোনও বন্দোবস্ত নয়। আজ, শুক্রবার নদিয়ার কল্যাণীতে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কর্মিসভার মেনু ডিমের ঝোল আর ভাত। সঙ্গে অতিসাধারণ ডাল-তরকারি। নদিয়া ছাড়াও মুর্শিদাবাদ ও উত্তর ২৪ পরগনা জেলার দলীয় কর্মীদের যোগ দেওয়ার কথা বৈঠকে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

রানাঘাট শেষ আপডেট: ২১ নভেম্বর ২০১৪ ০২:৫৯
Share:

কল্যাণীতে চলছে সভার প্রস্তুতি।—নিজস্ব চিত্র।

পোলাও-মাংস বা বিরিয়ানির মতো রাজসিক কোনও বন্দোবস্ত নয়। আজ, শুক্রবার নদিয়ার কল্যাণীতে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কর্মিসভার মেনু ডিমের ঝোল আর ভাত। সঙ্গে অতিসাধারণ ডাল-তরকারি। নদিয়া ছাড়াও মুর্শিদাবাদ ও উত্তর ২৪ পরগনা জেলার দলীয় কর্মীদের যোগ দেওয়ার কথা বৈঠকে। সব মিলিয়ে সংখ্যাটা নেহাত কম নয়প্রায় ত্রিশ হাজার। তাই মেনু যতই সাধারণ হোক তার বন্দোবস্ত করতে দম ছুটছে কল্যাণীর স্থানীয় নেতৃত্বের।

Advertisement

আয়োজনে যাতে ত্রুটি না থাকে তার তদারকিতে বৃহস্পতিবার দুপুর থেকেই ভিড় জমেছে সভাস্থল কল্যাণী সেন্ট্রাল পার্কের সামনের মাঠে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ব্যস্ত কল্যাণী শহর যুব তৃণমূল সভাপতি অরূপ মুখোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “বিশাল কর্মযজ্ঞ। কাতারে-কাতারে কর্মীরা আসছেন। তাঁদের যাতে কোনও অসুবিধা না হয় সে দিকটা নজর রাখতে হচ্ছে।”

সভা হবে পুরোপুরি ঘেরাটোপে। এমনকী সংবাদমাধ্যমকেও ভেতরে ঢুকতে দেওয়া হবে না। বাইরে ছোট্ট একটা সেল করা হয়েছে সংবাদমাধ্যমের জন্য। মূল মঞ্চে ঢুকতেই ডানদিকে থাকছে মুখ্যমন্ত্রী-সহ অন্য নেতা ও মন্ত্রীদের বসার জায়গা। পাশে মঞ্চের ভেতরে বাঁশ দিয়ে ব্যারিকেড করা হয়েছে। সেখানে সার দিয়ে দাঁড় করানো বিভিন্ন রঙের চেয়ার। এখানে বসবেন প্রতিনিধিরা। সামনের দিকে মহিলা প্রতিনিধিরা। হাজার পাঁচেক মহিলা প্রতিনিধি আসবেন ধরে বন্দোবস্ত করা হয়েছে।

Advertisement

৩০ হাজার প্রতিনিধিদের মধ্যে যাঁদের বাড়ি একটু দূরে, তাঁরা বৃহস্পতিবার সন্ধেতেই ঢুকে যাচ্ছেন শহরে। তবে, কর্মীদের থাকার জন্য দলের তরফে কোনও বন্দোবস্ত করা হয়নি। শুধু রাজ্যের দু-চার জন মন্ত্রী ও গুরুত্বপূর্ণ নেতার জন্য লেক হল-সহ শহরের কয়েকটি অতিথিশালা ভাড়া করা হয়েছে বৃহস্পতিবার রাতে। শুক্রবার দুপুরের খাওয়ার জন্য তিনটি জায়গায় ব্যবস্থা থাকছে। অরূপবাবু জানান, ডাল, তরকারি ডিমের ঝোল আর ভাতের বন্দোবস্ত করতে প্লেট প্রতি খরচ পড়ছে প্রায় ৪০ টাকা। এত সাধারণ মেনু কেন? পাশে দাঁড়ানো স্থানীয় এক নেতার কথায়, “অন্য কিছু ব্যবস্থা করে আবার বিতর্কের মধ্যে পড়ি আর কি?”

তবে, প্রচারে কোনও কমতি রাখেনি তৃণমূল। গোটা শহর ঢেকে গিয়েছে দলীয় পতাকায়। বড় বড় করে মুখ্যমন্ত্রী, মুকুল রায়ের ব্যানার ও ফেস্টুন চারদিকে। আগের দিন বিকেলেও বিভিন্ন জায়গায় পতাকা টাঙানোর কাজ চলছে জোরকদমে।

শুক্রবার সকাল ১১টায় সভা শুরু। সেখানে তৃণমূলনেত্রী কী বার্তা দেবেন, তা নিয়ে দলের অন্দরে জোর জল্পনা চলছে। দলীয় নেতারা জানাচ্ছেন, সামনে রয়েছে নদিয়া জেলায় কয়েকটি পুরসভার নির্বাচন। এবারই প্রথম নির্বাচন হতে চলেছে নবগঠিত হরিণঘাটা পুরসভার। আসন্ন বনগাঁ লোকসভা ও কৃষ্ণগঞ্জ বিধানসভার উপ-নির্বাচনও। বনগাঁ লোকসভার মধ্যে পড়ছে নদিয়ার কল্যাণী ও হরিণঘাটা বিধানসভা। এই সমস্ত নির্বাচনে দলীয় কর্মীদের ভূমিকা ও দলের রণকৌশল নিয়েই দলনেত্রী আলোচনা করবেন বলে প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে। নদিয়ার বিভিন্ন প্রান্ত গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নিয়েও দলীয় কর্মীদের কড়া বার্তা দিতে পারেন দলনেত্রী। মুর্শিদাবাদের ক্ষেত্রে আবার গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব মেটানোটাই মূল লক্ষ্য। শোনা যাচ্ছে, সময় ও সুযোগ হলে মুর্শিদাবাদ জেলার নেতা হুমায়ুন কবীরের সঙ্গেও একপ্রস্ত আলোচনা হতে পারে মুখ্যমন্ত্রীর।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement