বৃহস্পতিবার নবান্নে পীযূষ গয়াল। —নিজস্ব চিত্র।
নবান্নে এসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠক করলেন কেন্দ্রীয় বিদ্যুৎমন্ত্রী পীযূষ গয়াল। এই প্রথম নরেন্দ্র মোদী সরকারের কোনও মন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক হল মমতার। আগামী মাসের ৮ তারিখ প্রধানমন্ত্রীর দূত হয়ে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আসার কথা কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী স্মৃতি ইরানির। তার আগে মোদীর প্রতিনিধি হিসেবে এসে গয়াল রাজনীতিমুক্ত প্রশাসনের বার্তা দিয়ে গেলেন বলেই মনে করা হচ্ছে।
লোকসভা ভোটের প্রচারপর্বে মমতার সঙ্গে তিক্ততা যতই তুঙ্গে উঠুক, ক্ষমতা দখলের পরে তিনি যে রাজ্যের প্রতি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেবেন, তা ইতিমধ্যেই স্পষ্ট করে দিয়েছেন মোদী। তাঁর নীতি হল, রাজনীতি রাজনীতির জায়গায় থাকবে। কিন্তু সরকার পরিচালনার ক্ষেত্রে তার কোনও ছাপ পড়বে না। নিজে গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন কেন্দ্রের কাছ থেকে যে সব প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হয়েছিলেন, প্রধানমন্ত্রী হয়ে মোদী সেগুলি মুছে ফেলতে চান। সেই লক্ষ্যে তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী জয়ললিতার সঙ্গে রবিশঙ্কর প্রসাদ এবং অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নায়ডুর সঙ্গে বেঙ্কাইয়া নায়ডুকে যোগাযোগ রাখার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। মমতার সঙ্গে যোগাযোগ রাখবেন স্মৃতি।
কিন্তু স্মৃতি শহরে আসার আগেই ঘটনাচক্রে কোল ইন্ডিয়ার একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে বৃহস্পতিবার কলকাতায় আসেন গয়াল। তিনি কয়লা মন্ত্রকেরও ভারপ্রাপ্ত। গয়াল এ দিন বলেন, “কোনও রাজ্যে গেলে সেই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করাটা স্বাভাবিক সৌজন্য।” বিকেল সাড়ে তিনটে নাগাদ গয়াল নবান্নে যান। প্রায় আধ ঘণ্টা তিনি মুখ্যমন্ত্রীর সচিবালয়ে ছিলেন। প্রশাসন সূত্রে খবর, অনেকটা সময় গয়াল এবং মুখ্যমন্ত্রী একান্তে কথা বলেন।
তবে রাজ্যপাল প্রসঙ্গে তাঁদের মধ্যে কোনও কথা হয়নি বলেই প্রশাসন সূত্রে খবর। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব অনিল গোস্বামী ফোন করে তাঁর মন বোঝার চেষ্টা করার পরে রাজ্যপাল পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার ব্যাপারে মনস্থির করেই ফেলেছেন এম কে নারায়ণন। তৃণমূল নেতাদের আশঙ্কা, এ বার সঙ্ঘ পরিবারের ঘনিষ্ঠ কাউকে রাজ্যপাল করে পাঠানোর চেষ্টা করবে কেন্দ্র। তবে প্রথা অনুসারে রাজ্যপালের নাম নিয়ে রাজ্য সরকারের সঙ্গে তাদের আলোচনা করার কথা। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার সূত্রে খবর এই বিষয়টি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ দেখছেন। গয়াল এ ব্যাপারে কোনও বার্তা নিয়ে মমতার কাছে যাননি।
গয়ালের সঙ্গে রাজ্যের বিদ্যুৎ শিল্প এবং বেআইনি কয়লা খাদান বন্ধ করা নিয়ে মমতার কথা হয়েছে বলে খবর। আলোচনার দ্বিতীয় পর্বে তাতে যোগ দেন মুখ্যসচিব সঞ্জয় মিত্র এবং বিদ্যুৎসচিব গোপালকৃষ্ণ।