মাতঙ্গকে জেরা করতে ইডি-ও চায় হেফাজতে

সিবিআই তাঁকে গ্রেফতার করেছে। তারা তো জেরা করবেই। সেই সঙ্গে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট বা ইডি-ও জেরা করতে চাইছে সারদা গোষ্ঠীর আর্থিক কেলেঙ্কারিতে ধৃত প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মাতঙ্গ সিংহকে। ইডি সূত্রের খবর, সারদা-কর্ণধার সুদীপ্ত সেনের সঙ্গে মাতঙ্গের যে-চুক্তি হয়েছিল, বারবার বলা সত্ত্বেও আজ পর্যন্ত প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সেই বিষয়ে কোনও তথ্য দেননি ওই তদন্তকারী সংস্থাকে। সিবিআই তো তাঁকে নিজেদের হেফাজতে নেবেই।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০২:৪৬
Share:

সিবিআই তাঁকে গ্রেফতার করেছে। তারা তো জেরা করবেই। সেই সঙ্গে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট বা ইডি-ও জেরা করতে চাইছে সারদা গোষ্ঠীর আর্থিক কেলেঙ্কারিতে ধৃত প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মাতঙ্গ সিংহকে।

Advertisement

ইডি সূত্রের খবর, সারদা-কর্ণধার সুদীপ্ত সেনের সঙ্গে মাতঙ্গের যে-চুক্তি হয়েছিল, বারবার বলা সত্ত্বেও আজ পর্যন্ত প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সেই বিষয়ে কোনও তথ্য দেননি ওই তদন্তকারী সংস্থাকে। সিবিআই তো তাঁকে নিজেদের হেফাজতে নেবেই। তার পরে প্রয়োজনে মাতঙ্গকে নিজেদের হেফাজতে নিতে পারে ইডি-ও।

পেটে ব্যথা এবং অন্যান্য শারীরিক অসুস্থতার জন্য রবিবার মাতঙ্গকে আদালতে তোলা যায়নি। সোমবারটাও হাসপাতালে কেটেছে মাতঙ্গের। এ দিন তাঁর কিছু পরীক্ষানিরীক্ষা হয়েছে। গড়া হয়েছে পাঁচ সদস্যের একটি মেডিক্যাল বোর্ড। তাঁকে কবে ছাড়া হবে, আজ, মঙ্গলবার বোর্ডের সদস্যেরা তাঁর শারীরিক পরীক্ষানিরীক্ষার যাবতীয় রিপোর্ট দেখে এবং পুরো পরিস্থিতি বিবেচনা করে সেই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন বলে হাসপাতাল সূত্রের খবর।

Advertisement

কিন্তু গ্রেফতারের পরে মাতঙ্গকে দু’-দু’টো সরকারি হাসপাতালে নিয়ে যেতে হল কেন, সেই প্রশ্ন উঠছে। শনিবার গ্রেফতারের পরে মাতঙ্গকে প্রথমে নীলরতন সরকার হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। তার পরে তাঁকে এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে ভর্তি করানো হল কেন, সেই প্রশ্ন তুলেছেন পিজি-র কর্তারাই। ওই হাসপাতালের অধিকর্তা প্রদীপ মিত্র জানান, তিনি এই ব্যাপারে রাজ্য প্রশাসনের কাছে অভিযোগ করবেন। প্রদীপবাবু বলেন, “যে-কোনও বিচারাধীন বন্দিকেই ভর্তির প্রয়োজনে এসএসকেএমে পাঠানো হয়। অথচ বহু সাধারণ রোগী শয্যা পান না। মাতঙ্গকে নীলরতনে ভর্তি না-করিয়ে এসএসকেএমে আনার সিদ্ধান্তটা আমার কাছে স্পষ্ট নয়।” এর আগে লিভার প্রতিস্থাপন হয়েছে মাতঙ্গের। সেই প্রসঙ্গ টেনে প্রদীপবাবু বলেন, “যদি লিভারের চিকিৎসার প্রয়োজনটাই একমাত্র কারণ হয়, তা হলে সেটা অন্য ভাবেও করা যেত।”

মাতঙ্গকে নিয়ে টানাপড়েনের মধ্যেই এ দিন সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্সে ডেকে রাজেশ বজাজকে জেরা করে অফিসারেরা। এই নিয়ে ১৯ বার তাঁকে জেরা করা হল। মাতঙ্গের সংস্থায় সিইও ছিলেন এই রাজেশ। শনিবার মাতঙ্গকে গ্রেফতার করার সময়েও রাজেশ সেখানে ছিলেন। সিবিআই অফিসারদের কথায়, “বিভিন্ন তথ্য দিয়ে তদন্তে সহযোগিতা করছেন রাজেশ।”

তদন্তে নেমে সিবিআই জানতে পেরেছে, সারদা-প্রধানের সঙ্গে একটি নয়, দু’-দু’টি চুক্তি করেছিলেন মাতঙ্গ। সিবিআই সূত্রের দাবি, ৩১ জানুয়ারি মাতঙ্গকে যখন জেরা করা হচ্ছিল, তখন প্রথম থেকেই সুদীপ্তের সঙ্গে তাঁর নিয়মিত যোগাযোগের কথা অস্বীকার করছিলেন ওই কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। তাঁর দাবি, সুদীপ্তের সঙ্গে তাঁর নিজের চ্যানেল বিক্রির বিষয়ে মাত্র একটি চুক্তি হয়েছিল ২০১১ সালে। তিনি এই দাবি করার পরেই সিবিআই অফিসারেরা তাঁকে আরও একটি চুক্তিপত্র দেখান। তাতেও সই ছিল মাতঙ্গের। দেখা যায়, ২০১০ সালে সারদা-কর্ণধারের সঙ্গে এ রাজ্যের একটি বৈদ্যুতিন চ্যানেল সংক্রান্ত বিষয়েও চুক্তি করেছিলেন মাতঙ্গ। পরে তিনি সেই চুক্তির কথা স্বীকার করে নেন এবং তাঁর সঙ্গে সুদীপ্তের আলোচনায় মধ্যস্থতাকারী হিসেবে রাজেশের উপরেই সব দায়ভার চাপিয়ে দেন। তার পরেই রাজেশকে ডেকে পাঠানো হয় সিবিআই দফতরে। দু’জনকে মুখোমুখি বসাতেই দু’টি চুক্তির বিষয়ে ধোঁয়াশা কেটে যায়। রাজেশের পাল্টা দাবি, সুদীপ্তের সঙ্গে তাঁর পরিচয় করিয়ে দেন মাতঙ্গই।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement