মুখোশ খুলছে মমতার, দাবি করলেন অমিত

রাজ্যের ক্রীড়া ও পরিবহণমন্ত্রী মদন মিত্রের গ্রেফতারির পরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক লড়াইটা আরও এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দিলেন বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ। পশ্চিমবঙ্গের ভারপ্রাপ্ত নেতা ও রাজ্য নেতৃত্বকে বিজেপি সভাপতি জানান, সারদা-কাণ্ডে এ যাবৎ যাঁরা গ্রেফতার হয়েছেন, তাঁদের মধ্যে মদন মুখ্যমন্ত্রী মমতার সব চেয়ে ঘনিষ্ঠ। এবং মুখ্যমন্ত্রী যত মদনের পাশে এসে দাঁড়াবেন, তত বেশি মুখোশ খুলবে!

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি ও কলকাতা শেষ আপডেট: ১৩ ডিসেম্বর ২০১৪ ০৩:৫১
Share:

রাজ্যের ক্রীড়া ও পরিবহণমন্ত্রী মদন মিত্রের গ্রেফতারির পরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক লড়াইটা আরও এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দিলেন বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ।

Advertisement

পশ্চিমবঙ্গের ভারপ্রাপ্ত নেতা ও রাজ্য নেতৃত্বকে বিজেপি সভাপতি জানান, সারদা-কাণ্ডে এ যাবৎ যাঁরা গ্রেফতার হয়েছেন, তাঁদের মধ্যে মদন মুখ্যমন্ত্রী মমতার সব চেয়ে ঘনিষ্ঠ। এবং মুখ্যমন্ত্রী যত মদনের পাশে এসে দাঁড়াবেন, তত বেশি মুখোশ খুলবে! নন্দীগ্রামের সময় অনেকটা এই রকম অবস্থা হয়েছিল সিপিএমের। তারাও সেই সময়ে জনতার দরবারে যাওয়ার কথা বলত কিন্তু কোনও জায়গা থেকে সমর্থন পায়নি। ফলে বিজেপি মনে করছে, এখন মমতা যত মদনের সমর্থনে পথে নামবেন, তত মানুষের কাছে স্পষ্ট হবে কেন মুখ্যমন্ত্রী অভিযুক্তদের আড়াল করে এসেছেন।

এই অঙ্ক থেকেই স্বয়ং অমিত শুক্রবার বলেন, “মমতাজি যদি মনে করেন, সিবিআই রাজনৈতিক তদন্ত করছে, এ সবই সিবিআইয়ের ‘দুষ্কর্ম’ তা হলে মুখ্যমন্ত্রী প্রকাশ্যে বলুন, গ্রেফতার হওয়া ব্যক্তিরা নির্দোষ!” পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি-র ভারপ্রাপ্ত নেতা সিদ্ধার্থনাথ সিংহের বক্তব্য, “মদন মিত্রের গ্রেফতারি প্রমাণ করল, তৃণমূল নেতৃত্ব সারদা দুর্নীতিতে আকণ্ঠ ডুবে রয়েছেন। এবং ধীরে ধীরে অপরাধীদের চিহ্ন এগিয়ে যাচ্ছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দোরগোড়া পর্যন্ত। এই অবস্থায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উচিত, নৈতিক দায়িত্ব নিয়ে ইস্তফা দেওয়া। রবিনহুড ধনীদের কাছ থেকে অর্থ নিয়ে গরিবদের দিতেন। মমতা ঠিক উল্টো কাজ করছেন। গরিবদের পয়সা নিয়ে ধনীদের দিয়েছেন!”

Advertisement

যে ভাবে মদনের গ্রেফতারির প্রতিবাদে মমতা শনিবার থেকে পথে নামার নির্দেশ দিয়েছেন, বিজেপি কি তা হলে তার পাল্টা আন্দোলনে নামবে? অমিতের নির্দেশ, মমতার ‘ফাঁদে পা’ দিয়ে এমন কোনও পদক্ষেপ করার দরকার নেই রাজ্য নেতৃত্বের। মদনের সমর্থনে কারা কারা নামছেন, সেটা দেখেই মানুষ বুঝে যাবে কারা কারা দুর্নীতির পক্ষে রয়েছেন। বরং, জনসভায় যে ভাবে বিজেপি প্রচার করছে, তেমনই করুক। মমতা ও মদনের যোগাযোগ নিয়ে আরও সরব হোক। বিজেপি-র এক নেতার কথায়, “মদন মিত্রকে জেরা করলেই যে তিনি গ্রেফতার হবেন, তেমন ধারণা সকলেরই ছিল। খোদ মমতাও জানতেন, মদনও। কিন্তু আজ আরও স্পষ্ট হয়ে গেল, মমতা কী কারণে মদনকে আড়াল করছেন।” দলের রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহ কটাক্ষ করেছেন, “এত দিন চোর-পুলিশ খেলে শেষ পর্যন্ত মদন সিবিআই দফতরে গিয়েছেন। তিনি বুঝেছেন, হাসপাতালে লুকিয়ে থেকে লাভ নেই। সিপিআইয়ের হাত এত লম্বা, যে হাসপাতাল কেন, বিদেশে পালিয়ে গেলেও পৌঁছে যাবে!”

বিজেপি নেতাদের বক্তব্য, সারদা-কাণ্ডে সিবিআই তদন্ত হচ্ছে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে। ফলে মমতা যত সিবিআই বা এই সূত্রে নরেন্দ্র মোদী বা অমিতকে আক্রমণ করবেন, তাতে কোনও লাভ হবে না। কারণ, গ্রেফতারির বিরুদ্ধে মমতার মন্তব্য আদালতের বিরুদ্ধেই যাবে। অমিত যে কারণে আজ নিজেই বলেছেন, “ইন্দিরা গাঁধীর জমানা থেকে সনিয়া গাঁধী-মনমোহন সিংহ পর্যন্ত কংগ্রেস যে ভাবে সিবিআইকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার করে এসেছে, বিজেপি তা কোনও দিন করবে না।” পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি-র প্রচারের লাইন কী হবে, তা-ও এ দিন জানিয়ে দিয়েছেন বিজেপি সভাপতি। তিনি বলেন, “সারদা দুর্নীতি ও খাগড়াগড় বিস্ফোরণের অভিযুক্তরা তৃণমূলের সঙ্গে জড়িত। সারদা দুর্নীতির অভিযুক্তরাও তা-ই। তৃণমূলের সাংসদ-সহ অনেকে গ্রেফতারও হয়েছে। ফলে, এই দুটি ঘটনার কোনও দায় এড়াতে পারেন না তৃণমূল নেতৃত্ব।”

রাহুলবাবু আরও এক ধাপ এগিয়ে দাবি করেছেন, কোন কোন খেলোয়াড়, কোন কোন ক্লাব মদনের সমর্থনে পথে নামছে, তার উপরেও নজর রাখা উচিত সিবিআইয়ের। যদি ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগানের অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেওয়া হয়, তা হলে অন্যান্য ক্লাবের সঙ্গে মদনের যোগাযোগ এবং তাতে সারদার টাকা ব্যবহার হয়েছে কি না, সে সবও খতিয়ে দেখা উচিত। বিজেপি-র রাজ্য সভাপতির বক্তব্য, “মমতা আজ বিজেপি-কে পুরসভার ভোট নিয়ে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়েছেন। যদি এতটাই আত্মবিশ্বাসী হন তিনি, তা হলে ভোট পিছোচ্ছেন কেন?”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement