মুখ্যমন্ত্রীর ‘র’ মন্তব্যে অভিযোগ দেশদ্রোহের

ভারতীয় গুপ্তচর সংস্থা রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালিসিস উইং বা ‘র’ প্রসঙ্গে তাঁর মন্তব্যের জেরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে ‘দেশদ্রোহের’ লিখিত অভিযোগ করলেন রামপুরহাটের এক বাসিন্দা। গত ২২ নভেম্বর নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামের কর্মিসভায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজের বক্তৃতায় খাগড়াগড় বিস্ফোরণের প্রসঙ্গ টেনে বলেছিলেন, “খাগড়াগড়ে হয়তো কেন্দ্রই ‘র’ কে দিয়ে বোমা রাখিয়েছে! মনে রাখবেন, আমি ২৩ বছর কেন্দ্রে ছিলাম। কে কী ভাবে ষড়যন্ত্র করে, সব জানি।”

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

রামপুরহাট শেষ আপডেট: ১৬ জানুয়ারি ২০১৫ ০৩:০৫
Share:

ভারতীয় গুপ্তচর সংস্থা রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালিসিস উইং বা ‘র’ প্রসঙ্গে তাঁর মন্তব্যের জেরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে ‘দেশদ্রোহের’ লিখিত অভিযোগ করলেন রামপুরহাটের এক বাসিন্দা।

Advertisement

গত ২২ নভেম্বর নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামের কর্মিসভায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজের বক্তৃতায় খাগড়াগড় বিস্ফোরণের প্রসঙ্গ টেনে বলেছিলেন, “খাগড়াগড়ে হয়তো কেন্দ্রই ‘র’ কে দিয়ে বোমা রাখিয়েছে! মনে রাখবেন, আমি ২৩ বছর কেন্দ্রে ছিলাম। কে কী ভাবে ষড়যন্ত্র করে, সব জানি।” এর পরেই মমতার এই মন্তব্যকে ‘দায়িত্বজ্ঞানহীন ও দেশবিরোধী’ আখ্যা দিয়ে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি ব্লগে লেখেন, “এই ধরনের অভিযোগ আসলে প্রকৃত অপরাধীদের সাহায্য করে।” মমতার এই মন্তব্যকে ‘দেশদ্রোহের’ সামিল বলে মনে করছেন রামরপুরহাটের ভাঁড়শালাপাড়ার বাসিন্দা সিদ্ধার্থ রায়ও। বিজেপি প্রভাবিত বিড়ি শ্রমিক সংগঠনের সদস্য সিদ্ধার্থবাবু মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য উল্লেখ করে বৃহস্পতিবার সকালে রামপুরহাট থানায় এফআইআর করতে যান। তাঁর অভিযোগ, আইসি হিরন্ময় হোড় অভিযোগ জমা না নিয়ে, ফিরিয়ে দেন। পরে দুপুরে তিনি ডাকযোগে থানায় তাঁর অভিযোগ পাঠান। আইসি এ ব্যাপারে মন্তব্য করেননি। রামপুরহাটের এসডিপিও জোবি থমাস কে বলেন, “কী হয়েছে, খোঁজ নিয়ে দেখব।”

ঘটনা হল, গত ডিসেম্বরে খাগড়াগড়-কাণ্ডে অভিযুক্ত সাত জনকে কলকাতার নগর দায়রা আদালতের মুখ্য বিচারকের এজলাসে তোলা হলে এক অভিযুক্তের আইনজীবী তাঁর মক্কেলের জামিনের আবেদন জানাতে উঠে বলতে শুরু করেন, “মুখ্যমন্ত্রীই বলেছেন...।” বিচারক অবশ্য তাঁকে এর বেশি এগোতে দেননি। তিনি ওই েক সুলিকে বলেন, “এটা আদালত। রাজনৈতিক বক্তৃতার জায়গা নয়।” ওই কৌঁসুলি পরে বলেছিলেন, “স্বয়ং রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী যখন দায়িত্ব নিয়ে ‘র’ প্রসঙ্গে এমন তথ্য দিচ্ছেন, তখন বোঝাই যাচ্ছে, আমার মক্কেলকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে।” পেশায় প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক সিদ্ধার্থবাবুরও অভিযোগ, “এনআইএ-র তদন্তে প্রমাণ হয়ে গিয়েছে যে জেলা, রাজ্য ও দেশ ছাড়িয়ে বিদেশে পর্যন্ত এই বিস্ফোরণ-কাণ্ডের জাল বিস্তৃত। তদন্ত চলছে এখনও। এরই মধ্যে মমতা প্রকাশ্য কর্মিসভায় বলে ফেলেন খাগড়াগড় বিস্ফোরণে ‘র’-এর মদত আছে! এটা তো দেশদ্রোহেরই সামিল। ভেবেছিলাম, মুখ্যমন্ত্রী তাঁর বক্তব্যের জন্য ক্ষমা চেয়ে নেবেন। তা করেননি। তাই দেশের স্বার্থে এই অভিযোগ দায়ের করেছি।”

Advertisement

আগে মার্ক্সবাদী ফরওয়ার্ড ব্লকের শ্রমিক সংগঠনের নেতা হিসাবে নলহাটি পাথর শিল্পাঞ্চলের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন সিদ্ধার্থবাবু। গত বিধানসভা নির্বাচনে আবার নলহাটি বিধানসভা কেন্দ্রে তাঁকে তৃণমূলের হয়ে কাজ করতে দেখা গিয়েছিল। গত লোকসভা নির্বাচনের আগে তিনি বিজেপি-তে যান। এ হেন সিদ্ধার্থবাবুর অভিযোগকে কোনও গুরুত্ব দিতেই নারাজ রামপুরহাটের বিধায়ক তথা শিক্ষা ও স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর বক্তব্য, “যিনি অভিযোগ করেছেন, তিনি অনেক দল ঘাঁটা লোক। ওঁর অভিযোগের কোনও গুরুত্বই নেই!”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement