ভিএইচপি সম্মেলনে আমন্ত্রিত মুখ্যমন্ত্রীও

দিবারাত্র বিজেপি, আরএসএস, বিশ্ব হিন্দু পরিষদ (ভিএইচপি)-সহ আনুষঙ্গিক সব সংগঠনকে সাম্প্রদায়িক বলে তোপ দাগছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কলকাতায় তাদের সুবর্ণজয়ন্তী সম্মেলনে সেই মুখ্যমন্ত্রীকেই আমন্ত্রণ জানিয়েছে পরিষদ! শহিদ মিনার ময়দানে কাল, শনিবার পরিষদের সুবর্ণজয়ন্তী অনুষ্ঠানে থাকবেন আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবত, আন্তর্জাতিক কার্যকরী সভাপতি প্রবীণ তোগাড়িয়া ও ‘সংরক্ষক’ অশোক সিঙ্ঘল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ ডিসেম্বর ২০১৪ ০৩:৩৬
Share:

দিবারাত্র বিজেপি, আরএসএস, বিশ্ব হিন্দু পরিষদ (ভিএইচপি)-সহ আনুষঙ্গিক সব সংগঠনকে সাম্প্রদায়িক বলে তোপ দাগছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কলকাতায় তাদের সুবর্ণজয়ন্তী সম্মেলনে সেই মুখ্যমন্ত্রীকেই আমন্ত্রণ জানিয়েছে পরিষদ! শহিদ মিনার ময়দানে কাল, শনিবার পরিষদের সুবর্ণজয়ন্তী অনুষ্ঠানে থাকবেন আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবত, আন্তর্জাতিক কার্যকরী সভাপতি প্রবীণ তোগাড়িয়া ও ‘সংরক্ষক’ অশোক সিঙ্ঘল। ওই অনুষ্ঠানেই আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে মুখ্যমন্ত্রী ও রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠীকে। পরিষদের অবশ্য বক্তব্য, কোনও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বকে মঞ্চে থাকতে দেওয়া হয় না।

Advertisement

তৃণমূল সূত্রের খবর, পরিষদের ওই সম্মেলনে মুখ্যমন্ত্রীর যোগ দেওয়ার কোনও প্রশ্নই নেই। তবে রাজ্যে যখন বিজেপির উত্থান হচ্ছে এবং তাদের জন্য জমি তৈরি করছে আরএসএস-পরিষদের মতো সংগঠন, সেই সময়ে কলকাতায় এমন সম্মেলন ও সেখানে মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রীকে আমন্ত্রণকে তাৎপর্যপূর্ণ হিসাবেই ধরা হচ্ছে। যদিও তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বৃহস্পতিবার বলেছেন, “রাজ্যে সভা-সমিতি করার অধিকার সকলেরই আছে। কিন্তু ধর্মীয় মোড়কে রাজনীতি করতে গিয়ে ওই সম্মেলন থেকে যেন কোনও প্ররোচনামূলক মন্তব্য করা না হয়, তার জন্য আবেদন জানাচ্ছি। আমরাও নজর রাখব, যাতে ওই সভার পরে রাজ্যে কোনও অস্থিরতা তৈরির চেষ্টা না হয়।”

মুখ্যমন্ত্রী যে তাঁদের আক্রমণ করছেন, সেই বিষয়ে তাঁদের বক্তব্য কী? প্রশ্নের জবাবে এ দিন পরিষদের সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি জগন্নাথ শাহী বলেন, “হিন্দু সমাজ ‘সত্যমেব জয়তে’ মন্ত্রে বিশ্বাস করে। ফলে, কেউ বিরোধিতা করলে সেটা তাঁর ব্যক্তিগত ব্যাপার। আমাদের কাছে কেউ অচ্ছুৎ নন। আমরা ব্যক্তিগত ভাবে সব হিন্দুকেই আমন্ত্রণ জানাচ্ছি।” ঝাড়গ্রামে পরিষদ পরিচালিত একটি স্কুলের পড়ুয়াদের নজরুল মঞ্চে মুখ্যমন্ত্রী কী ভাবে পুরস্কৃত করেছেন, তা-ও বর্ণনা করেন পরিষদ নেতৃত্ব।

Advertisement

শহিদ মিনারের মঞ্চে তোগাড়িয়ার উপস্থিতি নিয়ে অবশ্য উদ্বেগে রয়েছে বিজেপিও। হিন্দুত্ববাদীদের নানা বিতর্কিত মন্তব্যের জন্য সংসদে বিরোধীদের আক্রমণের মুখে কেন্দ্র। পরিস্থিতি সামালাতে বিজেপির সংসদীয় বোর্ডের বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী সতর্কতা জারি করেন, বিরোধীদের অস্ত্র জোগানো ও মন্তব্য থেকে বিরত থাকুন সহকর্মীরা। তারও আগে সম্প্রতি দিল্লিতে পরিষদের আন্তর্জাতিক হিন্দু সম্মেলনে বিজেপি সভাপতি অমিত শাহকে যেতেও নিষেধ করেছিলেন মোদী। তাঁর যুক্তি ছিল, সামনে ঝাড়খণ্ডের বিধানসভা ভোটে তা হলে বিরূপ প্রতিক্রিয়া হতে পারে। তার পরে যে পশ্চিমবঙ্গে জমি তৈরির স্বপ্ন তাঁরা দেখছেন, সেখানে বহু মানুষ ধর্মীয় ভাবাবেগ ও রাজনীতি জড়িয়ে ফেলা পছন্দ করেন না। এ রাজ্যে প্রায় ৩০% সংখ্যালঘু ভোটও রয়েছে। দেড় বছরের মধ্যে বাংলার বিধানসভা ভোটের দিকে তাকিয়ে এখন থেকেই ঝুঁকি নিতে চাননি মোদী। কিন্তু এত সবের পরে তোগাড়িয়ার বেলাগাম মুখ সেই সতর্কতার লক্ষ্মণরেখা পাছে অতিক্রম করে ফেলে, দলের অন্দরে উদ্বিগ্ন বিজেপি নেতৃত্বও।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement