অন্ডালের বিমানবন্দর এখনও লাইসেন্স পায়নি। কোচবিহার বিমানবন্দরে রানওয়ে বাড়ানোর কাজ চলছে। দু’টির একটি থেকেও বিমান ওঠানামা করে না। পবনহংস সংস্থা থেকে হেলিকপ্টার ভাড়া করে রাজ্য যে যাত্রী-পরিষেবা চালু করেছিল, তাতে অধিকাংশ দিনই যাত্রী মেলে না। তবে বাগডোগরা থেকে উড়ান বেড়েছে। নয়া বিমানসংস্থা আবু ধাবির ‘এতিহাদ’ কলকাতা থেকে তাদের যাত্রী উড়ান চালু করেছে।
এই হল গত এক বছরে রাজ্যের বিমান পরিবহণের বাস্তব চিত্র। যদিও শুক্রবার বিধানসভায় বাজেট পেশ করে রাজ্যের অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র যা যা দাবি করলেন, তার সঙ্গে এই চিত্রের কিছুটা ফারাক থেকে যাচ্ছে।
রাজ্যের পর্যটন ও শিল্পোন্নয়নকে মাথায় রেখে আকাশপথে পরিবহণকে যে তাঁরা অগ্রাধিকার দিতে চান, সরকারের নেতা-নেত্রীরা বহু বার তা বলেছেন। অর্থমন্ত্রী জানান, দুর্গাপুরের অন্ডালে নতুন বিমানবন্দর তৈরির কাজ শেষের পথে। কিন্তু সমস্যা হল, ওই বিমানবন্দর এখনও ছাড়পত্র পায়নি। ভবিষ্যতে ছাড়পত্র পেলেও অন্ডাল থেকে কোন সংস্থা উড়ান চালাতে আগ্রহী হবে, তা-ও পরিষ্কার নয়। ইন্ডিগো, স্পাইসজেট বা এয়ার ইন্ডিয়ার মতো সংস্থা এখন অন্ডাল নিয়ে ভাবতে রাজি নয়। অমিতবাবুর দাবি, বাণিজ্যিক বিমান সংস্থাগুলির কথা ভেবে অন্ডাল ও কোচবিহারে বিমান জ্বালানির উপরে বিক্রয় করে ছাড় দেওয়া হয়েছে। কিন্তু বিমান সংস্থার এক অফিসারের কথায়, “ওখানে বিমান পরিষেবাই নেই, তো ছাড় দিয়ে কী হবে?”
রাজ্যের কৃতিত্ব হিসেবে তিনটি আন্তর্জাতিক উড়ান কলকাতা থেকে চালু হয়েছে বলে এ দিন দাবি করেছেন অর্থমন্ত্রী। ঘটনা হল, এতিহাদ ছাড়া আর যে দু’টি সংস্থার নাম করেছেন তিনি, সেই সিল্ক এয়ার এবং ড্রাগন এয়ার কলকাতা থেকে উড়ান চালু করেছিল যথাক্রমে ২০১১ ও ২০১২ সালে। রাজ্যের দাবি, বিভিন্ন শিল্পনগরী ও পর্যটন শহরের সঙ্গে কলকাতার হেলিকপ্টার যোগাযোগ শুরু হয়েছে। কিন্তু সেই হেলিকপ্টারে আসন ফাঁকাই থাকে। ভবিষ্যতে ছোট বিমান এনে কলকাতা-দুর্গাপুর-বাগডোগরা-কোচবিহারকে যুক্ত করার কাজ হাতে নেওয়া হয়েছে বলেও রাজ্যের দাবি। অথচ এই প্রস্তাবে কোনও সংস্থা সম্মত হয়েছে বলে খবর নেই। বরং বিমান পরিবহণ বিশেষজ্ঞদের মতে, কলকাতা থেকে কোচবিহার পর্যন্ত ছোট বিমান চালাতে সংশ্লিষ্ট সংস্থার যা খরচ হবে, তাতে ভাড়া সাধারণের আয়ত্তের বাইরে চলে যাবে।