রাজ্যপালের ভাষণের উপরে বিতর্ক চলছে বিধানসভায়। অথচ অধিবেশন কক্ষে বসে বিতর্ক শোনায় মন নেই মন্ত্রীদেরই! সরকার পক্ষ বিধানসভাকে যথেষ্ট গুরুত্ব দিচ্ছে না, এই অভিযোগ তুলে সোমবার সরব হল কংগ্রেস। দ্বিতীয়ার্ধের আলোচনার সময় মন্ত্রীদের অনুপস্থিতির প্রতিবাদে কক্ষত্যাগও করল তারা।
একের পর এক ঘটনায় রাজ্য উত্তাল হলেও রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠী তাঁর ভাষণে রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি শান্তিপূর্ণ বলে মন্তব্য করেছিলেন। সেই মন্তব্যের সমালোচনা করে সাম্প্রতিক শ্যামপুরের ধর্ষণ, কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনার উল্লেখ করে রাজ্য সরকারকে এ দিন আক্রমণ করেন সিতাইয়ের কংগ্রেস বিধায়ক কেশবচন্দ্র রায়। মন্ত্রীদের আসনে তখন শুধু পূর্তমন্ত্রী শঙ্কর চক্রবর্তী এবং কৃষি প্রতিমন্ত্রী বেচারাম মান্না। অন্য কোনও মন্ত্রী, এমনকী, মুখ্য সরকারি সচেতক শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ও তখন কক্ষে অনুুপস্থিত। ট্রেজারি বেঞ্চেও অল্প কিছু বিধায়ক। রাজ্যপালের বক্তৃতার উপরে আলোচনায় কেন এত অল্প মন্ত্রী উপস্থিত, এই প্রশ্ন তুলে কেশববাবুর বক্তৃতার শেষেই হইচই শুরু করেন কংগ্রেস বিধায়কেরা। তাঁদের সমর্থন করেন বাম বিধায়কেরাও।
মুখ্যমন্ত্রীও এ দিন সভায় ছিলেন না। সেই সঙ্গে বাকি মন্ত্রীদেরও গরহাজিরা নিয়ে প্রশ্ন তুলে কক্ষের ভিতরে ও বাইরে দীর্ঘক্ষণ বিক্ষোভ দেখায় কংগ্রেস। ওয়াক আউট করে বাইরে বেরিয়ে কংগ্রেস বিধায়ক মনোজ চক্রবর্তী বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী কখনও সিঙ্গাপুর, কখনও বাংলাদেশে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। আর বিধানসভায় গুরুত্বপূর্ণ বিতর্কে মাত্র দেড় জন মন্ত্রী উপস্থিত! এটা বিধানসভার পক্ষে অমর্যাদাকর।” কংগ্রেস বিধায়কদের হইচইয়ের জেরে ভিতরে তখন তড়িঘড়ি আসনে ফেরেন কৃষিমন্ত্রী পূর্ণেন্দু বসু এবং পরিষদীয় সচিব তাপস রায়। স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কথা বলার পরে তাপসবাবু অন্য মন্ত্রীদের সভায় ডেকে আনতে তৎপর হন। একে একে সভায় ফেরেন ফিরহাদ হাকিম, অরূপ বিশ্বাস, চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য প্রমুখ।
এর আগে প্রথমার্ধেও শ্যামপুরের ধর্ষণ-কাণ্ড নিয়ে ওয়াক আউট করে কংগ্রেস। প্রশ্নোত্তর-পর্বের পরে শ্যামপুরের ঘটনায় বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রীর বিবৃতি দাবি করে তারা। কংগ্রেসের সচেতক অসিত মিত্রকে প্রস্তাবটি পাঠ করতে দেওয়া হলেও তা নিয়ে কোনও আশ্বাস না পেয়ে কক্ষত্যাগ করেন দলীয় বিধায়কেরা।