বৃষ্টি বিদায় নিয়েছে। আর্দ্রতা নয়! আর তার জেরেই শহরে বাড়ছে অস্বস্তি।
বঙ্গোপসাগরে তৈরি হওয়া নিম্নচাপের ফলে কলকাতা-সহ গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গে হাজির হয়েছিল জোলো হাওয়া ও বৃষ্টি। কিন্তু নিম্নচাপটি দক্ষিণবঙ্গ ছেড়ে উত্তরবঙ্গে পাড়ি জমাতেই বন্ধ হয়েছে বৃষ্টি, বেড়েছে তাপমাত্রাও। আবহবিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, আর্দ্রতা এবং তাপমাত্রার এই সংমিশ্রণে কলকাতা ও সংলগ্ন জেলাগুলিতে বেড়েছে অস্বস্তি।
বস্তুত, বৃহস্পতিবার শহরের তাপমাত্রা সে ভাবে বাড়েনি। হাওয়া অফিস সূত্রে খবর, এ দিন কলকাতায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৫.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা স্বাভাবিকের চেয়ে ১ ডিগ্রি বেশি। ফলে রোদের গরম যে খুব অস্বাভাবিক, তেমনটা নয়। বরং এ দিন মানুষ বেশি নাকাল হয়েছেন ঘামের জন্য। আবহবিদেরা বলছেন, বাতাসে বাড়তি জলীয় বাষ্পের জন্যই এই অস্বস্তি। এ দিন কলকাতায় ন্যূনতম আর্দ্রতা ছিল ৬০ শতাংশ। হাওয়া অফিসের পূর্বাভাস, আপাতত কয়েক দিন বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ এমনই থাকবে। তবে এখনই বৃষ্টির কোনও সম্ভাবনা নেই।
আবহবিজ্ঞানীরা দিনের তাপমাত্রা এবং আর্দ্রতার গড় করে অস্বস্তিসূচকের মাত্রা হিসেব কষেন। আলিপুর আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা গোকুলচন্দ্র দেবনাথ বলেন, “এ দিন কলকাতায় অস্বস্তিসূচক ছিল ৬৪। যা স্বাভাবিকের থেকে ৯ ডিগ্রি বেশি।” কিন্তু এই অস্বস্তি কী আরও বাড়বে? আবহবিজ্ঞানীদের ব্যাখ্যা, অস্বস্তিসূচক নির্ভর করে বাতাসে আর্দ্রতা ও তাপমাত্রার উপরে। দু’টিই যদি বাড়তে থাকে, তবে অস্বস্তিসূচকও তরতরিয়ে বাড়ে। কিন্তু কলকাতায় আগামী দিন দু’য়েকের মধ্যে তাপমাত্রা তেমন বাড়বে না বলেই মনে করছেন আলিপুর হাওয়া অফিসের বিজ্ঞানীরা। ফলে অস্বস্তিসূচকও খুব বেশি বাড়বে না বলে জানান তাঁরা। গোকুলবাবু বলেন, “দিন দু’য়েকের মধ্যে অস্বস্তিসূচক আরও ১ ডিগ্রি বাড়তে পারে।”
আবহবিজ্ঞানীদের একাংশ অবশ্য বলছেন, নিম্নচাপ দক্ষিণবঙ্গ থেকে সরে গেলেও আকাশ এখনও পুরোপুরি মেঘমুক্ত হয়নি। তাই দিনের তাপমাত্রা খুব একটা বাড়তে পারছে না। কিন্তু দিন দু’য়েক পরে তাপমাত্রা বাড়লে অস্বস্তিসূচকও বাড়তে পারে বলে মত তাঁদের। “অস্বস্তিসূচক ৬৭ ডিগ্রি পেরোলেই চরম অস্বস্তি মাথাচাড়া দেবে।” এমনই মন্তব্য হাওয়া অফিসের এক বিজ্ঞানীর।
চলতি মরসুমে তিন বার তাপপ্রবাহে নাকাল হয়েছে কলকাতা। এ বার কি তা হলে অস্বস্তির পালা? এই প্রশ্নটাই এখন ঘুরপাক খাচ্ছে হাওয়া অফিসের অন্দরে।