দুর্ব্যবহারের অভিযোগে বিদ্ধ সাংসদ কল্যাণ

দুর্ব্যবহারের অভিযোগ তাঁর বিরুদ্ধে আগেও উঠেছে। লোকসভা নির্বাচনের প্রচারে গিয়ে তিনি নিজেই সে প্রসঙ্গ তুলে মাফ চেয়েছেন ভোটদাতাদের কাছে। কিন্তু ভোটে জিতে ফের সাংসদ হওয়ার পরেও মানুষের সঙ্গে দুর্ব্যবহারের নালিশ তৃণমূল নেতা কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের পিছু ছাড়ছে না। তালিকায় নতুন সংযোজন, রবীন্দ্র সরোবরে প্রাতর্ভ্রমণকারীদের একাংশকে গালিগালাজ। যদিও কল্যাণবাবুর দাবি, তিনি অপ্রীতিকর কিছু মন্তব্যের প্রতিবাদ করেন মাত্র।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ মে ২০১৪ ০২:৫৬
Share:

দুর্ব্যবহারের অভিযোগ তাঁর বিরুদ্ধে আগেও উঠেছে। লোকসভা নির্বাচনের প্রচারে গিয়ে তিনি নিজেই সে প্রসঙ্গ তুলে মাফ চেয়েছেন ভোটদাতাদের কাছে। কিন্তু ভোটে জিতে ফের সাংসদ হওয়ার পরেও মানুষের সঙ্গে দুর্ব্যবহারের নালিশ তৃণমূল নেতা কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের পিছু ছাড়ছে না। তালিকায় নতুন সংযোজন, রবীন্দ্র সরোবরে প্রাতর্ভ্রমণকারীদের একাংশকে গালিগালাজ। যদিও কল্যাণবাবুর দাবি, তিনি অপ্রীতিকর কিছু মন্তব্যের প্রতিবাদ করেন মাত্র।

Advertisement

ঘটনাটি বুধবারের। লেক থানার পুলিশ ও প্রাতর্ভ্রমণকারীদের একাংশ জানিয়েছেন, কল্যাণবাবু এ দিন সকালে রবীন্দ্র সরোবরে হাঁটতে যান। সঙ্গে ছিলেন দেহরক্ষীরা। এক জায়গায় জনা পাঁচেক প্রবীণ নিজেদের মধ্যে গল্পগুজব করছিলেন। কেন্দ্রে নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বাধীন নতুন সরকার কী কী কাজ করবে, গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে মোদী কী কী ভাল কাজ করেছেন, কী করতে পারেননি, সংখ্যালঘুদের জন্য তাঁর সরকার কী ধরনের উন্নয়ন করবে এ সবই ছিল তাঁদের আলোচনার বিষয়বস্তু।

এবং অভিযোগ, কল্যাণবাবু আচমকা ওঁদের দিকে তেড়ে গিয়ে চিৎকার করে আপত্তিকর কথা বলতে থাকেন। দেখে-শুনে প্রবীণেরা হতভম্ব হয়ে যান। প্রত্যক্ষদর্শী-সূত্রের খবর, বয়স্ক ওই ব্যক্তিরা করজোড়ে সাংসদকে বলেন, তাঁরা নিছক নিজেদের মধ্যে গল্পগুজব করছেন, বিশেষ কোনও রাজনৈতিক দল বা সম্প্রদায়কে হেয় করার বা স্তুতি করার কোনও উদ্দেশ্য তাঁদের নেই। তাতে শান্ত হওয়ার বদলে কল্যাণবাবু আরও উত্তেজিত হয়ে পড়েন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আলাপচারীদের ‘শায়েস্তা’ করতে পুলিশ ডাকার হুমকি দিয়ে কল্যাণবাবু বলেন, তাঁদের তিনি গ্রেফতার করিয়ে ছাড়বেন। পশ্চিমবঙ্গ থেকে তাঁদের তাড়ানোর জন্য তিনি উঠেপড়ে লাগবেন তৃণমূল সাংসদ এমন শাসানিও শোনান বলে অভিযোগ।

Advertisement

এতে আগুনে ঘি পড়ে। “বিশেষত পুলিশ ডেকে গ্রেফতার করানো ও রাজ্যছাড়া করার হুমকি শুনে বয়স্কেরা বেদম চটে যান। সাংসদকে ওঁঁরা পাল্টা জানিয়ে দেন, পুলিশ কেন, দরকারে তিনি ফৌজ তলব করতে পারেন!” বলেন প্রত্যক্ষদর্শী এক যুবক। ইতিমধ্যে আরও অনেক বয়স্ক নারী-পুরুষ জড়ো হয়ে গিয়েছেন। অভিযোগ, তাঁদের সঙ্গেও বিবাদে জড়িয়ে পড়েন কল্যাণ। দেখা যায়, উত্তেজিত এক দল বয়স্ক পুরুষ সাংসদকে ঠেলতে ঠেলতে প্রায় পঁচিশ হাত দূরে নিয়ে চলে গিয়েছেন!

সাংসদের দেহরক্ষীরা লেক থানায় খবর দেন। পুলিশ গিয়ে কল্যাণবাবুকে ‘উদ্ধার’ করে বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করে। তবে পুলিশ প্রহরায় বাড়ির ফেরার সময়েও সাংসদ উত্তেজিত স্বরে অশ্লীল গালিগালাজ করছিলেন বলে অভিযোগ তুলেছেন প্রাতর্ভ্রমণকারীদের কেউ কেউ। ঘটনা প্রসঙ্গে তিনি নিজে কী বলছেন?

কল্যাণবাবু যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “কারও সঙ্গে দুর্ব্যবহার করিনি। ওঁরা একটি বিশেষ সম্প্রদায় সম্পর্কে আপত্তিকর কথাবার্তা বলছিলেন। আমি প্রতিবাদ করে বলি, এই সব মন্তব্যে রাজ্যের সম্প্রীতি নষ্ট হবে।” তৃণমূল সাংসদের কথায়, “এর বেশি কিচ্ছুটি ঘটেনি।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement